আমদানির খবরেও কমেনি কাঁচা মরিচের দাম, মসলায় অস্বস্তি
আমদানির ঘোষণার প্রভাব পড়েনি কাঁচা মরিচের দামে। বরং আমদানির ঘোষণার পরও কেজিতে দাম বেড়েছে দেড়শ থেকে দুইশ টাকা। কোরবানির ঈদকে কেন্দ্র করে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। গতকাল মঙ্গলবার প্রতিকেজি কাঁচা মরিচ ৩৪০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি হলেও আজ তা একলাফে ৬০ টাকা বেড়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি ও সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে কাঁচা মরিচের দাম।
এছাড়া ভালো মানের আদা প্রতিকেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়। তবে আমদানি করা পেঁয়াজ মিলছে ৫০ টাকার মধ্যেই। পেঁয়াজের দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও অস্বস্তি বিরাজ করছে গরম মসলার বাজারে।
বুধবার (২৮ জুন) সকালে মিরপুরের একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র। ঈদ ঘিরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন, জিরা, এলাচ, গোলমরিচ, লবঙ্গসহ বেশকিছু মসলাজাতীয় পণ্য।
আরও পড়ুন: কাঁচা মরিচ-টমেটো আমদানির অনুমতি
নিত্যপণ্যের চড়া দামে যখন নাজেহাল অবস্থা, তখন ঈদের দিনের রান্নার অনুষঙ্গ কেনাকাটায় অনেকটাই দিশেহারা সাধারণ মানুষ। বৃষ্টিতে ভিজে বাসার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যটি কিনলেও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ক্ষোভ ছিল তাদের চোখেমুখে।
মিরপুর মুসলিম বাজারে কথা হয় পল্লবীর বাসিন্দা শাহজাদার সঙ্গে। কাঁচা মরিচের দাম শুনে তিনি বলেন, কিছুই করার নেই, বাড়তি দামেই কিনে খেতে হবে। কৃষিপ্রধান দেশে ৪০০ টাকা কেজি কাঁচা মরিচের। এটা মেনে নেওয়া যায় না।
মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম আকাশচুম্বী হয়ে পড়লে ভারত থেকে আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। তবে এর পরও লাগাম টানা যাচ্ছে না কাঁচা মরিচের। উল্টো আমদানির অনুমতির পর দাম আরও বেড়ে গেছে।
আরও পড়ুন: কমেনি কাঁচামরিচের দাম
মুসলিম বাজারের ব্যবসায়ী ইদ্রিস বলেন, গতকাল সাড়ে তিনশ টাকা কেজি ছিল। আজ আমাদের কেনা বেশি দামে, ৪০০ টাকার নিচে বিক্রি করতে পারছি না। একপোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা বিক্রি করছি। তবে বেশি পরিমাণ নিলে কিছুটা কম নেওয়া হবে।
শাহজাহান নামের আরেক ব্যবসায়ী জানান, এবার প্রচণ্ড গরমে মরিচ গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কাঁচা মরিচের সংকট আছে। আবার বৃষ্টি ও ঈদের কারণে ঢাকায় গাড়ি আসতে বাড়তি খরচ যোগ হচ্ছে। সব মিলিয়ে মরিচের দাম বাড়ছে। তবে ভারতীয় মরিচ ঢুকবে আগামী সপ্তাহ থেকে, তখন দাম কিছুটা কমবে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আমদানি করা ইন্দোনেশিয়ার আদার দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়ে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গুটি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩৪০-৩৬০ টাকায়। এছাড়া দারুচিনি প্রতিকেজি ৬০০ টাকা, গোলমরিচ প্রতিকেজি এক হাজার টাকা, এলাচ মানভেদে ১০০ গ্রাম বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৮০ টাকায়। লং (লবঙ্গ) প্রতিকেজি এক হাজার ৬০০ টাকা, ধনিয়া প্রতিকেজি ২৫০ টাকা, তেজপাতা প্রতিকেজি ১২০ টাকা, দেশি শুকনা মরিচ প্রতি কেজি ৪০০- ৪৫০ টাকা এবং ২৫০ টাকায় প্রতিকেজি কাঁচা হলুদ বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গত ঈদের ৪৫০ টাকার জিরা এখন ১০০০ টাকা
এসবের পাশাপাশি জিরার দামও বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। প্রতিকেজি জিরা বর্তমানে এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
ক্রেতারা বলছেন, ঈদ সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়েছেন। তবে দাম বাড়ালেও খরচের খাতায় কাটছাঁট করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই বলে মনে করছেন তারা।
মিরপুর ১১ নম্বর এলাকার মসলা ব্যবসায়ী তরিকুল বলেন, জিরার দাম অস্বাভাবিক বেড়েছে। কয়েক মাস আগেও জিরা ছিল ৪০০ টাকা কেজি। এখন সেটা এক হাজার টাকা। একইভাবে গোলমরিচের দাম বেড়েছে। বেশিরভাগ মসলাই আমদানিনির্ভর। এখন আমদানি কম হচ্ছে। বাজারে পণ্য কম, এ কারণে হয়তো দাম বাড়ছে।
এসএম/কেএসআর/এএসএম