দুদিন পর উত্থানে ফিরলো শেয়ারবাজার
সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবস দরপতন হওয়ার পর মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) দেশের শেয়ারবাজারে আবার ঊর্ধ্বমুখীতার দেখা মিলেছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকটি মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। তবে, দুই বাজারেই দাম বাড়ার তুলনায় দাম কামার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান।
এর আগে গত সপ্তাহের পাঁচ কার্যদিবস এবং তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস মূল্যসূচক বাড়ে। এতে টানা ছয় কার্যদিবসের উত্থানে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়িয়ে যায়।
টানা উত্থানের প্রভাবে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক সাড়ে ছয় হাজার পয়েন্ট ছাড়ানোর পর চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার দরপতন হয় শেয়ারবাজারে। পরের কার্যদিবস সোমবারও পতনের মধ্যেই থাকে শেয়ারবাজার।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেনের ১৫ মিনিটের মাথায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৫০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া এ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লেনদেনের শেষপর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
তবে, লেনদেনের একপর্যায়ে এসে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে বেশিকিছু প্রতিষ্ঠানের দরপতন হয়। ফলে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা কমে আসে। অবশ্য বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান লেনদেনের প্রায় পুরোটা সময় ধরে দাম বাড়ার ধারা ধরে রাখে। ফলে এক বারের জন্যও সূচক ঋণাত্মক হয়নি।
বড় মূলধনের বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৩৯ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৪৭০ পয়েন্টে উঠে এসেছে। বাকি দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ৩০৬ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৪১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সূচক বাড়লেও ডিএসইতে দাম কমার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। বাজারটিতে সবখাত মিলে ১২৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৪৬টির। আর ৯৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৩১৫ কোটি ৪ লাখ টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ১ হাজার ৪০০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৮৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ফার্মার শেয়ার। কোম্পানিটির ৭৬ কোটি ৬১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকোর ৭৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৪৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেএমআই হসপিটাল অ্যান্ড রিকুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইস্টার্ন হাউজিং, নাহি অ্যালুমিনিয়াম, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, বসুন্ধরা পেপার এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
অপর শেয়ারবাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৮৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৩০ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেওয়া ২৬১টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৯৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১২১টির এবং ৪৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এমএএস/এমএএইচ/জেআইএম