জাহাজ ও পাট শিল্পে বিনিয়োগ করতে চান ইবিএফসিআই ব্যবসায়ীরা
বাংলাদেশের জাহাজ ও পাট শিল্পে বিনিয়োগ করতে চান ইউরোপ-বাংলাদেশ ফেডারেশন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইবিএফসিআই) ব্যবসায়ীরা। বুধবার (২ অক্টোবর) সচিবালয়ে নৌপরিবহন এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে ইবিএফসিআই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করে এ আগ্রহের কথা জানান। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ছাত্র-জনতার বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। যে বাংলাদেশ স্বপ্ন ও অপার সম্ভাবনার। যে বাংলাদেশ হবে দুর্নীতি ও হয়রানি মুক্ত। যে বাংলাদেশে দেশি-বিদেশি প্রতিটি বিনিয়োগই হবে নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত। আমি ইবিএফসিআইসহ দেশি-বিদেশি সব ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারীদের সম্ভাবনাময় এই নতুন বাংলাদেশের পাট, বস্ত্র ও জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগের আহ্বান জানাচ্ছি।
ব্যবসায়ী নেতারা জানান, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবকাঠামোসহ অন্যান্য খাতের মতো বাংলাদেশে পাট, বস্ত্র ও জাহাজ শিল্পে তারা বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।
তারা বলেন, পলিথিন ও প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবে পাট ও পাটজাত পণ্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। এজন্য প্রয়োজন পাট শিল্পে দেশি-বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতা ও পাটের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ। অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করা গেলে তারা পাট শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পাট ও পাটজাত পণ্য এবং বস্ত্রের উপরে বাংলাদেশে একটি রিসার্চ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে বলেও তারা অভিমত জানান। এ রিসার্চ সেন্টারে পাট ও পাটজাত পণ্যকে কিভাবে বিশ্বমানে উন্নীত করা যায়, বিশ্ববাজারে কীভাবে এটির চাহিদা বৃদ্ধি করা যায় সেটি নিয়ে গবেষণা করা হবে।
এ বিষয়ে বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকার রিসার্চ সেন্টার অন জুট অ্যান্ড টেক্সটাইল স্থাপন বিষয়ে এরই মধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। রিসার্চ সেন্টার স্থাপন বিষয়েও প্রবাসীরা সরকারকে কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা করতে পারে।
উপদেষ্টা জানান, বর্তমান সরকার অত্যন্ত বিনিয়োগবান্ধব। সরকার যেকোনো সেক্টরে বৈদেশিক বিনিয়োগকে স্বাগত জানায়। বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টিতে সরকার কাজ করছে। রাষ্ট্র সংস্কারের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে সেখানে সহজ বিনিয়োগ পরিবেশ সৃষ্টির জন্য কাঠামোগত ও আইনগত সংস্কার করা হবে।
এসময় ব্যবসায় প্রতিনিধিদল বিভিন্ন বন্দরে মালামাল খালাসে জটিলতার বিষয়ে উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জবাবে তিনি বলেন, কোথাও কোনো নিয়মের সুযোগ নেই। বন্দর কাস্টমসসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। এরপরও ব্যবসায়ীদের সাথে কোনো দুর্নীতি অনিয়ম হলে আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগের বিষয়ে আশ্বস্ত করে উপদেষ্টা বলেন, পাট, বস্ত্র ও জাহাজ শিল্পে বিনিয়োগ করা হলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তা দেওয়া হবে। মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন দপ্তর সংস্থায় কোনোরূপ কোনো অনিয়ম ঘুস দুর্নীতি ও হয়রানির সুযোগ থাকবে না। দুর্নীতি ও অনিয়মের কোনো অভিযোগ আসলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ইউরোপ-বাংলাদেশ ফেডারেশন অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ইবিএফসিআই) ২৬ সদস্যের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলে নেতৃত্ব দেন সংগঠনটির সভাপতি ওয়ালি তছার উদ্দিন।
বৈঠকে বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ, নৌপরিবহন সচিব এ কে এম মতিউর রহমানসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরএমএম/এমআইএইচএস/জিকেএস