সর্বজনীন পেনশনের এক মাস
অর্ধেকের বেশি চাঁদা বেসরকারি চাকরিজীবীদের
সরকার সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর পর এক এক করে এক মাস পার হয়ে গেছে। এ এক মাসে প্রায় ১৩ হাজার মানুষ নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চাঁদা পরিশোধ করেছে। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ সাড়ে ৭ কোটি টাকার ওপরে। প্রথম সাসে যে চাঁদা জমা হয়েছে তার অর্ধেকের বেশি জমা দিয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা।
প্রাথমিকভাবে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতা— এ চার স্কিম নিয়ে সরকার সর্বজনীন পেনশন চালু করেছে। গত ১৭ আগস্ট প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। এর পরপরই আবেদন শুরু হয়ে যায়। উদ্বোধনের পর প্রথমদিনেই নিবন্ধন সম্পন্ন করে ১ হাজার ৭০০ জন চাঁদা পরিশোধ করেন। তারা প্রায় ৯০ লাখ টাকা চাঁদা জমা দেন। আর প্রথম এক সপ্তাহে চাঁদা পরিশোধ করেন ৮ হাজার ৫৫১ জন এবং তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৩৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
প্রথমদিকে সর্বজনীন পেনশনে মানুষের যে হারে সাড়া পাওয়া যায়, পরবর্তীতে তা কিছুটা কমে আসে। ফলে প্রথম মাস শেষে সর্বজনীন পেনশনে চাঁদা পরিশোধকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার ৯৯৯ জন। আর তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।
শুরুর মতো প্রথম মাসজুড়েই চাঁদা দেয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা। তাদের জন্য চালু করা প্রগতি স্কিমে নিবন্ধন করে প্রথম মাসে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৬ হাজার ২০৩ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৪ কোটি ৮ লাখ ৫৪ হাজার ৫০০ টাক। অর্থাৎ সর্বজনীন পেনশনে এখনো পর্যন্ত যে চাঁদা জমা পড়েছে তার ৫২ দশমিক ৮৯ শতাংশ জমা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা।
অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মরত বা স্বকর্মে নিয়োজিত ব্যক্তি যেমন- কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার ব্যক্তিদের জন্য চালু করা হয়েছে সুরক্ষা স্কিম। এ স্কিম গ্রহণ করে চাঁদা পরিশোধ করেছেন ৫ হাজার ৩৬ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ২ কোটি ৫৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা।
যার বর্তমান আয়সীমা বাৎসরিক সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা তাদের জন্য চালু হওয়া সমতা স্কিম। এ স্কিমে চাঁদা দিয়েছেন ১ হাজার ৩৬২ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ২২ লাখ ৭৯ হাজার টাকা। এ স্কিমের মাসিক চাঁদার হার ১ হাজার টাকা। এর মধ্যে স্কিম গ্রহণকারী চাঁদা দেবেন ৫০০ টাকা এবং বাকি ৫০০ টাকা দেবে সরকার।
আর প্রবাসীদের জন্য চালু করা প্রবাস স্কিমে চাঁদা দিয়েছেন ৩৯৮ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৮২ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
যোগাযোগ করা হলে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা জাগো নিউজকে বলেন, নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এখনো পর্যন্ত ১২ হাজার ৯৯৯ জন চাঁদা পরিশোধ করেছে। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।
জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগের কোনো সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা? জানতে চাইলে তিনি বলেন, জমা পড়া চাঁদার পরিমাণ খুব বেশি না। আমরা আর একটু অপেক্ষা করবো। টাকার অঙ্ক আর একটু বাড়লে আমরা বিনিয়োগে যাবো।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের ঊর্ধ্ব বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দিয়ে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে পেনশনারের নমিনি পেনশন স্কিম গ্রহণকারীর ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন।
চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা দেওয়ার আগেই মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ তা নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেবল তার জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করা যাবে। পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করে কর রেয়াত পাওয়ার যোগ্য হবেন এবং মাসিক পেনশন বাবদ পাওয়া অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে।
এমএএস/এমএএইচ/
সর্বশেষ - অর্থনীতি
- ১ লক্ষ্মীপুরে জুয়েলারি ব্যবসায়ী হত্যায় জড়িতদের শাস্তি দাবি বাজুসের
- ২ বিজিএমইএ প্রশাসক-তাইওয়ান টেক্সটাইল ফেডারেশন প্রতিনিধিদলের বৈঠক
- ৩ সর্বাধুনিক মেশিনে আটা-ময়দা-সুজি উৎপাদন শুরু করলো প্রাণ
- ৪ রোববার থেকে ঢাকার ১৩ স্থানে ন্যায্যমূল্যে ডিম বিক্রি
- ৫ পেঁয়াজ-মুরগি-সবজিতে কিছুটা স্বস্তি, সর্বোচ্চ দামে আলু