রপ্তানি প্রণোদনা আবার কমলো
থমকে যাবে শিল্প, কমবে বিনিয়োগ-কর্মসংস্থান
সব ধরনের রপ্তানিতে দ্বিতীয়বারের মতো নগদ সহায়তা কমিয়েছে সরকার। স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে উত্তরণের অজুহাতে এখনই প্রণোদনা কমানোর এ সিদ্ধান্তের কোনো যৌক্তিকতা নেই, এমনটা বলছেন রপ্তানিকারকরা।
উদ্যোক্তাদের মতে, সুদহার বেড়ে যাওয়া, গ্যাস ও বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি এবং বর্ধিত মজুরি কার্যকরের ফলে নানামুখী সংকটে রপ্তানিখাত। এ অবস্থায় প্রণোদনা কমানোয় নেতিবাচক দিক তৈরি হবে রপ্তানিমুখী শিল্পে। কমে যেতে পারে বিনিয়োগ, ঝুঁকিতে পড়বে কর্মসংস্থান।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, দেশের অর্থনীতির স্বার্থে সরকারের বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হবে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এলডিসি থেকে উত্তরণ পরবর্তী প্রক্রিয়ায় সরকার যেমন প্রণোদনা দিতে পারবে না, তেমনি রপ্তানিকারকদের সমস্যাও দেখতে হবে। তারা টাকার বিনিময়ে গ্যাস-বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না বলেই ক্ষতিপূরণ হিসেবে নগদ সহায়তার প্রয়োজন পড়ে। প্রয়োজনে লজিস্টিক সাপোর্ট, বাণিজ্য সুবিধা ও বন্দর ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। কারণ বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকিয়ে রাখতে রপ্তানি খাতের একটি সুবিধা কমানো হলে বিকল্প সুবিধার ব্যবস্থা না হলে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
আরও পড়ুন
- পোশাক, চামড়াসহ ৪৩ খাতের পণ্যে নগদ প্রণোদনা কমলো
- কেন কমছে পোশাক রপ্তানি?
- বাংলাদেশে ডেইরি ভ্যালু চেইন প্রকল্পে ডেনমার্কের অর্থায়ন
রপ্তানি প্রণোদনা কমলো
গত ৩০ জুন বাংলাদেশ ব্যাংক এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২০২৪-২৫ অর্থবছর অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৪৩ খাতের পণ্যে রপ্তানি প্রণোদনা/নগদ সহায়তা ঘোষণা করে। কিন্তু এবারের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী নগদ সহায়তা আগের চেয়ে অনেক কম পাবেন রপ্তানিকারকরা। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতেও পণ্যগুলোতে নগদ সহায়তা কমানো হয়েছিল।
‘নগদ সহায়তার বিষয়টা সরকারের সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা বাড়ানো-কমানোর দায়িত্বে নেই। সরকারের বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত আসে বাণিজ্য উৎসাহিত করতে। সরকারের নেওয়া যে কোনো বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’- মো. মেজবাউল হক, নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র, বাংলাদেশ ব্যাংক
গত ১ জুলাই থেকে জাহাজি করা রপ্তানিমুখী দেশীয় বস্ত্রখাতে শুল্ক বন্ড ও ডিউটি ড্র-ব্যাকের পরিবর্তে বিকল্প নগদ সহায়তা দেওয়া হবে দেড় শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে এটি ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক জাগো নিউজকে বলেন, ‘নগদ সহায়তার বিষয়টা সরকারের সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রীয় ব্যাংক সহায়তা বাড়ানো-কমানোর দায়িত্বে নেই। সরকারের বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত আসে বাণিজ্য উৎসাহিত করতে। সরকারের নেওয়া যে কোনো বাণিজ্যিক সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’
আরও পড়ুন
- শতভাগ দেশীয় উপকরণের সুযোগ কাজে লাগাতে পারছে না চামড়া শিল্প
- সবজি-ফল রপ্তানি বাড়াতে এয়ার-কার্গো সহজলভ্য করার দাবি
- মেয়াদের শেষ বছরে ১১০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানির নতুন নীতি
সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়বে পোশাক শিল্প
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনার ফলে বস্ত্র খাতের রপ্তানিকারকদের প্রণোদনার হার তিন শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা কমিয়ে এখন দেড় শতাংশ করা হয়েছে। ইউরো অঞ্চলে বস্ত্রখাতের রপ্তানিকারকদের বিদ্যমান ১ দশমিক ৫০ শতাংশের অতিরিক্ত বিশেষ সহায়তা কমিয়ে ০ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক খাতের (নিট, ওভেন, সোয়েটার) অন্তর্ভুক্ত সব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নগদ সহায়তা হবে ৩ শতাংশ, আগে এটি ছিল ৪ শতাংশ। বস্ত্র খাতের নতুন বাজার সম্প্রসারণ সুবিধা থাকছে ২ শতাংশ। গত ফেব্রুয়ারিতে এটি ৪ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছিল।
‘রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে পোশাক শিল্প। নীতি সহায়তায় টিকে থাকা শিল্পখাত বৈশ্বিক সক্ষমতা হারাবে। বিনিয়োগ কমবে, ঝুঁকিতে পড়বে ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী পোশাক খাত।’ এস এম মান্নান কচি, সভাপতি, বিজিএমইএ
তৈরি পোশাক খাতে বিশেষ নগদ সহায়তা শূন্য দশমিক শূন্য ৩ শতাংশে নামানো হয়েছে। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ তৈরি পোশাকপ্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি এস এম মান্নান কচি জাগো নিউজকে বলেন, ‘রপ্তানিকারকরা এখন নানামুখী সংকটের মধ্যে রয়েছেন। গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়লেও চাহিদামতো তা মিলছে না, গ্যাস তো আসেই না। শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে, অন্যদিকে পোশাক পণ্যের দাম বাড়াননি ক্রেতা। বড় বড় ক্রেতা দেশে পোশাক পণ্যের ব্যবহার কমেছে। এসব কারণে রপ্তানি কমছে। আগামীতে রপ্তানিতে আরও খারাপ অবস্থা আসবে। সংকট কাটাতে সরকার চাইলে ২০২৯ সাল পর্যন্ত ভর্তুকি দিতে পারে।’
এস এম মান্নান কচি বলেন, ‘রপ্তানিতে নগদ সহায়তা কমার ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়বে পোশাক শিল্প। ব্যাংক ঋণের সুদহার বেড়ে যাওয়ায় রপ্তানির ৮৪ ভাগ নেতৃত্ব দেওয়া পোশাক শিল্পের টিকে থাকা কঠিন হচ্ছে। কিন্তু কোনো রপ্তানিকারকের সঙ্গে আলোচনা না করেই প্রণোদনা কমানোর প্রজ্ঞাপন হলো। এতে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি হবে রপ্তানিতে। নীতি সহায়তায় টিকে থাকা শিল্পখাত বৈশ্বিক সক্ষমতা হারাবে। বিনিয়োগ কমবে, ঝুঁকিতে পড়বে ৪০ লাখ শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী পোশাক খাত।’
প্রণোদনা কমেছে পাট ও চামড়াজাত পণ্যেও
এখন থেকে বৈচিত্র্যপূর্ণ পাটপণ্যে নগদ সহায়তা কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ২০ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। পাটজাত চূড়ান্ত দ্রব্যে (হেসিয়ান, সেকিং ও সিবিসি) প্রণোদনা ৭ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নামানো হয়েছে। আগে যেটা ১২ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছিল। পাট সুতায় (ইয়ার্ন ও টোয়াইন) নগদ সহায়তা কমিয়ে ৩ শতাংশ করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে ৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়েছিল।
চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারির আগে যা ছিল ১৫ শতাংশ। সাভারে চামড়া শিল্প নগরীতে অবস্থিত কারখানা ও সাভারের বাইরে অবস্থিত নিজস্ব ইটিপি রয়েছে এমন কারখানায় উৎপাদিত ক্রাস্ট ও ফিনিশড চামড়া রপ্তানিতে প্রণোদনা কমিয়ে ৬ শতাংশ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে এটা ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছিল।
‘রপ্তানিতে কোনো না কোনোভাবে নগদ সহায়তা দিতেই হবে। যেহেতু ২০২৬ সালের পর আর সহায়তা থাকবে না, এজন্য রপ্তানিতে মূল্য ছাড় দিতে হবে।’- ফরহাদ আহমেদ আকন্দ, চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশন
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) চেয়ারম্যান মো. শাহীন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার প্রণোদনা আগেও দিয়েছে, এখন কমিয়েছে। রপ্তানি টিকিয়ে রাখতে এটা দিতে হবে। কিন্তু প্রণোদনার ওপরে সোর্স ট্যাক্স ১০ শতাংশ, যেটা অনেক বেশি। এখানে ৩ শতাংশ বা শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনা হলে রপ্তানির জন্য ভালো কিছু বয়ে আনবে।’
একই কথা বলেন বাংলাদেশ জুট অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এবং অগ্রণী পাট সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরহাদ আহমেদ আকন্দ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘রপ্তানিতে কোনো না কোনোভাবে নগদ সহায়তা দিতেই হবে। যেহেতু ২০২৬ সালের পর আর সহায়তা থাকবে না, এজন্য রপ্তানিতে মূল্য ছাড় দিতে হবে।’
আরও পড়ুন
- ব্যাহত হবে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ
- আমরা বাস করি মাটিতে, বিনিয়োগ করি পাতালে: এম এ মান্নান
- বিদেশি বিনিয়োগ প্রসারে কাজ করছি, আশানুরূপ সাড়া পাচ্ছি না
মাংস রপ্তানিতে প্রণোদনা ১০ শতাংশ
ওষুধের কাঁচামালে নগদ সহায়তা ১০ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা হয়। ফেব্রুয়ারিতে যেটা ২০ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নামানো হয়। হালাল মাংস রপ্তানিতে দেওয়া হবে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা। ফেব্রুয়ারিতে এটি ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ করা হয়েছিল। হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানিতে বরফ আচ্ছাদনের হার অনুযায়ী ৪ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। কৃষিপণ্য (শাক-সবজি/ফলমূল), প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য এবং আলু রপ্তানিতে ১০ শতাংশ নগদ সহায়তা মিলবে।
‘একজন উদ্যোক্তার ভর্তুকি তখনই প্রয়োজন হয় যখন সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে পারে না, ব্যবসার পরিবেশ ভালোমতো দিতে পারে না। এটা তারা (রপ্তানিকারক) পান ক্ষতিপূরণ হিসেবে। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ ব্যবসার পরিবেশ ভালো রাখলে তাদের ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না।’- অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমান, সম্মাননীয় ফেলো, সিপিডি
গবেষণা সংস্থা রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান অর্থনীতিবিদ এম এ রাজ্জাক বলেন, ‘রপ্তানির সুবিধার্থে প্রণোদনা সহায়তা আরও কন্টিনিউ করা যেতে পারে। এটা না হলে বাণিজ্যের অন্যান্য সুবিধা দিয়ে টিকিয়ে রাখতে হবে রপ্তানিখাত। এক্ষেত্রে বন্দর ব্যবস্থাপনা, লজিস্টিক সাপোর্ট ও স্কিল সাপোর্ট দেওয়া যেতে পারে। রাতারাতি তো সব উন্নতি করা যায় না। তবে বাণিজ্য সুবিধার অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো সহায়ক হবে রপ্তানি বাড়াতে।’
অন্য যেসব পণ্যে রপ্তানি সহায়তা কমলো
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ১০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে হালকা প্রকৌশল পণ্য ও অ্যাকুমুলেটর ব্যাটারি রপ্তানিতে। ৮ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে পাটকাঠি থেকে উৎপাদিত কার্বন ও জুট পার্টিকেল বোর্ড, শস্য ও শাক-সবজির বীজ, ফার্নিচার, আগর ও আতর, সিনথেটিক ও ফেব্রিক্সের মিশ্রণে তৈরি পাদুকা ও ব্যাগ রপ্তানির ক্ষেত্রে।
৭ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে টুপি রপ্তানিতে। ৬ শতাংশ নগদ সহায়তা দেওয়া হবে হাতে তৈরি পণ্য (হোগলা, খড়, আখ/নারকেলের ছোবড়া, গাছের পাতা/খোল, গার্মেন্টসের ঝুট কাপড় ইত্যাদি), গরু মহিষের নাড়ি, ভুঁড়ি, শিং ও রগ (হাড় ব্যতীত), পেট বোতল-ফ্লেক্স ও পেট বোতল-ফ্লেক্স থেকে উৎপাদিত পলিয়েস্টার ফাইবার, জাহাজ, প্লাস্টিক দ্রব্য, দেশে উৎপাদিত কাগজ ও কাগজ জাতীয় পণ্য, সফটওয়্যার, ইনফরমেশন টেকনোলজি এনাবল সার্ভিসেস (আইটিইএস) ও হার্ডওয়্যার, মোটরসাইকেল, ফটোভোলটাইক মডিউল, রেজার ও রেজার ব্লেড, সিরামিক দ্রব্য, কাঁকড়া ও কুঁচে (হিমায়িত, সফটসেল ও জীবন্ত), গ্যালভেনাইজড শিট/কয়েল, কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স, ইলেকট্রিক্যাল হোম ও কিচেন অ্যাপ্লায়েন্স পণ্য রপ্তানিতে। এছাড়া চাল, বাইসাইকেল ও এর পার্টস, সিমেন্ট সিট রপ্তানিতে ৩ শতাংশ এবং চা ও এমএস স্টিল পণ্য রপ্তানির বিপরীতে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হবে। এসব পণ্যে গত ফেব্রুয়ারির চেয়ে প্রণোদনা আরও কমানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
- চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় শিল্পের সক্ষমতা বাড়ানো আবশ্যক
- ৫ মাসে সেবা পেতে বিডায় ১২ হাজার ৪৭৯ আবেদন
- ‘কর অব্যাহতি তুলে নিলে টেক ইন্ডাস্ট্রি মুখ থুবড়ে পড়বে’
এ বিষয়ে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো অর্থনীতিবিদ ড. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার বলছে এলডিসি উত্তরণের পর ২০২৬ সালের নভেম্বর থেকে রপ্তানিতে বিশেষ সুবিধা দিতে পারবে না। এখানে সরকারের কথার যৌক্তিকতা রয়েছে। আবার একই সময়ে রপ্তানিকারকদের পণ্য উৎপাদনে অনেক খরচ বেড়েছে সেটাও দেখতে হবে। তাদের সমস্যা দূর না করলে বিনিয়োগ আসবে না, কর্মসংস্থান বাড়বে না।’
মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘একজন উদ্যোক্তার ভর্তুকি তখনই প্রয়োজন হয় যখন সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ দিতে পারে না, ব্যবসার পরিবেশ ভালোমতো দিতে পারে না। এটা তারা (রপ্তানিকারক) পান ক্ষতিপূরণ হিসেবে। গ্যাস-বিদ্যুৎসহ ব্যবসার পরিবেশ ভালো রাখলে তাদের ভর্তুকির প্রয়োজন হবে না। তবে এটা ঠিক যে টাকার অবমূল্যায়নে রপ্তানিকারক কিছু সুবিধা পাচ্ছেন, অন্যদিকে উৎপাদন খরচও বেড়েছে কয়েক গুণ। সব মিলিয়ে বৈশ্বিক প্রতিযোগী সক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে হলে এই মুহূর্তে রপ্তানিকারকের একটা সুবিধা উঠিয়ে নিলে অন্য সুবিধা দিতে হবে।’
ইএআর/এমএমএআর/এএসএম