ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ঈদের ছোঁয়া লাগেনি গুলশানের পিংক সিটিতে

আবদুল্লাহ আল মিরাজ | প্রকাশিত: ০৫:৫১ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২৩

জমজমাট হয়ে উঠছে রাজধানীর ঈদবাজারগুলো। ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে বিভিন্ন মার্কেট ও শপিংমলে বাড়ছে ক্রেতাদের ভিড়। বাড়ছে বেচাকেনাও। তবে এর বিপরীত চিত্র দেখা গেছে ঢাকার অভিজাত এলাকা গুলশানের পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সে। এই শপিংমলটি দেশি-বিদেশি জামা-কাপড় ও প্রসাধনীর জন্য বিখ্যাত হলেও ঈদ ঘিরে এখনো ক্রেতাদের তেমন সাড়া মেলেনি। মার্কেটটিতে বছরজুড়েই সাধারণ ক্রেতার তুলনায় বিত্তশালী বা আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান ক্রেতাদের উপস্থিতি বেশি চোখে পড়ে। মার্কেটের দোকান মালিক ও বিক্রেতারা জানিয়েছেন, এ বছর ঈদুল ফিতর সামনে রেখে এখনো তাদের মূল বেচাবিক্রি শুরু হয়নি। এখনো ক্রেতার চাপ বাড়েনি। তবে তারা আশা করছেন, ঈদ ঘিরে সামনের দিনগুলোতে ভালো বেচাকেনা হবে।

সরেজমিনে সোমবার (১০ এপ্রিল) গুলশান ২ নম্বরে গোলচত্বর এলাকায় পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্স ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের তেমন চাপ নেই। শাড়ি, পার্টি ড্রেসের দোকানগুলো প্রায় ফাঁকা। টুকটাক ক্রেতার দেখা মেলে থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে। ঈদের বেচাবিক্রি কম হওয়ার কারণ হিসেবে সেখানকার ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মার্কেটটিতে জামা-কাপড়সহ সব ধরনের পণ্যের দাম অনেক বেশি। যা সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। এছাড়া বিত্তবানদের অনেকে আগেভাগেই কেনাকাটা করে রাখেন। অনেকে আবার চাঁদ রাতে কেনাকাটা করতে পছন্দ করেন।

আরও পড়ুন: সাশ্রয়ী দামে পছন্দের কেনাকাটায় রাজধানী সুপার মার্কেট

বিক্রেতারা জানান, অন্যান্য ঈদের তুলনায় এ বছর বেচাকেনা অনেক কম। করোনার বিধিনিষেধ না থাকায় তারা এবার ভালো ব্যবসার আশা করেছিলেন। তবে এখনো আশানুরূপ বিক্রি নেই।

ড্রেস ইন ঢাকা নামের দোকানের স্বত্বাধিকারী গিয়াস উদ্দিন জাগো নিউজকে জানান, এই মার্কেটে নিউমার্কেট বা অন্যান্য মার্কেটগুলোর মত ভিড় থাকে না। ঈদের আমেজ আছে। তবে গতকাল (রোববার) সাপ্তাহিক বন্ধের দিন থাকায় মার্কেট খোলা থাকলেও অনেকে আসেননি। আজকেও (সোমবার) ক্রেতা উপস্থিতি তুলনামূলক কম।

মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় পার্টি ড্রেসের দোকান সানাফি। দোকানটির এক কর্মচারী জানান, ঈদে সাধারণত পার্টি ড্রেস খুবই স্বল্প পরিসরে বিক্রি হচ্ছে। বেচাকেনা অন্যান্য সাধারণ সময়ের মতোই। এবার ঈদ ঘিরে ক্রেতার চাপ কম।

মিতুয়া ফ্যাশনের মালিক মো. সোহেল জানান, পার্টি ড্রেস বিক্রি গতবারের তুলনায় অনেক কমে গেছে। পোশাকের দামও চড়া। আগে যেসব জামা ১০ থেকে ১২ হাজারে কেনা যেতো, সেগুলো এখন ১৬-১৭ হাজার টাকা। বিত্তবানদের অনেকে সরাসরি ভারত থেকে কেনাকাটা করছেন। আমাদের ডলারের বিনিময়ে ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে হয়। বাজারে ডলারের দাম বেশি হওয়ায় পণ্যের দামও বেড়েছে।

আরও পড়ুন: মানুষ খাবে নাকি নতুন কাপড় কিনবে, প্রশ্ন ব্যবসায়ীর

শপিংমলটিতে শাড়ির দোকানগুলোতেও তেমন ভিড় চোখে পড়েনি। ডালিমস নামের শাড়ির দোকানের মালিক মো. মাহফুজ জানান, এবার আশানুরূপ বেচাকেনা তেমন হচ্ছে না। ক্রেতাদের অনেকে ঈদের শপিং করতে ভারতে চলে যান। এবার শাড়ি কম বিক্রি হচ্ছে। মানুষ বেশি ঝুকছে থ্রি-পিসের দিকে।

বিবাহ বাড়ি দোকানের বিক্রেতা নিজাম জানান, শাড়ির বিক্রি অনেক কমেছে। গত বছর ঈদে ক্রেতাদের অনেক চাপ ছিল। এবার বেচাবিক্রি অনেক কম।

সরমিস কালেকশন নামে থ্রি-পিসের দোকানের বিক্রেতা মামুন জানান, সব মিলিয়ে এবার বিক্রি অনেক কম। আগে রোজার সময় অনেক ভালো বিক্রি হতো। করোনাকালেও এরচেয়ে ভালো বিক্রি ছিল। তবে অন্যান্য কাপড়ের তুলনায় থ্রি-পিস বিক্রি বেশি কিছুটা হচ্ছে। এর মাঝে ইন্ডিয়ান ও পাকিস্তানি লনের জামা ভালো বিক্রি হচ্ছে।

মার্কেটে কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতাদের কেউ কেউ জানিয়েছেন, এবার সব ধরনের পোশাকের দাম বেড়েছে। ফলে অনেকে বাজেটের মধ্যে পছন্দের পোশাক কিনতে পারছেন না।

আরও পড়ুন: শপিংমল ক্রেতাশূন্য, জমজমাট ফুটপাত

সাবা হায়দার নামের এক ক্রেতা জাগো নিউজকে জানান, এখন সবকিছুরই দাম অনেক বেশি। জামা-কাপড়েরও দাম বেড়েছে। বিদেশি পণ্য ভালো পাওয়া যায় বলে এই মার্কেটে আসি। কিন্তু যে হারে দাম বেড়েছে পোশাকের মান সে অনুযায়ী ভালো পাচ্ছি না।

পিংক সিটি শপিং কমপ্লেক্সে পরিবার নিয়ে কেনাকাটা করতে আসেন সাইদুল আলম। তিনি জানান, দেশে বিদেশি পণ্যের দাম অনেক বেড়ে গেছে। সরাসরি ভারত থেকে কেনাকাটা করলে দাম তুলনামূলক কম পড়ে।

এএএম/এমকেআর/এএসএম