সারাবছর ফল উৎপাদনের প্রকল্প একনেকে উঠছে আজ
সারাবছর দেশে কাঠাল উৎপাদন ধরে রাখা, আনারস ও আঠাবিহীন কাঠালের সম্প্রসারণে আড়াইহাজার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করাসহ সারাদেশে চারটি নতুন হার্টিকালচার সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব রেখে বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের ৩য় সংশোধনী জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) উঠছে মঙ্গলবার (৪ মার্চ)।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৫ সালে ‘বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প’ শুরু করে সরকার। ২০২০ সালের ১০ মার্চ প্রকল্পটির ২য় সংশোধনী অনুমোদন পায়। এখন প্রকল্পটির ৩য় সংশোধনীর পরিকল্পনা চলছে। এরই মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি ও প্রকল্প স্ট্যায়ারিং কমিটি ৩য় সংশেধানী অনুমোদন করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।
এর আগে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির সভায় (পিইসি) তা অনুমোদন পাওয়ায় চূড়ান্ত অনুমোনের জন্য একনেকে যাচ্ছে। প্রকল্পটির ২য় সংশোধনী পর্যন্ত ব্যয় ছিল ৪৬০ কোটি ২৮ লাখ টাকা। ৩য় সংশোধনীতে ২১১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। তৃতীয় সংশোধনী পর্যন্ত প্রকল্পের চূড়ান্ত ব্যয় ধরা হয়েছে ৬৭১ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
বছরব্যাপী ফল উৎপাদনের মাধ্যমে পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক ড. মো. মেহেদী মাসুদ বলেন বলেন, প্রকল্পের ৩য় সংশোধনীতে ২১১ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এর মধ্যে ৪২ কোটি টাকাই ভূমি অধিগ্রহণে ব্যয় হবে। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় আমরা ঐতিহাসিক মুজিবনগরের আম্রকানন পরিচর্যার উদ্যোগ নেবো। ড্রাগন ও পেয়ারার মতো সারা বছর যাতে কাঠাল উৎপাদন হয় সে প্রচেষ্টা থাকবে। পাশাপাশি উন্নত মানের এমডি-২ আনারস ও আঠাবিহীন কাঠালের সম্প্রসারণে আড়াইহাজার প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হবে। এছাড়া আরও চারটি নতুন হার্টিকালচার সেন্টারও স্থাপন করা হবে তৃতীয় সংশোধনীতে।
প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহাসিক মুজিবনগরে প্রায় ৩৬ একর এলাকা জুড়ে আম্রকাননে ছোট বড় প্রায় ১১৭০টি আম গাছ রয়েছে। এসব আম গাছগুলো বর্তমানে বিভিন্ন রোগ বালাইয়ে আক্রান্ত এবং পরগাছার কারণে স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পের প্রস্তাবিত ৩য় সংশোধনীতে ঐতিহাসিক মুজিবনগর আম্রকাননের পুরনো আম গাছগুলোকে রেজুভেনাশন পদ্ধতির মাধ্যমে দৃষ্টি নন্দনসহ ফল উৎপাদন বৃদ্ধি করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রকল্প প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, এমডি-২ আনারস অধিক ভিটামিন সি সমৃদ্ধ, পুষ্টিকর ও সুস্থ, হিমাগার ছাড়াই অধিক সময়কাল সংরক্ষণযোগ্য ও আনারসের চোখ বর্হিমুখী হওয়ায় খাবারযোগ্য অংশের পরিমাণ বেশি থাকায় অন্যান্য জাতের তুলনায় এ জাতটি অধিক মানসম্পন্ন ও রফতানিযোগ্য। তাই আনারসের এ জাতটি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত সংশোধনীতে ২ হাজার ৫০০ টি প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এছাড়াও সারাবছর কাঠাল প্রাপ্তির লক্ষ্যে আঠাবিহীন বারোমাসি কাঁঠালের জাতটি সম্প্রসারণের জন্য সংশোধিত ডিপিপিতে মিশ্র ফল প্রদর্শনীর আওতায় সংযোজন করা হয়েছে।
প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে, দেশের প্রতিটি জেলায় কমপক্ষে একটি করে হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপনের লক্ষ্যে প্রস্তাবিত ৩য় সংশোধনীতে কুষ্টিয়া, ঝিকরগাছা-যশোর, মতলব চাঁদপুর ও পলাশবাড়ি/সাদুল্লাপুর গাইবান্ধায় হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপনের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এনএইচ/এমআইএইচএস