ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

জড়িত ৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান

বেক্সিমকোর শেয়ারে কারসাজি, ৪২৮ কোটি টাকা জরিমানা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৪২ পিএম, ০১ অক্টোবর ২০২৪

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে ৯ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এ জরিমানা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এর আগে কখনো এক কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজির দায়ে এতো বেশি টাকা জরিমানা করা হয়নি।

জরিমানা করা ব্যক্তিদের মধ্যে মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি, ট্রেড নেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে ৪ কোটি ১ লাখ, মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, জুপিটার বিজনেসকে ২২ কোটি ৫০ লাখ, এপোলে ট্রেডিংকে ১৫ কোটি ১ লাখ, এ আর টি ইন্টারন্যাশনালকে ৭০ কোটি, আব্দুর রউফকে ৩১ কোটি ও ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।

আরও পড়ুন

জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৯ মার্চ বেক্সিমকোর শেয়ার দর ছিল ১১ টাকা ২০ পয়সা। আর ২০২০ সালের শেষের দিকে কোম্পানিটির শেয়ার ২২ টাকায় লেনদেন হয়। সেখান থেকে দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে প্রতিটি শেয়ারের দাম ১০০ টাকার ওপরে নিয়ে যাওয়া হয়।

অবশ্য কোম্পানিটির শেয়ার দাম ১০০ টাকাতে নিয়েই থামেনি কারসাজি চক্র। দফায় দফায় দাম বাড়িয়ে ২০২১ সালেই কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ১৯০ টাকা পর্যন্ত তোলা হয়। এভাবে দাম বাড়িয়ে একটি চক্র শেয়ারবাজার থেকে মোটা অঙ্কের মুনাফা তুলে নিলেও সার্বিক শেয়ারবাজার মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

বেক্সিমকোর শেয়ার কারসাজি নিয়ে ২০২২ সালের শেষের দিকে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) থেকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে পাঠানো হয়। তবে বিএসইসির তৎকালীন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বাধীন কমিশন তা ধামাচাপা দিয়ে রাখে।

ওই তদন্ত প্রতিবেদনে আব্দুর রউফ, ক্রিসেন্ট লিমিটেড, মোসফেকুর রহমান, মমতাজুর রহমান অ্যান্ড দেয়ার অ্যাসোসিয়েটস, জুপিটার বিজনেস, অ্যাপোলো ট্রেডিং লিমিটেড, মারজানা রহমান ও ট্রেডেনেক্সট ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের বিরুদ্ধে বেক্সিমকোর শেয়ার নিয়ে কারসাজির তথ্য উঠে আসে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, এই আট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে রিয়ালাইজড গেইন করেছে ২১৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা এবং আনরিয়ালাইজড গেইন করেছে ৫২৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। অর্থাৎ তারা রিয়ালাইজড ও আনরিয়ালাইজড গেইন করে ৬৪৬ কোটি ২২ লাখ টাকা।

আরও পড়ুন

২০২২ সালের ২ জানুয়ারি থেকে ১০ মার্চ পর্যন্ত বেক্সিমকোর শেয়ারের টার্নওভার মূল্য ছিল ৪ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে ভিন্ন ভিন্ন ক্লায়েন্ট কোডের মাধ্যমে যার ৭০ শতাংশের বেশি লেনদেন করে এই আট ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান।

ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, বেক্সিমকো শেয়ার কারসাজি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স ১৯৬৯-এর ধারা ১৭-এর বেশ কয়েকটি উপধারা লঙ্ঘন করেছে। ধারা ১৭ লঙ্ঘন অনুযায়ী এটি একটি ফৌজদারি অপরাধ।

এদিকে, কমিশন সভায় ৯টি কোম্পানির আইপিও/আরপিও’র অর্থ ব্যবহার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ নয়টি কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেস্টহোল্ডিং, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, জেএমআই হসপিটাল রিকুইজিট মেনুফ্যাকচারিং, লুব-রেফ বাংলাদেশ, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, রিং শাইন টেক্সটাইল, সিকদার ইন্স্যুরেন্স এবং সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস।

এমএএস/এমকেআর/এমএস