দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার সজাগ: অর্থ উপদেষ্টা
দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। উৎপাদন ভালো হলে সরবরাহ বাড়বে আর দ্রব্যমূল্য কমে আসবে। ফলে এ সম্পর্কিত বিষয়গুলোতে সহায়ক পরিবেশ রাখার চেষ্টা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, দেশে কোনো পণ্যের উৎপাদন কম হলে যতটা সম্ভব আমদানি করতে হবে। সাধারণ মানুষ যেন চাপে না পড়ে, তা নিশ্চিত করা হবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে করণীয় বিষয়ে সরকার সজাগ আছে।
রোববার (১৮ আগস্ট) দুপুরে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে কী পদক্ষেপ নেবেন- জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, দ্রব্যমূল্যের বিষয়টি উৎপাদন ও সরবরাহের ওপর নির্ভরশীল। এর সঙ্গে বাণিজ্যের সম্পর্ক আছে। ফলে এ রিলেটেড বিষয়গুলোতে সহায়ক পরিবেশ রাখার চেষ্টা করা হবে। আমদানিসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের বিষয়ে আমরা যথেষ্ট সজাগ আছি। আমাদের সহকর্মীরা কাজ করছেন।
- আরও পড়ুন
- চালের বাজার এখনো চড়া, নিম্নবিত্তের নাভিশ্বাস
- বাংলাদেশের ঋণ নিয়ে উদ্বিগ্ন নয় বিশ্বব্যাংক, পাশে থাকার আশ্বাস
আমদানিনির্ভর পণ্য নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ভাবনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমদানির ওপর নির্ভরশীল সেটা জানি। আমদানির যে মূল্যস্ফীতি সে বিষয়ে আমরা সজাগ আছি। যতটুকু সম্ভব আমাদের অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আমদানি করতে হবে। যেন বাজার, ভোক্তা ও সাধারণ মানুষের ওপর বাড়তি চাপ না পড়ে। এখন যে চাপটা রয়েছে সেটাও যেন কমে আসে সে চেষ্টা থাকবে।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, অর্থনীতির বড় স্তম্ভ হচ্ছে বাণিজ্য। দেশীয় ও বৈদেশিক বাণিজ্য দুটি মিলেই। যতটা সম্ভব, দেশে ব্যবসা-বাণিজ্যের সহায়ক পরিবেশ তৈরির চেষ্টা করা হবে। দুর্নীতি যেন না হয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হবে। মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে বাণিজ্যের বড় ভূমিকা আছে। ফলে এসব ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা দূর করার চেষ্টা করা হবে।
তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলোর মধ্যে শুধু খাদ্যদ্রব্য নয়, বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যাগুলোও আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। এটি যত দ্রুত পারি করবো। এজন্য আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এর সঙ্গে সম্পর্কিত সব সংস্থার সঙ্গে বসবো। কারণ, তাদের সহযোগিতা লাগবে।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সঙ্গে বৈঠকে কী আলোচনা হয়েছে জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক ও এডিবির যতগুলো প্রকল্প আছে সেগুলোর মধ্যে যৌক্তিক প্রকল্পগুলোর কার্যক্রম আমরা বন্ধ করিনি। তারা বলেছেন, আমরা বললে তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, চলমান যেসব প্রকল্প যৌক্তিক, সেগুলো চালিয়ে নেওয়ার বিষয়ে কথা হয়েছে। একই সঙ্গে পাইপলাইনে যেসব প্রকল্প আছে বা ভবিষ্যতে আরও যেসব প্রকল্প নেওয়া হবে, সেখানে তারা সহায়তা করবে। তারা ইতিবাচক। এডিবি ও বিশ্ব ব্যাংক আমাদের সহায়তা করবে।
রিজার্ভ বাড়ানোর বিষয়ে কোনো কথা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, রিজার্ভ নিয়ে কথা বলার জন্য গভর্নর আছে। আমরা বেশি গভীরে যাইনি। তারা (এডিবি) এবং আইএমএফ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলবে। আমরা অর্থ ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সমন্বয় করে কাজ করবো।
এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না- জানতে চাইলে এ উপদেষ্টা বলেন, অনেক বড় একটা বিষয়। এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের অনেকগুলো শর্ত আছে, সেসব বিষয় আমাদের কাছে দৃষ্টিগোচর হয়েছে। শুধু অর্থ মন্ত্রণালয় নয়, এর সঙ্গে এনবিআরসহ অন্যদেরও সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে হবে।
সরকারি চাকরিজীবীদের রেশনিং চাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমার কাছে সরকারি ও বেসরকারি সাধারণ মানুষ সবাই সমান। প্রত্যেকে যেন একটা সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে। আমি সেদিন চাল, ডাল, ডিমসহ পাঁচ খাদ্য নিয়ে আলোচনা করেছি। এগুলো নিয়ে আমরা সজাগ, এগুলো আমরা করবো। এটি যেন সমান হারে সরকারি-বেসরকারি সবাই পায় সেটি নিশ্চিত করবো।
এমএএস/এমকেআর/জিকেএস