তবু বাড়লো বাজার মূলধন, কমলো সূচক-লেনদেন
এক সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর গত সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে আবার দরপতন হয়েছে। সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার দ্বিগুণের বেশি প্রতিষ্ঠানের দাম কমেছে। এরপরও বেড়েছে বাজার মূলধন। তবে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক ও দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০১টির স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২৫০টির। আর ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অর্থাৎ দাম বাড়ার তালিকার তুলনায় দাম কমার তালিকায় আড়াইগুণ বেশি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে বড় মূলধনের প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ায় বাজার মূলধন বেড়েছে।
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৬০ হাজার ১৬০ কোটি টাকা। যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৫৯ হাজার ২০৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে বাজার মূলধন বেড়েছে ৬৫৫ কোটি টাকা বা দশমিক ১৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে ৬ হাজার ৭০৯ কোটি টাকা বা ১ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। অবশ্য তার আগের দুই সপ্তাহে বাজার মূলধন কমে ১১ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা।
বাজার মূলধন বাড়ালেও গত সপ্তাহে কমেছে সবকটি মূল্য সূচক। ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে কমেছে ৩৭ দশমিক ১২ পয়েন্ট বা দশমিক ৭১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১৬ দশমিক ১৪ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ২৭ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৯১ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি গত সপ্তাহে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহে সূচকটি কমেছে ১১ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা দশমিক ৫৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ৫৬ দশমিক ৪০ পয়েন্ট বা ৩ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ৩০ দশমিক শূন্য ২ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও গত সপ্তাহে কমেছে। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহের সূচকটি বাড়ে ২৭ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৪০ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে কমে ২৩ দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা ২ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
সবকটি মূল্য সূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের গতিও কমেছে। গত সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৯৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৩৭৩ কোটি ৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৭৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা ২১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার।কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ৬২ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৭ দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবি’র শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ২৫ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১০ কোটি ২০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বিকন ফার্মা, জিপিএইচ ইস্পাত, ফাইন ফুডস, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, খান ব্রদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স এবং আইসিবি।
এমএএস/এসআইটি