৩০০ কোটি টাকার নিচে নামলো লেনদেন
টানা দরপতনের সঙ্গে বড় ধরনের লেনদেন খরা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর এত কম লেনদেন আর হয়নি।
লেনদেন খরা দেখা দেওয়ার পাশাপাশি দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে কমেছে প্রধান মূল্যসূচক। তবে বেড়েছে অন্য দুই সূচক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচক বেড়েছে । সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ায় একপর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়।
তবে প্রথম ৪০ মিনিটের লেনদেন শেষ হতেই বাজারের চিত্র বদলে যায়। দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত থাকে। ফলে একদিকে দাম কমার তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে প্রধান মূল্যসূচক কমেই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
আরও পড়ুন
- আরও তলানিতে লেনদেন, শেয়ারবাজারে দরপতন চলছেই
- দেশে কমোডিটি এক্সচেঞ্জের অনেক সম্ভাবনা: ফারজানা লালারুখ
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৫০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫৯টির এবং ৮৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফলে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৬৯ পয়েন্টে নেম গেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৯১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯২৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
প্রধান মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৭৫ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩০৩ কোটি ২৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ২৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা।
গত ৮ আগস্ট অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পর এত কম লেনদেন আর হয়নি। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। হাসিনা সরকারের পতনের আগের দিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন হয় ২০৭ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। এরপর আজ সব থেকে কম লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৮ কোটি ৬৭ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা রবি’র ৮ কোটি ৮৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন, লাভেলো আইসক্রিম, জিপিএইচ ইস্পাত, খান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, সানলাইফ ইন্স্যুরেন্স, আইসিবি এবং ইসলামী ব্যাংক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৬টির এবং ৩৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৩৯ কোটি ২০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ