পোশাকের পর জমে উঠেছে জুতা, বেল্ট বেচাকেনা
ঈদ উপলক্ষে জমে উঠেছে বিপনিবিতানগুলোর বিক্রি। ক্রেতারা পোশাকের সঙ্গে মানানসই ডিজাইনের জুতা ও বেল্ট কিনতে পছন্দ করেন। এ কারণে পোশাকের পর শুরু হয় জুতাও বেল্টসহ আনুষঙ্গিক কেনাকাটা। রমজানের শুরুতে ও মাঝে পোশাকের দোকানে ভিড় থাকলেও শেষ সপ্তাহে রাজধানীর জুতা, বেল্টের দোকানগুলোতে এখন জমজমাট ভিড়।
শুক্রবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে মিরপুর ১২, ১১ ও পল্লবীর বিভিন্ন মার্কেট ও ব্র্যান্ড শপ ঘুরে দেখা যায় দোকানে ঘুরে ঘুরে ক্রেতারা তাদের পছন্দের জুতা খুঁজছেন। শেষ সময়ে ছেলেদের স্যান্ডেল, লোফার, ক্যাজুয়াল জুতার বিক্রি বেড়েছে। এছাড়া বেল্টের দোকানে বেড়েছে ক্রেতার আনাগোনা।
জুতার ব্র্যান্ড হাউজ শপগুলো ঘুরে দেখা গেছে ঈদ সামনে রেখে বাজারে এসেছে নতুন ডিজাইনের জুতা। তাতে রয়েছে উৎসবের সাজ। ঈদের পাঞ্জাবীর সঙ্গে মানানসই স্যান্ডেল, স্লিপার্স, বেল্টের স্যান্ডেল, ফ্ল্যাট স্যান্ডেল, স্লাইড রয়েছে। এছাড়া লোফার, ক্যাজুয়াল ও ফর্মাল শুও বিক্রি হচ্ছে। মেয়েদের হাই হিল, ফ্ল্যাট স্যান্ডেল, জুত্তি, পাম্পিস চলছে বেশ। ছেলে মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাট স্যান্ডেলের বিক্রি বেশি বলে বিক্রেতারা জানিয়েছেন।
ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জুতা-স্যান্ডেল, ব্যাক বেল্ট, লোফার, কেডস, রানিং শু সব কিছুতেই নকশা বা রঙের চমৎকারিত্বের চেষ্টা রাখার চেষ্টা করা হয়েছে। পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে ক্রেতারা বেছে নিচ্ছেন জুতা। তাতে গুরুত্ব পাচ্ছে স্থায়িত্ব ও পায়ের আরামের বিষয়টি।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে এপেক্স, বাটা, বে, ওরিয়ন, লোটো, ওয়াকার, লেদারেক্সসহ বিভিন্ন বড় ব্র্যান্ড নতুন ডিজাইনের জুতা এনেছে। শুধু বাটাই এবার এক হাজারের বেশি নতুন ডিজাইনের জুতা বাজারে এনেছে বলে জানিয়েছেন এর বিক্রয়কর্মীরা। ৫০০ টাকা থেকে ১৭ হাজার টাকা এসব জুতার দাম।
আরও পড়ুন
ছেলেদের স্যান্ডেল ও মেয়েদের ফ্ল্যাট জুতা বিক্রি বেশি হচ্ছে বলে জানান মিরপুর ১১ নম্বর বাস স্ট্যান্ডের বাটার শপ ম্যানেজার বুলবুল আহমেদ। তিনি জানান, আমাদের কমফিট মডেলের স্যান্ডেল ও জুতার বিক্রি ভাল। লোফার ও কেডস চলছে। তবে স্যান্ডেল বেশি চলছে।
তিনি বলেন, ঈদের দিন পাঞ্জাবির সঙ্গে সাধারণত দুই ফিতার স্যান্ডেল পরে ছেলেরা। কেউ আবার বেল্টের স্যান্ডেল পরতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে আরামদায়ক ও হালকা জুতা পছন্দ করছেন অভিবাবকরা।
পূরবীর এপেক্স ব্র্যান্ডের শো রুম ম্যানেজার রনি জানান, ক্রেতারা আরামদায়ক ও টেকসই জুতা খুজছেন। মেয়েরা জুতার সোলে স্টোন বসানো বা বাহারী কাজের জুতা পছন্দ করছেন। ফ্ল্যাট ও হিল দুই ধরণের জুতাই তারা কিনছেন।
তিনি বলেন, এখন মেয়েদের জুতা বিক্রি কম, ছেলেদেরটাই বেশি। ছেলেদের বেল্ট ও ওয়ালেট ও বিক্রি হচ্ছে বেশ। এপেক্সে ছেলেদের স্যান্ডেল পাওয়া যাচ্ছে ১২৯৯ থেকে ৭ হাজার টাকার মধ্যে। বেল্ট ৭৯২ থেকে ২৮০০ টাকা, ওয়ালেট ৭৯২ টাকা থেকে ২২০০ টাকা আর ছেলে বাচ্চাদের এক ফিতা, দুই ফিতার জুতা বিক্রি হচ্ছে ৫৯২ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে। মেয়েদের ৬০০ টাকা থেকে ২০০০ টাকায় বিভিন্ন স্যান্ডেল বিক্রি হচ্ছে।
পল্লবীর বাটার শো রুমে কথা হয় চাকুরিজীবি আবদুস সামাদ জানান, স্কুল পড়ুয়া ছেলে সাহেল কে নিয়ে দুই দিন ধরে ঘুরছেন। উদ্দেশ্যে সাহেলের জন্য মানানসই একটা স্যান্ডেল কেনা। বাটার এই দোকানে দুই ফিতার একটা সেন্ডেল পছন্দ হলেও, ছেলের পায়ের সাইজের পাওয়া যাচ্ছেনা।
হাউজের বিক্রয় কর্মীরা জানিয়েছেন অনেক মডেলের জুতারই স্টক শেষ। ক্রেতা চাইলে কোন আউটলেটে ওই জুতা পাওয়া যাবে, সেটা জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
পল্লবীর রংধনু মার্কেটের নিচ তলার জুতার মার্কেটে কথা হয় চাকুরিজীবি নাসিমুল হকের সঙ্গে। তিনি তার ১ বছর বয়সী ছেলের জন্য লোফার খুঁজছেন। তিনি বলেন, ব্র্যান্ডের দোকান ঘুরে এসেছি বাচ্চাদের লোফার নেই। লোকাল দোকানেও লোফারের দাম চাইছে ১৫০০-১৮০০ টাকায়।
পূরবী সিনেমা হলের মহশিন আহমেদ নামের একজন বিক্রেতা বলেন, আমাদের কাছে কাপড়ের, লেদার ও নন লেদার সব ধরণের বেল্টই আছে৷ ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা এসব বেল্টের দাম। এখন বিক্রি মোটামুটি ভালই, ঈদের দুই-একদিন আগে আরও জমজমাট হবে।
এসএম/এসআইটি/এমএস