পতন ঠেকাতে পারলো না বহুজাতিক
ফের টানা দরপতন দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। গত সপ্তাহের শেষ দুই কার্যদিবস টানা দরপতনের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কর্যদিবসেও শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) যে কয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে, কমেছে তার চারগুণের সমান।
এই পতনের মধ্যে বিপরীত পথে হেটেছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সিংহভাগ বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার দাম বেড়েছে। তবে বহুচজাতিক কোম্পানিগুলোর শেয়ার দাম বৃদ্ধি দরপতন ঠেকানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। অবশ্য সূচকের বড় পতন ঠেকিয়ে দিয়েছে বহুজাতিক কোম্পানিগুলো।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে। ফলে কমেছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই দুই বাজারে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। এর মাধ্যমে টানা তিন কার্যদিবস পতনের মধ্যে থাকলো শেয়ারবাজার।
এদিন শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমায় একপর্যায়ে ৫০ পয়েন্ট কমে যায়।
এ পরিস্থিতিতে দাম কমার তালিকা থেকে বেরিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় ফিরতে থাকে একের পর এক বহুজাতিক কোম্পানি। রেকিট বেনকিজার, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার, ম্যারিকো, বার্জার পেইন্ট, বাটা সু, ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো, হাইডেলবার্গ সিমেন্টে, গ্রামীণ ফোন, রবি এসব বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নেয়।
আরও পড়ুন
- আইটিতে বিদেশিদের আগ্রহ কম, বেড়েছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের
- মন্দার পুঁজিবাজারে বাড়ছে দেশি বিনিয়োগকারী, কমছে বিদেশি
- পুঁজিবাজার ছাড়ছে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা
একের পর এক বহুজাতিক কোম্পানির শেয়ার দাম বাড়লেও তার সঙ্গে তাল মেলাতে পারেনি স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো। ফলে দাম বাড়ার তুলনায় দাম কমার তালিকা অনেক বড় হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে মাত্র ৭০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৯৭টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
অধিকংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২৩ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৪৮২ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২০২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৯৩৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
এদিকে দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৬২২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬৬৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন কমেছে ৪২ কোটি ৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে সাত কার্যদিবসের মধ্যে ডিএসইতে সর্বনিম্ন লেনদেন হলো।
এই লেনদেনে সব থেকে বেশি অবদান রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ২৭ কোটি ৯০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা অগ্নি সিস্টেমের ২২ কোটি ৩১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৬০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- স্যালভো কেমিক্যাল, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, সোনালী পেপার, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, আফতাট অটোমোবাইল এবং ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৯৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২২৮টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৬৫টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৮ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৯ কোটি ১ লাখ টাকা।
এমএএস/ইএ/জিকেএস