ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

‘হদিস নেই’ মতিউরের, লোক পাঠিয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগদান

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৫৫ পিএম, ২৪ জুন ২০২৪

ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ হারানো জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক কর্মকর্তা মতিউর রহমানের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। তবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করায় তিনি এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে মতিউর রহমানকে সরিয়ে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার পরই তিনি লোক পাঠিয়ে মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে মতিউরের জন্য আলাদা কোনো কক্ষ নেই। এমনকি তার বসার জন্য কোনো চেয়ার-টেবিলও নেই। অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার পর তিনি মন্ত্রণালয়েও আসেননি। তবে অন্য ব্যক্তির মাধ্যমে তিনি যোগদানপত্র পাঠিয়ে যোগ দিয়েছেন।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে মতিউর রহমানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার অর্থ হলো তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে। সংস্থাপন বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জন্য ওএসডি করার বিধান আছে। এর বাইরে অন্য বিভাগ, সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের জন্য ওএসডির বদলে সংযুক্ত করার পদ্ধতি চালু আছে। মতিউর রহমানের ক্ষেত্রে সেটিই করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

তিনি বলেন, মতিউর রহমান পদোন্নতি পেয়ে এনবিআরের সদস্য (কাস্টমস ও ভ্যাট) হয়েছেন। তিনি এখনো ওই পদেই আছেন (পদ থেকে সরানো হয়েছে)। তবে তাকে যেহেতু অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়েছে, সুতরাং তিনি এনবিআরের কোনো কর্যক্রম করতে পারবেন না। তার কর্মক্ষেত্র হবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ। তবে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে তার জন্য আলাদা কোনো কক্ষ বা চেয়ার-টেবিল থাকবে না।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, মতিউর রহমানকে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করার পর এরই মধ্যে তিনি মন্ত্রণালয়ে যোগদান করেছেন। কিন্তু যোগদান করতে তিনি নিজে আসেননি। অন্য মানুষ পাঠিয়ে তিনি যোগদান করে গেছেন। মন্ত্রণালয়ে যোগ দিলেও তার জন্য আলাদা কোনো কক্ষ বা চেয়ার-টেবিল নেই।

এই কর্মকর্তা বলেন, আমরা গুঞ্জন শুনছি মতিউর রহমান দেশে নেই। তিনি দেশের বাইরে চলে গেছেন। এ কারণেই হয়তো তিনি অন্যের মাধ্যমে যোগদানপত্র পাঠিয়ে যোগদান করেছেন। অন্যের মাধ্যমে পত্র পাঠিয়ে যোগদান করার ক্ষেত্রে কোনো বাধা নেই।

এদিকে ছাগলকাণ্ডে আলোচনায় আসার পর মতিউর রহমানকে সর্বশেষ ঈদের দ্বিতীয় দিন (১৮ জুন) একটি বেসরকারি টেলিভিশনের ইন্টারভিউতে দেখা যায়। এরপর বসুন্ধরা, ধানমন্ডিসহ মতিউরের বিভিন্ন বাসভবনে খোঁজ নিয়েও সন্ধান মেলেনি তার। এমনকি কোরবানির ঈদের ছুটির পর অফিস খুললেও তিনি আর এনবিআর কার্যালয়ে আসেননি।

আরও পড়ুন

গুঞ্জন রয়েছে, রোববার (২৩ জুন) বিকেলের দিকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর ভারত চলে গেছেন।

এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তার দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করতে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে। একই দিন কাস্টমস, এক্সসাইজ ও ভ্যাট অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে সরিয়ে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে সংযুক্ত করা হয়। এছাড়া তিনি হারিয়েছেন সোনালী ব্যাংকের পরিচালক পদও।

গুঞ্জন রয়েছে, আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে মতিউর রহমান ভারতে চলে গেছেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারত থেকে সরাসরি দুবাই চলে যেতে পারেন। প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট তাকে দেশত্যাগে সহযোগিতা করেছে।

আরও পড়ুন

জানা গেছে, ঈদের পর চট্টগ্রাম বিমানবন্দর দিয়ে মালয়েশিয়া চলে গেছেন ছাগলকাণ্ডে আলোচিত মুশফিকুর রহমান ইফাত, তার বোন ইফতিমা রহমান মাধবী ও তার মা শাম্মী আকতার। ইফাত মতিউরের দ্বিতীয় স্ত্রীর সন্তান।

অন্যদিকে, মতিউরের প্রথম স্ত্রী লায়লা কানিজ ও তার ছেলে দেশে থাকতে পারেন বলে জানা গেছে। সূত্র জানায়, লায়লা নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান। এই পদে গত ২৯ মে ভোট হওয়ার কথা ছিল। তবে সংঘর্ষের কারণে ভোট হয়নি। লায়লা উপজেলা নির্বাচনে এবারও চেয়ারম্যান প্রার্থী।

ইফাতের ছাগল কেনার বিষয়টি প্রথমে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপরই তা ‘টক অব দ্য কান্ট্রিতে’ পরিণত হয়। এরপর বেরিয়ে আসে এই কর্মকর্তা ও তার পরিবারের অঢেল অবৈধ সম্পদের খবর।

এমএএস/ইএ/এএসএম