পোশাক কারখানায় মায়েদের সহায়তায় কাজ করছে ইউনিসেফ
ইউনিসেফ পরিচালিত ‘মাদারস অ্যাট ওয়ার্ক’ উদ্যোগ পোশাক কারখানায় শিশু যত্নের সুবিধা, বেতনসহ মাতৃত্বকালীন ছুটি, নগদ সুবিধা, স্বাস্থ্যসেবা, চাকরির সুরক্ষা এবং কর্মজীবী মা ও গর্ভবতীদের জন্য নিরাপদ কাজের পরিবেশ দিতে কারখানাগুলোকে সহায়তা করবে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে ইউনিসেফের সঙ্গে কাজ করবে বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিকেএমইএ)।
তথ্য-প্রমাণ বলে, বেতনসহ ছুটি, মায়ের দুধ খাওয়ানো ও প্রসবপূর্ব সেবা নিশ্চিত হলে তা শিশুর সুস্বাস্থ্য, সুখী পরিবার গঠনে সহায়তা করে। পাশাপাশি লিঙ্গ সমতা, কর্মক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখে।
বিদেশে রপ্তানির দিক থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম। দেশের মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) খাতটির অবদান ১১ শতাংশ। দেশে পোশাক কারখানায় কাজ করছেন প্রায় ৪০ লাখ মানুষ, যাদের অর্ধেকেরও বেশি প্রজনন বয়সী নারী। তবে ইউনিসেফের ২০১৮ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, পোশাক কারখানায় শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য কাজের বিরতি ও ব্যক্তিগত জায়গার ঘাটতি রয়েছে। অথচ বিষয়টি শিশুর স্বাস্থ্য ও বিকাশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীদের জন্য লক্ষ্যযুক্ত সহায়তা দেওয়া এবং নারীরা যাতে কর্মক্ষেত্রে যোগদান করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি তাদের সন্তানদের যত্ন নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা নিশ্চিত করতে হবে। এ বিষয়গুলো নারীদের এবং তাদের শিশুদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি এমন একটি বিনিয়োগ যা থেকে সবাই উপকৃত হবে।
ইউনিসেফের একটি পাইলট প্রকল্প থেকে জানা যায়, এই অংশীদারত্ব এক লাখ ৩০ হাজার নারীর কাজের অবস্থার উন্নতি ঘটাবে। একই সঙ্গে আট হাজার শিশুর জন্য টেকসই উপায়ে উন্নত পুষ্টি সেবা ও ডে-কেয়ার সুবিধা দেবে। ৮০টি কারখানায় শুরু হওয়া এই উদ্যোগ ধীরে ধীরে দেশের চার হাজার কারখানায় বাস্তবায়ন করা হবে।
এ বিষয়ে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, পোশাক কারখানায় নিয়জিত মা এবং গর্ভবতী নারীদের জন্য কর্মক্ষেত্র নিরাপদ রাখা অপরিহার্য। যাতে তাদের সুস্থতা রক্ষা করা যায় এবং শিশুদের সুস্থ বিকাশে সহায়তা করার জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি নিশ্চিত হয়।
বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান বলেন, আমাদের কারখানাগুলোতে মায়েদের জন্য, শ্রমিকদের জন্য, তাদের সন্তান যারা দেশের ভবিষ্যৎ তাদের জন্য এবং সর্বোপরি ব্যবসার বিকাশের জন্য আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা নিট পোশাকখাতে কাজের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আইএইচআর/কেএসআর/জিকেএস