ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য জোরদারে আগ্রহী সৌদি আরব

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:০৪ পিএম, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩

বাংলাদেশের সঙ্গে খাদ্য, জ্বালানি, লজিস্টিকস এবং উৎপাদন খাতে বাণিজ্য জোরদারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে সৌদি আরব।

বুধবার (৬ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর হোটেল লা মেরিডিয়ানে অনুষ্ঠিত সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের এক বৈঠকে এ আগ্রহের কথা জানান সৌদি আরবের ব্যবসায়ীরা। দেশের শীর্ষ বাণিজ্য সংগঠন এফবিসিসিআই এই বৈঠকের আয়োজন করে।

বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৌদি সরকারের বিনিয়োগবিষয়ক মন্ত্রী খালিদ এ. আল ফালিহ বলেন, বাংলাদেশ সৌদি আরবের অন্যতম ঘনিষ্ঠ এক বন্ধু। দীর্ঘদিন ধরে উভয় দেশের মধ্যে চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, এতদিন সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক শুধু কয়েকটি খাতে বিদ্যমান ছিল। তবে এখন সময় এসেছে আমরা কীভাবে উভয় দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য বাণিজ্যকে সহজতর করতে পারি সে উপায়গুলো খুঁজে বের করার।

বাংলাদেশের প্রতি সৌদি আরবের সহায়তা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান খালিদ এ. আল ফালিহ।

বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সৌদি আরবের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

সৌদি আরব ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যাপক বাণিজ্য সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে বাংলাদেশ সরকার উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।

বাংলাদেশ থেকে জনবল নিয়োগের ক্ষেত্রে সৌদি আরবের আন্তরিকতার প্রশংসা করে সালমান এফ রহমান ভবিষ্যতেও বাংলাদেশ থেকে দক্ষ মানবসম্পদ নেওয়া অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।

এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের সম্পর্ক ইসলামিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে গঠিত। দীর্ঘদিন ধরে উভয় দেশ চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে।

গত ৫০ বছরে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বাংলাদেশের ধারাবাহিক উন্নয়ন এখন বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ২০২৩ সালে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬ দশমিক শূণ্য ৩ শতাংশ।

২০৪০ সাল নাগাদ বাংলাদেশ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত হবে উল্লেখ করে তিনি সৌদি ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ সম্ভাবনা কাজে লাগানোর আহ্বান জানান।

বিদেশি বিনিয়োগকারীাদের আকৃষ্ট করতে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকার দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উদার ও বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলেছে। এরমধ্যে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ প্রণোদনা ও সুবিধা রাখার পাশাপাশি ব্যবসা সহজীকরণ এবং ওয়ান স্টপ সার্ভিস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।

সৌদি বিনিয়োগকারীদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, সরকার সৌদি আরবের বিনিয়োগকারীদের জন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্প নগরে ৩০০ একর জমি বরাদ্দ রেখেছে। বরাদ্দকৃত জমিতে শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য সৌদি ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি বাংলাদেশের অন্যান্য ইপিজেডগুলোতেও বিনিয়োগের জন্য সৌদির ব্যবসায়ীদের আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, রূপকল্প ২০৩০-এর অংশ হিসেবে সৌদি আরবে এই মুহূর্তে দক্ষ শ্রমিকের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশের দক্ষ তরুণরা এই চাহিদা পূরণ করতে পারে। তিনি বাংলাদেশ থেকে দক্ষ তরুণ মানবসম্পদ নিতে সৌদি আরবের প্রতি আহ্বান জানান।

সৌদি আরবের বিনিয়োগবিষয়ক উপমন্ত্রী বদর আই. আলবদর বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে উন্মুখ সৌদি আরব। বাংলাদেশে আমরা বহুমুখী বিনিয়োগ করতে চাই। প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত কয়েকটি খাত দিয়ে বাণিজ্য শুরু করলেও ভবিষ্যতে সৌদি আরব আরও বেশি খাতে বাণিজ্যে আগ্রহী বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের প্রতি সৌদি আরবের চলমান সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে বলে জানান এই উপমন্ত্রী।

এর আগে, মঙ্গলবার রাতে (৫ ডিসেম্বর) একই হোটেলে সৌদি আরবের সফররত ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদলের সম্মানে এক নৈশভোজের আয়োজন করে এফবিসিসিআই।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে সৌদি-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান আয়াদ আল আমরি, বাংলাদেশে নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈশা ইউসেফ ঈশা আল-দুহাইলান, এফবিসিসিআই সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, মো. মুনির হোসেন, পরিচালকবৃন্দ এবং বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন।

ইএআর/এমকেআর/এএসএম