বাণিজ্যমন্ত্রী
পেঁয়াজের দাম না কমলে ভারত থেকে আমদানি করা হবে
দেশের বাজারে পেঁয়াজের দাম সহসা না কমলে কৃষি মন্ত্রণালয় ভারত থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানির অনুমতিপত্র কৃষি মন্ত্রণালয় দিয়ে থাকে। কৃষকরা যেন ন্যায্যমূল্য পায় সেজন্য পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে না। কৃষি মন্ত্রণালয় বাজার পর্যবেক্ষণ করছে। যদি দাম না কমে তাহলে তারা ভারত থেকে আমদানির সিদ্ধান্ত নেবে।
আরও পড়ুন: এক মাসের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ
মঙ্গলবার (১৬ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৪৩তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ‘শেখ হাসিনার ভাবনায় স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, বাজারে তেল ও চিনির দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও কিছু অসদুপায় অবলম্বনকারী ব্যবসায়ী বেশি দামে বিক্রি করছে। বাজার মনিটরিং এবং এসব ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শিগগির পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হবে: কৃষিসচিব
প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের এ আলোচনায় বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি চিন্তা-চেতনা এবং গৃহীত সব সিদ্ধান্তই স্মার্ট। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে দেশের সব নাগরিকের চিন্তা-ভাবনাও স্মার্ট হতে হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা করোনার মহাসংকটকালীন টিকা কেনার জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। খাদ্য সংকট এড়াতে এক ইঞ্চি জমিও যেন পতিত না থাকে সেজন্য ফসল উৎপাদনের আহ্বান জানিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশের ঘোষণা ও স্মার্ট বাংলাদেশ নির্মাণসহ যেসব নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন বা এ লক্ষ্যে যা করছেন এবং সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন তা একজন স্মার্ট প্রধানমন্ত্রীর পক্ষেই সম্ভব। শেখ হাসিনার মত একজন স্মার্ট প্রধানমন্ত্রী পাওয়ায় আমরা সত্যিই ভাগ্যবান। যার ভিত্তি রচনা করে গেছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রকৃতপক্ষে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকেই বুকে লালন ও ধারণ করেন।
আরও পড়ুন>>> পেঁয়াজ উৎপাদনে বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয়
মন্ত্রী আরও বলেন, শেখ হাসিনা একবার উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়ে বলেছিলেন আমাদের দেশের সীমান্তবর্তী ভারতীয় ভূমিতে যদি চা চাষ হয় তাহলে আমাদের ভূমিতে হবে না কেন! এরপর তার নির্দেশে পঞ্চগড়সহ সীমান্তবর্তী এলাকায় চা চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়। বর্তমানে উত্তরবঙ্গে যে চা উৎপাদন হচ্ছে তা দেশের ১৫ শতাংশ চাহিদা পূরণ করছে। দিন দিন তা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এটা শেখ হাসিনার স্মার্টনেস এবং সুদূরপ্রসারী চিন্তার ফসল।
তিনি বলেন, রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর রপ্তানি নিয়ে যখন আমরা সবাই দিশেহারা তখন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এতো ভেঙে পড়ার কিছু নেই। এরপর তার নেওয়া পদক্ষেপের কারণে রপ্তানির ওপর কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে দ্বিতীয়। তার চিন্তা-চেতনার ফসল হিসেবে বিশ্বের ১০টি গ্রিন ফ্যাক্টরির ৭টি এবং শীর্ষ ১০০টি সবুজ শিল্প প্রকল্পের ৪৮টি এখন বাংলাদেশে।
আরও পড়ুন: গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়াতে ১৬ কোটি টাকার প্রণোদনা
এ প্রসঙ্গে টিপু মুনশি জানান, বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর হবে। এরপর ব্যবসা-বাণিজ্যে সুবিধা পেলেও কিছু চ্যালেঞ্জও আসবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রী বাণিজ্য মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় এবং প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ প্রগতিশীল কলামিস্ট ফোরামের সভাপতি ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক উইলিয়াম প্রলয় সমদ্দার (বাপ্পি) প্রমুখ।
আইএইচআর/এমকেআর/এমএস