ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি

বাংলাদেশের কর্ম পরিবেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে উন্নত

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:১৪ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২৩

দেশে তৈরি পোশাকশিল্প খাতে এক হাজার ৩৫০ কারখানায় ট্রেড ইউনিয়ন আছে। নানা কারণে এর অর্ধেক কারখানার ট্রেড ইউনিয়নই অকার্যকর। সোমবার (১১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ইকোনোমিকস রিপোর্টার্স ফোরাম বা ইআরএফ আয়োজিত পোশাক খাতের শ্রম ইস্যু নিয়ে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন শ্রমিক নেতা আমিরুল হক আমিন।

ইআরএফ সভাপতি রেফায়েত উল্লাহ মীরধা সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। বক্তব্য রাখেন শ্রম বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান, বিকেএমইএ’র সহ-সভাপতি ফজলে শামীম এহসান, বিজিএমইএ’র পরিচালক এ এন সাইফুদ্দিন, শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।

গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন সভাপতি আমিরুল হক আমিন বলেন, দেশের শ্রম পরিস্থিতির মতো এত খারাপ হয়নি যেখানে স্যাংশন চলে আসতে পারে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের দেশের শ্রম পরিস্থিতি ভালো। আইএলওর ১২টি ধারার মধ্যে আটটিতে অনুস্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র করেছে মাত্র ছয়টিতে। শ্রমিক অধিকারের মৌলিক দুটি ধারায় আমেরিকা অনুস্বাক্ষর করেনি, আমাদের দেশ করেছে। বলতেই পারি বাংলাদেশের কর্ম পরিবেশ যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে উন্নত।

বিকেএমইএ’র কার্যকরী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, দায়িত্ববান শ্রমিক সংগঠন বা নেতা হলে তিনি কারখানার ক্ষতি করতে পারেন না। অনেক পক্ষ আছে যারা দেশের বিরুদ্ধে কথা বলে। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়েও ভয় কাজ করে মালিকপক্ষের মধ্যে। ট্রেড ইউনিয়ন মানেই যখন তখন কাজ বন্ধ করে দেবে সে ধরনের ইউনিয়ন নিয়ে আমরা ভীত।

তিনি বলেন, এবারের আন্দোলন শ্রমিকদের আন্দোলন ছিল না। তাহলে কারা ভাঙচুর করলো সেটা দেখতে হবে। তাদের যারা উৎসাহিত করলো তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, সিসি টিভির ফুটেজ দেখে ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। ফুটেজ ছাড়া যাদের নামে মামলা হয়েছে আমরাও তাদের মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছি। নিরীহ শ্রমিকের ওপরে মামলা-গ্রেফতার না করতে শিল্প পুলিশের প্রতি আহ্বান জানাই।

শ্রম-বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান বলেন, শ্রম ইস্যু নিয়ে কারখানায় ভয় আছে। শ্রমিক নেতাকে অবশ্যই শ্রমিক হতে হবে কিন্তু তা অনেক সময় কি দেখি। ছাত্র নেতা যদি হয় দুই ছেলের বাবা তাহলে সে কি করে ছাত্রের সমাধানে কাজ করবে। শ্রমিক নেতাকে অবশ্যই শ্রমিক হতে হবে তাহলেই সে শ্রমিকের সমস্যা বুঝবে।

স্যাংশন নিয়ে তিনি বলেন, আমেরিকার যেটা বলা হচ্ছে সেখানে স্যাংশন না। বলা হয়েছে ট্রেড প্যানাল্টি বা জরিমানার কথা। এসব বিষয়ে লেখালেখি না করাই ভালো। আগে আমাদের দেখতে হবে বিষয়টা কোন দিকে যায়। আমাদের ইপিজেডগুলোয় ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন আছে, সেখানে ট্রেড ইউনিয়ন করতে হবে। আমরা আমেরিকাকে ভয় পাচ্ছি, কেন ভয় পাচ্ছি আমরা। তারা তো বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞার কথা বলেনি, তারা জরিমানার কথা বলেছে। তাহলে ভয় না করে ম্যানেজ করতে হবে তাদের।

ফজলে শামিম এহসান বলেন, সংশোধিত শ্রম আইনে মালিক-শ্রমিকের সব দিক বিবেচনায় আনা হয়নি, হযবরল অবস্থা ছিল। রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই তিনি তাতে সই করেননি। শ্রম বিষয়ে বর্তমানে আমরা অনেক দেশ থেকে ভালো অবস্থানে আছি। আন্তর্জাতিক মানের দিক থেকেও ভালো। ক্ষতিপূরণের দিক থেকে আমরা উন্নত দেশের মতো অবস্থায় আছি। ট্রেড ইউনিয়ন নিয়ে মনে ভয় থাকে। ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সেভাবে নার্সিং করা হয়নি।

তিনি বলেন, আমাদের ২৫০০ কারখানার মধ্যে ১৩০০ এর বেশি কারখানায় ইউনিয়ন হয়েছে। আমাদের সেক্টরে শ্রমিক নেতা দু ধরনের হয়ে থাকে। তাদের একটা সেক্টর বাঁচাতে কাজ করে আর একটা আছে বাইরে থেকে ডলার এনে নিজের স্বার্থ দেখে। শ্রমিক নেতা মানে দাবি-দাওয়া না, কারখানাকেও এগিয়ে নিতে হবে। আমেরিকার যে আইনটার কারণে আমাদের ভয়, সেখানে দুটা দিক আছে। একটা পর্দার সামনে অপরটি পর্দার বাইরের দিক। আমেরিকা বিষয়ে এখন যে পরিস্থিতি আছে সেটা রাজনৈতিক। এখানে কূটনীতিকভাবে এগিয়ে নিতে হবে। সরকারকে এখানে উদ্যোগ নিতে হবে।

তৌহিদুর রহমান বলেন, আমেরিকার শ্রম নীতিকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। ব্যবসা ধরে রাখতে হলে আমাদের তাদের ম্যামোরেন্ডাম বিবেচনায় নিতে হবে। আমার কাছে মনে হয় পশ্চিম আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটা। সাম্প্রতিক আন্দোলনে চারজন শ্রমিকের মৃত্যু হলো। এ হত্যাকাণ্ডের কেন তদন্ত হলো না, কেন বিচার হচ্ছে না।

ইএআর/জেডএইচ/এমএস