শেয়ার কারসাজি, দম্পতিকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা
পুঁজিবাজারের নারী বিনিয়োগকারী রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কারসাজির (সিরিজ ট্রেডিং) মাধ্যমে শেয়ারের দাম বাড়িয়ে বিপুল পরিমাণ মুনাফা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তার এ কাজে সহযোগীদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন স্বামী অবসপ্রাপ্ত সামরিক চিকিৎসক মো. আমজাদ হোসেন ফকির। তিনিও একজন শেয়ার ব্যবসায়ী।
সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে কারসাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজি করার অপরাধ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী-স্ত্রী এবং তাদের সহযোগীদের ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
তথ্যমতে, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির ঘটনাটি ২০২১ সালের ৫ এপ্রিল থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত সংঘটিত হয়েছে। বিষয়টি বিএসইসির নজরে এলে ১৫ জুন ঢাকা স্টক স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়। গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন সংক্রান্ত তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে ডিএসই এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন কমিশনে দাখিল করে।
তদন্ত প্রতিবেদনে, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীরা ওই সময়ে কারসাজির মাধ্যমে গ্লোবার ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার লেনদেন করে মোট এক কোটি ১৩ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯ টাকা মুনাফা তুলে নিয়েছেন বলে উল্লেখ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের শুনানিতে তলব করে বিএসইসি। শুনানি কার্যক্রমে অভিযুক্তদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য মনে না হওয়ায় কারসাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয় বিএসইসি।
বিগত সরকারের আমলে শেয়ার কারসাজির অভিযোগে আমজাদ হোসেন ফকির, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীদের নাম উঠে এলেও কারও বিরুদ্ধে তেমন কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তবে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন আমজাদ হোসেন ফকির, রোকসানা আমজাদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
শুনানিতে রোকসানা আমজাদ ও আমজাদ হোসেন ফকিরের ব্যাখ্যা
এদিকে বিএসইসির শুনানিতে রোকসানা আমজাদ ও আমজাদ হোসেন ফকির দুজনেরই পুঁজিবাজারে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে বিনিয়োগ রয়েছে বলে জানান। খণ্ডকালীন বিনিয়োগকারী হিসেবে তারা কমিশনের সমস্ত আইন, বিধি, প্রবিধান এবং নির্দেশনা মেনে বিনিয়োগ করেছেন। রোকসানা আমজাদের অ্যাকাউন্টটি স্বামী আমজাদ হোসেন ফকির পরিচালনা করেছেন। তার একটি একক এবং দুটি যৌথ বিও অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আর আমজাদ হোসেন ফকিরের চারটি বিও অ্যাকাউন্ট (একক এবং যৌথ) রয়েছে। তারা দুজনেই দুর্ভাগ্যবশত, কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেনে মোট রিয়েলাইজড গেইন (মুনাফা) কত হচ্ছিল তা বুঝতে পারিনি। এ জন্য ভবিষ্যতে, আরও সতর্ক থাকবেন এবং এ ধরনের ভুল আর পুনরাবৃত্তি হবে না বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, অভিযুক্তদের বিষয়ে তদন্ত করে গ্লোবাল ইন্সুরেন্সের শেয়ার কারসাজির প্রমাণ পাওয়া গেছে। যে কারণে এনফোর্সমেন্ট বিভাগ তাদের আইন অনুযায়ী জরিমানা করেছে।
এমএএস/বিএ/জেআইএম