দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের দরপতনেও বাড়লো সূচক
লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, তার প্রায় দ্বিগুণের দাম কমেছে। এরপরও বেড়েছে মূল্যসূচক।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম কমার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এ বাজারটিতে সবকটি মূল্যসূচক কমেছে। এর মাধ্যমে টানা আট কার্যদিবসেই উভয় শেয়ারবাজারে দাম কমার তালিকায় নামে লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের প্রতি কার্যদিবসেই লেনদেন অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমে। এতে গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন কমেছে ১১ হাজার ৯৫৯ কোটি টাকা। আর প্রধান মূল্যসূচক কমে ১৫৭ পয়েন্ট। আর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক কমে ৫১ পয়েন্ট এবং দ্বিতীয় কার্যদিবসে কমে ১০ পয়েন্ট।
এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেন শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার দেখা মিলে। লেনদেনের সাত মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের প্রথম ঘণ্টাজুড়েই বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত থাকে।
তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার পর দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসতে থাকে। লেনদেনের শেষদিকে এ প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। ফলে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে দিনের লেনদেন শেষ হয়। অবশ্য বড় মূলধনের কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার প্রধান মূল্যসূচক ঊর্ধ্বমুখীই থাকে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ১১৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ২০০টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৭৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৭ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ১৪৩ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৪৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। তবে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৮৯৪ পয়েন্টে নেমে গেছে।
প্রধান মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩৫৯ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা। সে হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ৩৯ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে এনআরবি ব্যাংকের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ২০ কোটি ২০ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মিডল্যান্ড ব্যাংকের ১৭ কোটি ১১ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে অগ্নি সিস্টেম।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, লাভেলো আইসক্রিম, ইস্টার্ন ব্যাংক, সোনালী আঁশ, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, ফাইন ফুডস এবং বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৬৩ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৮টির এবং ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবস লেনদেন হয় ৬ কোটি ৯ লাখ টাকা।
এমএএস/এমএএইচ/এএসএম