বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো
চাল কিনতেই দরিদ্র মানুষের ব্যয় মোট আয়ের এক-তৃতীয়াংশ
আমাদের দেশের মানুষের প্রধান খাদ্যপণ্য চাল। শ্রেণিভেদে আমরা প্রতিদিন গড়ে ৩৬৬ থেকে ৪৭০ গ্রাম চাল ভোগ করি। দরিদ্র বা হতদরিদ্র শ্রেণির মানুষ চালের ওপর বেশি নির্ভরশীল। তাদের ভোগের পরিমাণও বেশি। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য আরও বলছে, দরিদ্র মানুষের মোট আয়ের এক-তৃতীয়াংশ ব্যয় হয় শুধু চাল কিনতে। গত ছয় বছরে শুধু নাজিরশাইল চালে কেজিতে বেড়েছে ১৮ টাকা। ৫-৭ টাকা বেড়েছে পাইজাম ও ইরি-বোরোতে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকে (সিপিআই) বলা হয়েছে ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে প্রতি কেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট ৬৪ টাকা ৪৮ পয়সায় বিক্রি হয়েছিল, বর্তমানে এটা বেড়ে ৮২ টাকা ৩৪ পয়সা হয়েছে। গত ছয় বছরের ব্যবধানে এক কেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট চালেই বেড়েছে ১৮ টাকা।
একই সময় প্রতি কেজি পাইজাম ৬০ টাকা ৭৬ পয়সায় বিক্রি হলেও বর্তমানে ৬৪ টাকা ৪১ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে, ফলে এই চালেও কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকা। ছয় বছর আগে প্রতি কেজি ইরি ও বোরো চাল ৫০ টাকা ১৫ পয়সায় বিক্রি হলেও এখন ৫৭ টাকা ২৩ পয়সায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি ইরি ও বোরো চালেও বেড়েছে ৭ টাকা ০৮ পয়সা। দরিদ্র মানুষের মোট আয়ের এক-তৃতীয়াংশ ব্যয় হয় চাল কেনায়। চালের দাম বাড়লে নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর বেশি চাপ বাড়ে।
বিবিএস’র সবশেষ হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (হায়েস) অনুযায়ী, জাতীয় পর্যায়ে একটি পরিবারের মাসিক মোট আয়ের ৪৭ দশমিক ৭০ শতাংশ খরচ হয় খাদ্যে। দরিদ্র ও অতি দরিদ্র পরিবারগুলোর ক্ষেত্রে এটা মাসিক মোট আয়ের প্রায় ৭০ শতাংশ। আবার তাদের চাল ভোগের পরিমাণও অন্যদের চেয়ে বেশি। যখন দেশে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর চালের মাথাপিছু দৈনিক ভোগ ৪৭০ গ্রাম, তখন অন্যদের ক্ষেত্রে তা ৩৬৬ গ্রাম। প্রধান এ খাদ্যপণ্যটির মূল্যস্ফীতিতে তারা ভোগেন সবচেয়ে বেশি।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, খাদ্য-মূল্যস্ফীতি বাড়লে ৭৩ দশমিক ৮ শতাংশ হতদরিদ্র পরিবারই তখন চালের ভোগ কমিয়ে দেয়। দরিদ্র পরিবারের বেলায় এ হার ৬৬ শতাংশ। তাই মোটা চালের দাম উচ্চহারে বাড়লে তাদের খাদ্যনিরাপত্তা চরম হুমকির মুখে পড়ে।
বিবিএস জানায়, জাতীয় গড় মূল্যস্ফীতিতে ভোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। তবে খাদ্যপণ্যের, বিশেষ করে প্রধান খাদ্যপণ্য চালের মূল্যস্ফীতি দেশের স্বল্প ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে। চালের মূল্যস্ফীতিকে তারা ভয় পান। দেশের কমবেশি ৯০ শতাংশ মানুষের প্রধান খাদ্য চাল থেকে তৈরি ভাত। জীবনধারণের সবচেয়ে প্রয়োজনীয় এ খাদ্যপণ্যটির দাম গত প্রায় দু’দশকে তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে।
চালের দাম বাড়লে সবার কষ্ট হয় জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, চালের দাম বাড়লে সবার কষ্ট হয়, এটা স্বীকার করতে হবে। সরকার নানাভাবে চেষ্টা করছে নিত্যপণ্যের দাম কমানোর জন্য। তবে মূল্যস্ফীতি কিন্তু আমাদের অভ্যন্তরীণ সমস্যা নয়, এটা বৈশ্বিক সমস্যা। মানুষ যাতে কম দামে খাদ্যপণ্য পায় সেজন্য উৎপাদনে বেশি নজর দেওয়া হচ্ছে। আমরা উৎপাদন বাড়ালে এটা কমে আসবে। এজন্য দেশের এক ইঞ্চি জমি ফেলে রাখবো না। জমিতে নানা ধরনের ফসল ফলাবো। এজন্য সরকার কৃষকদের সব ধরনের সুবিধা দিচ্ছে।’
এমওএস/এএসএ/জিকেএস
টাইমলাইন
- ০২:১৪ পিএম, ১০ নভেম্বর ২০২২ ফরিদপুরে ‘ব্ল্যাক রাইস’ চাষে রন্টির সাফল্য
- ০৭:৫৯ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ চাল কিনতেই দরিদ্র মানুষের ব্যয় মোট আয়ের এক-তৃতীয়াংশ
- ০৬:৫০ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ গাইবান্ধায় আমনের ফলনে খুশি কৃষক, দাম নিয়ে শঙ্কা
- ০৬:৪৭ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ আমদানি কমিয়ে উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ বিশেষজ্ঞদের
- ০৬:২৯ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ চালের ‘সন্তোষজনক’ মজুতের সময় দামও সর্বোচ্চ
- ০৬:১৫ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ লবণসহিষ্ণু ট্রান্সজেনিক ধান উৎপাদনে সফল শাবিপ্রবির গবেষকরা
- ০৫:৫৪ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ ময়মনসিংহে উৎপাদিত খাদ্যশস্যে চলবে দুই বছরের বেশি, ঘাটতি গমে
- ০৪:৩৬ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ চালের দামে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব কতটা যৌক্তিক?
- ০২:১০ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ চাল-নিত্যপণ্যের দামে দিশেহারা নূর মোহাম্মদ
- ১২:৩৩ পিএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ ডলারের দাম বাড়ায় চাল আমদানিতে অনীহা ব্যবসায়ীদের
- ১০:৪৪ এএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ রংপুরে ধান সংগ্রহ অভিযান শতভাগ সফল না হলেও মজুত পর্যাপ্ত
- ০৮:৩১ এএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ বাজারে মোটা চালের ‘কৃত্রিম’ সংকট, অসহায় নিম্নবিত্ত মানুষ
- ০৮:২২ এএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ সরকারিভাবে আনা হচ্ছে ৫ লাখ টন চাল, বেসরকারিতে অনুমোদন ১৪ লাখ টন
- ০৮:১৭ এএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ রাজশাহী অঞ্চলে চাহিদার দ্বিগুণ ধান-গম উৎপাদন
- ০৮:১২ এএম, ০৯ নভেম্বর ২০২২ চাহিদার চেয়ে উৎপাদন বেশি, তবু চালের সংকট!