ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ডিএসইর সিআরও খায়রুল বাশারকে শোকজ করলো বিএসইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:১২ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) খায়রুল বাশারকে শোকজ করেছে খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশন। মশিউর সিকিউরিটিজ কর্তৃক বিনিয়োগকারীদের ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় তাকে শোকজ করা হলো।

আগামী সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) খায়রুল বাশারকে বিএসইসিতে গিয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, খায়রুল বাশারের ব্যর্থতায় বিনিয়োগকারীদের ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে মশিউর সিকিউরিটিজ। এর মধ্যে গ্রাহকের সমন্বিত হিসাবে ঘাটতি (সিসিএ) ৬৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এছাড়া শেয়ার বিক্রি করে নিয়েছে ৯২ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে একক কোনো ব্রোকারেজ হাউজের এটিই সবচেয়ে বড় জালিয়াতি।

মশিউর সিকিউরিটিজের মতো পিএফআই সিকিউরিটিজ ও সিনহা সিকিউরিটিজে একই ধরনের জালিয়াতি হয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বিএসইসি। কিন্তু বিনিয়োগকারীরা যা হারানোর, তা হারিয়ে ফেলেছেন আগেই।

এ নিয়ে ডিএসইর এক কর্মকর্তা বলেন, খায়রুল বাশার মূলত সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন এবং ঝুঁকি এড়িয়ে বা অন্যদের কাঁধে দিয়ে চলতে চান। তাকে আইনগত ক্ষমতা দেওয়া হলেও তার প্রয়োগ করতে ভয় পান। এসব কারণেই মশিউর সিকিউরিটিজে বিনিয়োগকারীরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

তিনি বলেন, বিএসইসি থেকে চিঠি দিয়েও মশিউর সিকিউরিটিজে পরিদর্শন করানো সম্ভব হয়নি। তবে এর পেছনে বাশারের দাবি, তাকে বিএসইসির বিগত কমিশন মৌখিকভাবে পরিদর্শনে নিষেধ করেছিল। কিন্তু লিখিত নির্দেশের চেয়ে কারও ব্যক্তিস্বার্থে মৌখিক নির্দেশ বাস্তবায়ন কোনো দায়িত্ববান কর্মকর্তার ব্যাখ্যা হতে পারে না বলে ডিএসইর ওই কর্মকর্তার দাবি।

আরও পড়ুন

এ বিষয়ে একটি ব্রোকারেজ হাউজের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, যে কোনো ব্রোকারেজ হাউজের অর্থ জালিয়াতির বিষয়টি ডিএসই কর্তৃপক্ষ অফিসে বসেই যাচাই করতে পারে। কারণ প্রতিটি ব্রোকারেজ হাউজকে মাসে একবার বাধ্যতামূলক রিপোর্ট জমা দিতে হয় ডিএসইতে। এছাড়া ডিএসই কর্তৃপক্ষ যে কোনো সময় এ সংশ্লিষ্ট তথ্য চাইতে পারে। তাই সরেজমিনে গিয়ে পরিদর্শন করে রিপোর্ট আনতে হবে- এমন না। এখন আধুনিক যুগ। আর কারও মৌখিক আদেশে অন্যায় কাজ তদারকি বা বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন- এ জাতীয় কাজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না, এটা খোঁড়া যুক্তি। এক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যা থাকতে পারে।

খায়রুল বাশারকে দেওয়া শোকজের চিঠিতে বিএসইসি বলেছে, গত ১৪ মে মশিউর সিকিউরিটিজ পরিদর্শনের জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেয় বিএসইসি। যা শেষ করে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু এ কাজের জন্য দায়িত্বরত খায়রুল বাশার যথাসময়ে পরিদর্শন ও প্রতিবেদন জমা দিতে ব্যর্থ হন। এক্ষেত্রে খায়রুল বাশার কমিশনের নির্দেশনা এবং ডিএসই রেগুলেশনস, ২০১৩ এর রেগুলেশনস ১৬(১০)(বি) ও ১৬(৩)(এ) পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছেন।

এ পরিস্থিতিতে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ধারা ৭ ধারা প্রয়োগের আগে খায়রুল বাশারের কাছে মশিউর সিকিউরিটিজে ব্যর্থতার বিষয়ে ব্যাখ্যা শুনতে চায় কমিশন। তাই তাকে ব্যাখ্যা করার জন্য একটি সুযোগ দিয়ে সোমবার ডাকা হয়েছে। ওইদিন বেলা ১১টায় আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে তাকে ডাকা হয়েছে।

চিঠিতে বলা হয়েছে, ব্যর্থতার জন্য খায়রুল বাশারের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া উচিত হবে না, এর কারণ জানিয়ে শোকজে লিখিত ব্যাখ্যাও চেয়েছে কমিশন।

এরই মধ্যে মশিউর সিকিউরিটিজের ব্যাপারে বেশকিছু ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বর্তমান কমিশন। এর মধ্যে আছে মশিউর সিকিউরিটিজের বিরুদ্ধে ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন, ‘ফ্রি লিমিট’সহ দেওয়া সুযোগ-সুবিধা বন্ধ করা, পরিচালকদের ব্যাংক ও বিও হিসাব স্থগিত এবং জড়িত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের দেশ থেকে পালানোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের উদ্যোগ। এছাড়া তদন্তের পর আইন অনুসারে আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এমএএস/কেএসআর/এমএস