বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া দেশের জন্য বিপৎসংকেত
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়া দেশের ভবিষ্যতের জন্য একটা বিপৎসংকেত বলে মন্তব্য করেছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আবদুল আউয়াল মিন্টু।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সদস্যদের সঙ্গে এক আলোচনায় প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সভায় দেশের বর্তমান ব্যবসা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও করণীয় বিষয়ে নিজের মতামত তুলে ধরেন এই ব্যবসায়ী নেতা। অনুষ্ঠানে ইআরএফের সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমসহ সংগঠনটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, দেশে একসময় বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১৩ দশমিক ১৪ শতাংশ, যা কমে ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে নেমেছে। এটা একটা বিপজ্জনক ইস্যু। এর মানে দেশে প্রকৃতপক্ষে কোনো বিনিয়োগ হচ্ছে না। অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত, বেসরকারি খাতের ঋণের প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ৩০ শতাংশে নেমে এসেছে, যা ৪০ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন।
- আরও পড়ুন
- পোশাকশ্রমিকদের বার্ষিক ৯ শতাংশ বেতন বাড়ানোর সুপারিশ
- আমলারা রাজনীতি ও ব্যবসায় জড়িয়ে যাচ্ছেন: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
‘দেশে বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে কীভাবে। আর কর্মসংস্থান ছাড়া উন্নয়ন হবে না। পরিসংখ্যান বিশ্বাস করলে প্রতি বছর দেশে প্রায় ২২ লাখ কর্মক্ষম লোক পড়াশোনা শেষে বাজারে আসে। বিনিয়োগ না হলে এ মেধা কাজে লাগাতে পারবো না।’ বলেন এ ব্যবসায়ী নেতা।
ব্যাংকখাত নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে ব্যবসায়ীরা ঋণ পরিশোধ করতে পারছেন না। বাংলাদেশে এখন খেলাপি ঋণ দুই লাখ ৮৪ হাজার কোটি টাকা। এটা আরও বাড়ার আশঙ্কা আছে। কারণ, উৎপাদনশীল খাতের সমস্যাগুলোর কোনো সমাধান হয়নি। এখনো সব জায়গায় আইনশৃঙ্খলা ঠিকমতো কাজ করছে না। ব্যাংকের সমস্যা আছে, সে কারণে অনেকে ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। তাছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক নিত্যনতুন সার্কুলার জারি করছে, তাতে খেলাপি ঋণ কমার কোনো সুযোগ আমি দেখছি না।
বর্তমান অবস্থা থেকে উত্তরণে তিনি দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। অর্থনৈতিক সংকট কাটাতে গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেন এ নেতা।
মিন্টু বলেন, শুধু টাকা থাকলেই বিনিয়োগ হবে না। বিনিয়োগের জন্য আইনশৃঙ্খলা ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ দরকার।
এক প্রশ্নের জবাবে মিন্টু বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে বিভিন্ন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ বা স্থগিত করা হচ্ছে, তা আইনসিদ্ধভাবে হচ্ছে না। এটা আইনি প্রক্রিয়ার বাইরে হচ্ছে। আমি নিজেও এটা পছন্দ করি না।
আইএইচও/এএসএ/এএসএম