সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তার ব্র্যান্ড
সাশ্রয়ী মূল্যে সেরা ওয়েস্টার্ন পোশাক দেবে ‘ঢেউ’
ওয়েস্টার্ন পোশাক নিয়ে যাত্রা শুরু করেছে জনপ্রিয় লাইফস্টাইল ব্র্যান্ড ‘সারা’র সাব-ব্র্যান্ড ‘ঢেউ’। নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের জন্য ‘ঢেউ’ একটি আকর্ষণীয় নতুন ওয়েস্টার্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ড। সারা লাইফস্টাইল লিমিটেড এ ব্র্যান্ডকে সংযোজনের জন্য নতুন করে সাজিয়েছে তাদের সব আউটলেট। সারার অন্য পোশাক থেকে ঢেউয়ের ভিন্নতা হচ্ছে এর কাস্টমাইজড ফেব্রিক ও প্যাটার্ন। ঢেউয়ের পোশাকগুলো সিল্ক, কটন, নিট ও ডেনিম কাপড়ের সমন্বয়ে তৈরি। সাধ্যের মধ্যে সেরা ওয়েস্টার্ন পোশাক দিতে যাত্রা শুরু করেছে ‘ঢেউ’।
সারা লাইফস্টাইলের সাব-ব্র্যান্ড ‘ঢেউ’ নিয়ে জাগো নিউজের সঙ্গে কথা বলেন দেশের ফ্যাশন হাউজগুলোর পরিচালকদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ উদ্যোক্তা সারাফ সাইয়ারা। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নিজস্ব প্রতিবেদক ইসমাইল হোসাইন রাসেল।
জাগো নিউজ: ‘ঢেউ’ নতুন প্রজন্মের তরুণ-তরুণীদের জন্য একটি আকর্ষণীয় নতুন ওয়েস্টার্ন ফ্যাশন ব্র্যান্ড, শুরুর গল্পটা শুনতে চাই।
সারাফ সাইয়ারা: ওয়েস্টার্ন পোশাক এখন বাংলাদেশে খুবই পপুলার। বিশেষ করে টিনএজাররা ওয়েস্টার্ন পোশাকই পরে। আমরা আগে থেকেই সারায় এমন প্রোডাক্ট বিক্রি করতাম। কিন্তু আমরা কীভাবে আরও বড় করতে পারি এবং কীভাবে বিষয়টি স্পেশালাইজেশন করতে পারি সেটি ধরেই মূলত ‘ঢেউ’ শুরু করি। আমাদের মূল আইডিয়া ছিল ওয়েস্টার্ন পোশাক যেটা বেস্ট কোয়ালিটির কিন্তু সাশ্রয়ী মূল্যে হবে। কয়েক মাস ধরে আমরা এটা নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছি, বিদেশে কেমন স্টাইলের পোশাক পরে সেগুলোর আইডিয়া নিয়েছি, সে ধরনের ডিজাইন বাংলাদেশে বিক্রি হবে কি না? কীভাবে সে বিষয়গুলো আনতে পারি যে ওয়েস্টার্ন ফিলিংসটাও থাকবে কিন্তু মানুষ আরামদায়কভাবে পরতে পারে।
আরও পড়ুন>> দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বিশ্ব বাজারে নজর সারা লাইফস্টাইলের
এছাড়াও কী কী ফেব্রিক্স ব্যবহার করতে পারি, কীভাবে ট্রাডিশনাল ফেব্রিক্স থেকে এ পোশাকগুলো একটু ভিন্ন হতে পারে তা নিয়ে কাজ করেছি। স্বাভাবিকভাবেই এ ধরনের পোশাক একটু চকচকে হবে। এ ধরনের চিন্তা করে আমরা অনেকগুলো ডিজাইন করেছি। আর অনেকগুলো নাম আমাদের আইডিয়া ছিল। পরে আমরা ফাইনালি ‘ঢেউ’ নামটি সিলেক্ট করেছি। এর ইংরেজি মিনিং হচ্ছে ওয়েভ। আমাদের এই ব্র্যান্ডের পোশাক ঢেউয়ের মতোই বোল্ড, সাহসী ও শক্তিশালী। আমরা পুরো বিশ্বের সঙ্গে কানেকটেড। সেজন্য আমরা এ নামটি সিলেক্ট করেছি।
জাগো নিউজ: এত ব্র্যান্ডের ভিড়ে কেন ক্রেতারা ঢেউ বেছে নেবেন?
সারাফ সাইয়ারা: আমাদের মূল বিষয় হলো খুব সাশ্রয়ী মূল্যে পোশাক বিক্রি করছি। আমরা চাই আমরা যেসব ওয়েস্টার্ন পোশাক বানাচ্ছি সেটা যেন সবাই পরতে পারে। সবাই যেন ফ্যাশনেবল পোশাক যেটি চায় সেটি সহজেই পায়। অন্য ফ্যাশন হাউজে দাম একটু বেশি হতে পারে, সেদিক থেকে আমরা একেবারেই ভিন্ন। আমরা সাধ্যের মধ্যে সেরা নতুন ডিজাইনের পোশাকগুলো গ্রাহকদের দেবো।
আরও পড়ুন>> ঈদ কেনাকাটায় ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পেয়েছে ‘সারা’
আমরা চাই সবাই যেন পরতে পারে। ফ্যাশন হচ্ছে এমন একটা জিনিস, যা দিয়ে সবাই নিজেকে এক্সপ্রেস করতে পারে। বেস্ট ফেব্রিক্সে, বেস্ট স্টাইলে, সবচেয়ে ট্রেন্ডি ফ্যাশনেবল পোশাক এখানে পাওয়া যাবে। গ্রাহকরা যেন খুশি থাকে সেদিকে নজর দেওয়া হয়েছে। সবাই যেন পরতে পারে সেজন্য কম দামে আমরা সেরা পোশাকটি দিচ্ছি।
জাগো নিউজ: আপনার বাবা-মা দুজনই দেশের পোশাকখাতের সফল ব্যবসায়ী, পরিবারের এ সফলতার ধারাবাহিকতায় কি এই পেশায় আসা?
সারাফ সাইয়ারা: ছোটবেলা থেকেই সেন্স অব লিডারশিপ, কোনো কিছুতে কন্ট্রোল নেওয়া সেটি ছিল। স্কুলে একটি গ্রুপ প্রজেক্ট থাকলে সেখানে আমার গ্রুপ লিডার বা টিমের সঙ্গে কাজ করার ইচ্ছাটা সব সময়ই ছিল। সেজন্য এ ব্যবসায় আসা। আমার আগে থেকেই ইচ্ছা ছিল, বা-মা করছে বলেই আমি করছি এমনটা নয়। কয়েক বছর ধরে বাবা কীভাবে কাজ করে সেটা আমি দেখতাম, কীভাবে ব্যবসা করতে হয়, কীভাবে ব্যবসা বাড়ছে- সেসব দেখার পর আমি মনে করলাম এখন আমি একটা পজিশনে আছি নিজে কিছু করার জন্য।
জাগো নিউজ: আপনার শিক্ষাজীবন নিয়ে জানতে চাই?
আরও পড়ুন>> ‘সারা’র পোশাকের দাম থাকবে সব শ্রেণির ক্রেতার নাগালে
সারাফ সাইয়ারা: আমি এখনো হাইস্কুলে পড়ছি। এরপর আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যবসা নিয়ে পড়বো। সেখানে আমি ব্যবসার বিষয়ে আরও শিখবো, আমার জ্ঞান আরও বাড়িয়ে মাস্টার্স করার পর আমি ব্যবসায় পুরোদমে মনোনিবেশ করবো। এখন আমি অনেক কিছু শিখছি। স্কুলেও শিখছি, আবার প্র্যাকটিকালি শিখছি। বাবা-মা তো আমাকে পরামর্শ দিচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষে আমি ব্যবসা কন্টিনিউ করবো।
জাগো নিউজ: একজন তরুণ ব্যবসায়ী হিসেবে কোন জায়গাগুলোতে সবচেয়ে বেশি ফোকাস করছেন?
সারাফ সাইয়ারা: আমার ইচ্ছা মানুষ যাতে খুশি থাকে। নারী ব্যবসায়ী তো সব জায়গায় আছে। কিন্তু দেশের জন্য ভালো একটা ইম্প্যাক্ট রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। আমি কীভাবে নিজেও গ্রো করতে থাকবো এবং সবাই গ্রো করতে থাকবে, সবাই খুশি থাকবে, কীভাবে একটা পজিটিভ এনভায়রনমেন্টে থাকতে পারি সেটাই আমার ব্যবসার প্রধান লক্ষ্য। ‘ঢেউ’ একটা ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি, মানুষ এখান থেকে ভালো একটা ডিজাইন পাবে, কম দামে সবাই কিনতে পারবে। সেখান থেকে ঈদ, জন্মদিনে পছন্দের একটা জামা পেয়ে যে খুশি হয় সেই বিষয়টিই আমার মধ্যে কাজ করে। আমি সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করছি যে আমার ভালো কাজ মানুষের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
জাগো নিউজ: ‘ঢেউ’ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
সারাফ সাইয়ারা: আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা হলো যেখানেই যাই সেখানেই ঢেউ-এর শপ থাকবে। সবাই ‘ঢেউ’ নিয়ে কথা বলবে। আমাদের স্টোর আরও বাড়াবো। বাংলাদেশের সব জায়গায় শপ রাখার চেষ্টা করবো। আমরা কীভাবে আরও ভ্যারাইটি কাপড় আনতে পারি সেটা নিয়ে কাজ করছি। আমাদের তো নতুন যাত্রা শুরু হলো, আমরা আরও দেখবো মানুষ কী চাচ্ছে। তারা যেভাবে চায় সেই কোয়ালিটি যেন দিতে পারি। আরও অ্যাফোর্টেবল পোশাক যেন দিতে পারি সেদিকে আমরা নজর রাখবো।
জাগো নিউজ: গত ৯ মার্চ থেকে ঢেউ যাত্রা শুরু করেছে, ক্রেতাদের কেমন রেসপন্স পেয়েছেন?
সারাফ সাইয়ারা: আমরা পরিপূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে বাজারে এসেছি। আমরা অনেক ভালো করছি। আমাদের যে টার্গেট ছিল সেটা অতিক্রম করতে পেরেছি। আমরা খুবই আশাবাদী যে বিক্রি অনেক ভালো হবে। আমাদের শুরুটাই এত স্ট্রং ছিল সেটাই আমরা কন্টিনিউ করতে চাই। ঈদ সামনে রেখে সেভাবেই আমরা শুরু করেছি মানুষ যাতে ‘ঢেউ’ সম্পর্কে জানতে পারে এবং কিনতে পারে।
আইএইচআর/এএসএ/জেআইএম