শেয়ারবাজারে বড় পতন ঠেকালো বস্ত্র-বিমা
পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না দেশের শেয়ারবাজার। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবারও (১০ ডিসেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। তবে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ বস্ত্র ও বিমা কোম্পানি। ফলে দাম বাড়ার তালিকা বড় হয়েছে। ফলে বড় পতনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগের সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস শেয়ারবাজারে বড় ধরনের লেনদেন খরা দেখা দেয়। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার ডিএসইতে লেনদেন কমে ৩০০ কোটি টাকার নিচে নেমে আসে। পরের কার্যদিবস সোমবার তা আরও কমে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার চার মাস পর প্রথমবার টানা দুই কার্যদিবস ৩০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়।
আওয়ামী লীগ তথা হাসিনা সরকার পতনের আগের দিন অর্থাৎ ৪ আগস্ট শেয়ারবাজারে ৩০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়েছিল। এরপর চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস ৩০০ কোটি টাকার কম লেনদেন হয়। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার লেনদেনের গতি কিছুটা বেড়ে ৩০০ কোটি টাকার ঘরে উঠে এসেছে। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি প্রতিষ্ঠান।
শেয়ারবাজারের এই দাম বাড়ার তালিকা বড় করতে ও লেনদেন খরা কাটাতে বড় ভূমিকা রেখেছে বিমা ও বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো। সব খাত মিলে এদিন ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৭টির এবং ৭৩টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অন্যদিকে বিমা খাতের ৪৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯টির। আর বস্ত্র খাতের ৩৫টির শেয়ার দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ১৪টির। এই দুটি খাতের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ালেও মূল্যসূচকে বড় ভূমিকা রাখা ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ অন্য খাতের বেশিরভাগের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে কমেছে মূল্যসূচক।
আরও পড়ুন
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় দশমিক ১৪ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ১৬৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪৩ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯০৩ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় দশমিক ৪২ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৫৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৩৮৩ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২৭৮ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১০৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে বস্ত্র খাতের প্রতিষ্ঠান সায়হাম কটনের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ১৩ কোটি ২১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার ১০ কোটি ৩৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১০ কোটি ২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ, ড্রাগোন সোয়েটার, নিউ লাইফ ক্লোথিং, এনআরবি ব্যাংক, আইসিবি এবং ব্র্যাক ব্যাংক।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৩১ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২০৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৭৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৯৭টির এবং ৩৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসলে নদেন হয় ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা।
এমএএস/এমআইএইচএস