ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফায় উন্নতি, বেড়েছে সম্পদ

সাঈদ শিপন | প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ২০ আগস্ট ২০২২

চলতি বছরের প্রথমার্ধে (জানুয়ারি-জুন) পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফায় উন্নতি হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সম্পদের পরিমাণ। প্রভিশনে ছাড় দেওয়ার পাশাপাশি আদায় না করেই খেলাপি ঋণ কমাতে অবলোপনে (রাইট অফ) ছাড় দেওয়ায় ব্যাংকের মুনাফায় এই উন্নতি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাড় দেওয়ার কারণে কোনো কোনো ব্যাংক ঋণ পরিশোধ না করার পরও নিয়মিত করে রেখেছে। আবার আদায় ছাড়া পুনঃতফসিল করা ঋণের সুদ দেখিয়েছে আয় খাতে। সুযোগ পেয়ে অনেকে প্রয়োজনীয় প্রভিশন করেনি। এতে মুনাফা বেড়ে গেছে কিছু কিছু ব্যাংকের। আবার যারা যথাযথভাবে প্রভিশন করেছে তাদের মুনাফা কম হয়েছে।

তারা আরও বলছেন, এভাবে প্রভিশন ছাড় দেওয়া উচিত হচ্ছে না। খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে যেভাবে ছাড় দেওয়া হচ্ছে, তাতে সার্বিক ব্যাংক খাতে ঝুঁকি বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ব্যাংক খাতে বড় ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।

এদিকে আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে যোগ দেওয়ার পাঁচ কার্যদিবসের মাথায় গত ১৮ জুলাই ঋণখেলাপিদের জন্য ছাড় বাড়ানো হয়। ওইদিন বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ছাড় দিয়ে একটি নির্দেশনা জারি করা হয়।

ওই নির্দেশনায় বলা হয়, খেলাপি ঋণ নিয়মিত করতে আড়াই থেকে সাড়ে ৪ শতাংশ অর্থ জমা দিলেই চলবে। আগে যা ছিল ১০ থেকে ৩০ শতাংশ। এসব ঋণ পরিশোধ করা যাবে ৫ থেকে ৮ বছরে। আগে এ ধরনের ঋণ পরিশোধে সর্বোচ্চ দুই বছর সময় দেওয়া হতো।

তবে গত ৪ আগস্ট এক নির্দেশনা জারি করে খেলাপি ঋণে ছাড় কমায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ওইদিন জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, পুনঃতফসিলের পর আরোপিত সুদ প্রকৃত আদায় ছাড়া ব্যাংকের আয় খাতে স্থানান্তর করা যাবে না। মন্দ মানে শ্রেণিকৃত ঋণ তৃতীয় ও চতুর্থবার পুনঃতফসিল করার ক্ষেত্রে প্রকৃত আদায় ছাড়া সংরক্ষিত প্রভিশন ব্যাংকের আয় খাতে নেওয়া যাবে না।

আরও পড়ুন: খেলাপি ঋণে ছাড় কমলো

বাংলাদেশ ব্যাংকের এই নির্দেশনা আসার আগেই চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের আর্থিক প্রতিবেদন তৈরি করে তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলো। ফলে জানুয়ারি-জুন সময়ের আর্থিক প্রতিবেদনে আদায় ছাড়া পুনঃতফসিল করা ঋণের সুদ আয় খাতে দেখানোর সুযোগ ছিল।

নিয়ম অনুযায়ী, শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর প্রতি তিন মাস পর পর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। এরই আলোকে তালিকাভুক্ত ৩৩টি ব্যাংক চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে ১৮টির মুনাফা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। বিপরীতে কমেছে ১৩টির। দুটি ব্যাংকের মুনাফা অপরিবর্তিত রয়েছে। অন্যদিকে ২৫টি ব্যাংকের সম্পদ বেড়েছে এবং কমেছে সাতটির। একটির সম্পদমূল্য ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে।

অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফায় উন্নতি, বেড়েছে সম্পদ

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম

দীর্ঘদিন ধরে সমস্যায় নিমজ্জিত আইসিবি ইসলামী ব্যাংক এবার মুনাফার খাতায় নাম লিখিয়েছে। ব্যাংকটি চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ২ পয়সা। আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় ৩২ পয়সা। মুনাফার দেখা পেলেও ব্যাংকটির সম্পদমূল্য এখনো ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ১৮ টাকা ১২ পয়সা।

বরাবরের মতো এবারও সবচেয়ে বেশি মুনাফা করেছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৩ টাকা ৫৮ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৩ টাকা ২৫ পয়সা। সে হিসাবে শেয়ারপ্রতি মুনাফা বেড়েছে ২৩ পয়সা। মুনাফার পাশাপাশি ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণও বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ৫৫ টাকা ৯ পয়সা, যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৫৩ টাকা ১৩ পয়সা।

বড় মুনাফার তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে যমুনা ব্যাংক। এই প্রতিষ্ঠানটি চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৩ টাকা ৪ পয়সা, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ২ টাকা ৬৪ পয়সা। মুনাফা বাড়লেও কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ কিছুটা কমেছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৮ টাকা ২৩ পয়সা, যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ২৮ টাকা ৪১ পয়সা।

চলতি বছর মুনাফায় সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি হয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের। এই প্রতিষ্ঠানটির মুনাফা গত বছরের তুলনায় ৭৮ শতাংশ বেড়েছে। এতে শেয়ারপ্রতি মুনাফা ৪৯ পয়সা থেকে বেড়ে ৮৭ পয়সা হয়েছে। একই সঙ্গে বেড়েছে সম্পদের পরিমাণ। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদ দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৮১ পয়সা, যা গত বছর ছিল ১৭ টাকা ৬৫ পয়সা।

মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হওয়া ব্যাংকগুলো আর্থিক চিত্র

ব্যাংকের নাম

ইপিএস (টাকা)

ক্যাশ ফ্লো (টাকা)

এনএভি (টাকা)

২০২২ জানুয়ারি-জুন

২০২১ জানুয়ারি-জুন

২০২২ জানুয়ারি-জুন

২০২১ জানুয়ারি-জুন

২০২২ জুন

২০২১ জুন

এবিব্যাংক

.৪২

.৩১

.৪২

(৮.৭৩)

৩০.৫৫

৩১.০৭

আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংক

১.১৭

১.১৬

২২.২৮

৪.৮৫

২২.৩৯

২২.০১

ব্যাংক এশিয়া

২.০০

১.৭৫

৩২.৭৩

৭.১৫

২৩.৮৪

২৩.৮১

ঢাকা ব্যাংক

১.৩০

১.১৩

(১৭.৮১)

৩.৯৮

২২.১৬

২০.৯৭

এক্সিম ব্যাংক

১.১৪

.৮৭

(২১.৪২)

(৭.২৮)

২২.৮৯

২২.০০

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক

.৮৭

.৪৯

১১.০১

(১.৭১)

১৯.৮১

১৭.৬৫

ইসলামী ব্যাংক

২.১০

২.০৮

(১২.২৯)

৩৭.৭৬

৪১.৭৩

৩৯.৯৭

মার্কেন্টাইল ব্যাংক

২.২২

১.৯৩

৮.১৮

৮.৯৩

২৩.৮১

২৩.৯১

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক

১.৫০

.৯৬

৪.৮৬

(.৬১)

২৩.৩২

২১.৯৯

প্রিমিয়ার ব্যাংক

১.৫৪

১.৪৪

৬.৬১

(৪.৯৮)

১৯.৮৩

১৮.১০

পূবালী ব্যাংক

২.৩৬

১.৮০

(৭.০২)

১০.৩২

৩৮.৬৭

৩৯.২৯

সাইথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক

.৩২

.৩১

(১.১৩)

(৯.৫৫)

১২.৯৩

১৩.০২ (ডিসেম্বর)

শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক

২.৩৯

১.৬৪

৫.৭৭

১.১৬

১৯.৫৮

১৭.৬৪

ট্রাস্ট ব্যাংক

২.২২

২.২০

২২.২২

(২.৪০)

২৮.৫১

২৭.৯৩

উত্তরা ব্যাংক

২.২৮

১.৫৭

(১২.৮০)

১.৯৬

২৯.৮৮

২৭.৭৪

অধিকাংশ ব্যাংকের মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হলেও ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, ইস্টার্ণ ব্যাংক, আইএফআইসি, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক (এনআরবিসি), ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ইউসিবি এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের মুনাফা গত বছরের তুলনায় কমেছে।

এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক লোকসানের খাতায় নাম লিখিয়েছে। এ ব্যাংকটি চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি লোকসান গুনেছে ৫৪ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ২৮ পয়সা মুনাফা হয়। মুনাফার পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটির সম্পদ কমে গেছে। একই সঙ্গে ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে ক্যাশ ফ্লো। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৫ টাকা ৪৯ পয়সা, যা গত বছর ছিল ১৭ টাকা ২৯ পয়সা। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি অপারেটিং ক্যাশ ফ্লো বা পরিচালন নগদপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৪ টাকা ৭৯ পয়সা।

শতকরা হিসাবে গত বছরের তুলনায় সবচেয়ে বেশি মুনাফা কমেছে আইএফআইসি ব্যাংকের। এ ব্যাংকটির মুনাফা ৪০ শতাংশ কমে গেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৫২ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ৮৭ পয়সা। মুনাফা কমার পাশাপাশি ব্যাংকটির ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক অবস্থায় রয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ২ টাকা ৭০ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো ছিল ৪ টাকা ৫৭ পয়সা।

এর পরের স্থানে রয়েছে ওয়ান ব্যাংক। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে এই ব্যাংকটি শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ৯৮ পয়সা। গত বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ১ টাকা ৪৬ পয়সা। এ হিসাবে গত বছরের তুলনায় ব্যাংকটির মুনাফা কমেছে ৩৩ শতাংশ। মুনাফা কমলেও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ৬৮ পয়সা, যা গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ১৮ টাকা ৯৬ পয়সা।

মুনাফা কমে যাওয়া অন্য ব্যাংকগুলোর আর্থিক চিত্র

ব্যাংকের নাম

ইপিএস (টাকা)

ক্যাশ ফ্লো (টাকা)

এনএভি (টাকা)

২০২২ জানুয়ারি-জুন

২০২১ জানুয়ারি-জুন

২০২২ জানুয়ারি-জুন

২০২১ জানুয়ারি-জুন

২০২২ জুন

২০২১ জুন

ব্র্যাক ব্যাংক

১.৪৭

১.৭২

৭.৯৪

৩.০৯

৩৮.৫২

৩২.০০

সিটি ব্যাংক

২.০৪

২.১৬

(৭.৫৮)

৩.৯৬

৩১.৫৩

৩০.৬৮

ইস্টার্ণ ব্যাংক

২.২১

২.২৮

(১.৭৪)

(৮.২৩)

৩০.৭৪

২৯.৪৮

এনআরবিসি ব্যাংক

০.৭৭

১.০৩

১৪.৯৯

(.৭২)

১৫.১৩

১৫.১২ (ডিসেম্বর)

প্রাইম ব্যাংক

১.৫৯

১.৮১

(১.১৩)

৭.১৫

২৬.১৯

২৫.১৮

রূপালী ব্যাংক

.২৯

.৩৯

৪.২৪

১১.৮৩

৩৮.২৯

৩৭.৮৮ (ডিসেম্বর)

সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক

.৪৯

.৫৩

৩.৯৪

৫.০৭

১৯.৬৮

১৮.৮৯

স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক

.১৫

.২৩

(৩.৭২)

(২.৬৫)

১৬.৫৮

১৬.৪৮

ইউসিবি

.৯৪

.৯৮

(৯.৬৫)

(৭.৭৭)

৩০.০৫

২৮.৯০

ইউনিয়ন ব্যাংক

.৭৮

.৮৭

১.১২

১.০৭

১৫.২৪

১০.১৩

এদিকে এনসিসি ব্যাংক ও সাউথইস্ট ব্যাংকের মুনাফায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। গত বছরের মতো চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে এনসিসি ব্যাংক শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ১ টাকা ৩৩ পয়সা। মুনাফায় পরিবর্তন না এলেও ব্যাংকটির সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৩ টাকা ২৫ পয়সা, যা গত বছর ছিল ২১ টাকা ৯৫ পয়সা।

আরও পড়ুন: ৯ ব্যাংকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি ১৮ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা
সাউথইস্ট ব্যাংক চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে শেয়ারপ্রতি মুনাফা করেছে ২ টাকা ৫৬ পয়সা। মুনাফায় পরিবর্তন না এলেও ব্যাংকটির সম্পদমূল্য গত বছরের তুলনায় কমেছে। চলতি বছরের জুন শেষে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ২৬ টাকা ৮৮ পয়সা, যা গত বছর ছিল ২৭ টাকা ৯৭ পয়সা।

এ বিষয়ে ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. আহসান এইচ মনসুর জাগো নিউজকে বলেন, একটি ব্যাংকের মুনাফা বিভিন্ন কারণে বাড়তে পারে। ছাড়ের কারণে কিছু ব্যাংক সঠিকভাবে প্রভিশন করছে না, ফলে এসব ব্যাংকের মুনাফা বেড়ে যাচ্ছে। প্রয়োজনীয় প্রভিশন না করে মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো ভালো লক্ষণ নয়। এটি ভবিষ্যতের জন্য ঝুঁকি আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটটাই ভিন্ন। যাদের গভর্ন্যান্স খারাপ, যাদের লোনের কোয়ালিটি খারাপ তারা বেশি প্রফিট করে। হয়তো ১৫-২০ শতাংশ খেলাপি ঋণ আছে, কিন্তু পুনঃতফসিল করে সেটা নরমাল ঋণ হিসেবে দেখিয়ে দেওয়া হলো। তাহলে তো এই ২০ শতাংশ প্রভিশন করতে হবে না, তখন হিউজ প্রফিট হবে। এটাই হচ্ছে অধিকাংশ ব্যাংকে। এটা সার্বিক ব্যাংক খাতের জন্য খুবই খারাপ জিনিস।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ব্যাংকগুলো যেহেতু মুনাফা দেখাচ্ছে, সুতরাং তাদের নিশ্চয়ই মুনাফা হচ্ছে। তবে কীভাবে মুনাফা বেড়ে যাচ্ছে, সে বিষয়টি দেখা উচিত।

প্রয়োজনীয় প্রভিশন না করে মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো ভালো লক্ষণ কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, প্রয়োজনীয় প্রভিশন না করার কারণে ব্যাংকের মুনাফা বাড়িয়ে দেখানো যেতে পারে। কিন্তু তাতে তো ব্যাংকের দুর্বলতা দূর হয়ে যাচ্ছে না। এটা ভবিষ্যতের জন্য আরও বেশি ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। এটা যাতে অভ্যাসে পরিণত না হয়, সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

এমএএস/ইএ/এএসএ/জেআইএম