ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

দুর্বল ব্যাংককে তারল্য দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার পরিকল্পনা নেই: গভর্নর

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:২৫ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২৪

সব সময় ব্যাংকগুলোকে টাকা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা যায় না
কোনো ব্যাংককে বেআইনি সুবিধা দেওয়া হবে না

ইসলামী ব্যাংকসহ অন্য ব্যাংকগুলোকে বেআইনিভাবে আর তারল্য সুবিধা দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেছেন, আমরা অনিয়মে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো, কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নয়। দুর্বল ব্যাংকের পর্ষদ বিষয়ে বলেন, পর্ষদ ভেঙে দেওয়া প্রক্রিয়াধীন বিষয়।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বোর্ড রুমে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় ডেপুটি গভর্নর ড. হাবিবুর রহমান ও নুরুন নাহারসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মূল্যস্ফীতি নিয়ে গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি ৬-৭ মাসের মধ্যে কমে আসবে। মুদ্রানীতি খুব পরিবর্তন না হলেও একটু টাইট করা হবে। মুদ্রাবাজার একটু ভালো অবস্থানে আছে। ডলার ১২৫ টাকায় গেলেও এখন কমে এসেছে।

আরও পড়ুন

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার যে পরিকল্পনা বিদায়ী সরকার করেছিল সে বিষয়ে জানতে চাইলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ক্রেডিট কম। বাজেটে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। তবে সেটা কমিয়ে আনার বিষয়ে কথা বলবো।

‘ইসলামী ব্যাংকগুলোর বিষয়ে একটু সময় নিচ্ছি, যেন সিদ্ধান্তগুলো সঠিক হয়। আমরা যা-ই করি না কেন যারা দোষী তাদের টার্গেট করবো, প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট নয়। আমরা কোনো প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে পদক্ষেপ নেবো না। তবে দোষী ব্যক্তির ক্ষেত্রে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। কারণ, প্রতিষ্ঠানে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান রয়েছে, অর্থনীতিতে এর প্রভাব পড়বে’- বলেন গভর্নর।

তিনি বলেন, এনপিএল (নন পারফর্মিং লোন) নিয়ে আমরা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যেতে চাই। ব্যবসায়ীরা এটা করতে একটু সময় চেয়েছেন। তাদের দাবি এর ফলে প্রভাব পড়বে রপ্তানি-আমদানিতে। আমরা বলেছি, এটা নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা করবো, তবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে যাবো এতে সন্দেহ নেই।

সরকারি ব্যাংকের অস্থিরতা নিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় সোনালী ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের অস্থিরতা দুর্ভাগ্যজনক। আমরা এস আলম গ্রুপের বিষয়গুলো দেখেছি, কিন্তু সরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে সেটা দেখা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক।

এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইসলামী ব্যাংক ছাড়া পাঁচ ব্যাংকে ডিপোজিট উঠে যাচ্ছে, বিশেষত এসআইবিএল থেকে বেশি উঠছে। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলমের নিয়ন্ত্রণ আছে একাধিক ব্যাংক। সেখানে ডিপোজিট রাখা এবং তোলা গ্রাহকের ব্যাপার। তারা নিরাপদ মনে না করলে আমানত উঠাবে। এখন আমানত উঠিয়ে নিচ্ছেন আমানতকারীরা, এজন্য ব্যাংক মালিকরা দায়ী।

তিনি বলেন, আমরা আর কেনো সাপোর্ট (তারল্য) দিচ্ছি না। যেসব ব্যাংকের ওপর গ্রাহকদের আস্থা কমছে, সেসব ব্যাংক চলতে পারে না। আমরা তাদের উদ্ধার করতে পারবো না। সবসময় উদ্ধার করা ঠিক হবে না।

‘হঠাৎ করে কোনো প্রতিষ্ঠান (ব্যাংক) বন্ধ করা বা টাকা দিয়ে তড়িঘড়ি করে উদ্ধার করা ঠিক হবে না। পরে দেখে হয়তো সংখ্যা কমিয়ে আনার চেষ্টা করবো বা একীভূত করবো।’

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, ব্যাংকের অস্থিরতা একদিনে হয়নি। এটা নিয়ে কাজ করছি।

আরও পড়ুন

ব্যাংক কমিশনের বিষয়ে গভর্নরের ভাষ্য, এ নিয়ে অল্পদিনের মধ্যে ঘোষণা আসতে পারে। ডেপুটি গভর্নর নিয়োগের কমিটি হয়েছে, সার্চ কমিটি আছে। ইডিএফ (রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল) সৎ উদ্দেশে করা হয়েছিল, তখন আমাদের চাহিদাও কম ছিল। এখন সে পরিবেশ নেই।

‘আমরা ডলার নিয়ে বাজারমুখিতা করার চেষ্টা করছি। আমাদের লক্ষ্য কেউ যেন সরকারের কাছে না আসে। আমাদের রিজার্ভের থেকে নির্ভরতা কমাতে কাজ করবো, এটি জিরোতে নামিয়ে আনতে পারলে ভালো।’

ব্যবসায়ীদের ঋণের কিস্তি সুবিধা বিষয়ে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ঋণের কিস্তি সুবিধা চেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। যদি ১০ থেকে ২০টি প্রতিষ্ঠান আন্দোলনের কারণে খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তবে বিবেচনায় নিতে পারি। এ নিয়ে আমরা কিছু করতেও পারি। তবে ছোট ও মাঝারির ক্ষেত্রে এ সুবিধা হতে পারে, বড় কোনো প্রতিষ্ঠান তা পাবে না।

তিনি বলেন, দুর্বল ব্যাংকের পর্ষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি আমাদের বিবেচনায় আছে। এক হাজার টাকার নোট বাতিলের পরিকল্পনা নেই। নোট বাতিলের বিষয়টি নিয়ে যেন গুজব ছড়ানো না হয়। তবে সরকারের নতুন নোট প্রয়োজন হলে ছাপানো হবে।

ইএআর/এমকেআর/এমএস