ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ক্রয়মূল্যেই আর্থিক প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ হিসাব, প্রজ্ঞাপন জারি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৯:০৩ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০২২

পুঁজিবাজারবন্ধব আরও একটি সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংকের পর এবার পুঁজিবাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বা লিজিং কোম্পানির বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজারদরের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বিবেচনায় নিতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রোববার (১৪ আগস্ট) বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বাজার বিভাগ থেকে জারি করা এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে সই করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালক মো. আমির উদ্দিন।

এতে বলা হয়েছে, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা (এক্সপোজার লিমিট) নির্ধারণের ক্ষেত্রে তালিকাভুক্ত শেয়ার, ডিবেঞ্চার, করপোরেট বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড ইউনিট ও পুঁজিবাজারে অন্যান্য নিদর্শনপত্রে বিনিয়োগ হিসাবায়নের ক্ষেত্রে বাজারমূল্যর পরিবর্তে ক্রয়মূল্য বিবেচনা করতে হবে।

এর আগে গত ৪ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের অফ-সাইট সুপারভিশন ডিপার্টমেন্ট থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ব্যাংক কোম্পানি অন্য কোম্পানির শেয়ার ধারণের হিসাবায়নে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের ঊর্ধ্বসীমা (এক্সপোজার লিমিট) নির্ধারণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ক্রয়মূল্যকেই ‘বাজারমূল্য’ হিসেবে বিবেচনা করতে হবে।

তার আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। উপসচিব মো. জেহাদ উদ্দিনের সই করা ওই চিঠিতে বলা হয়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বাজারমূল্য হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, একটি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান তার মোট মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি শেয়ার ধারণ করতে পারবে না। সহযোগী প্রতিষ্ঠানসহ এটা হবে সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ।

শেয়ারের ধারণ করা মূল্য নির্ধারণ করা হয় বাজারমূল্যের ভিত্তিতে। এখানেই দেখা দেয় বিপত্তি। ব্যাংক তার বিনিয়োগসীমার মধ্যে থেকে শেয়ার কিনলেও তার দাম বেড়ে গেলে বাজারমূল্যের ভিত্তিতে বিনিয়োগ গণনার কারণে বিনিয়োগসীমা অতিক্রম করে যাচ্ছে। ফলে দাম বাড়লেই ব্যাংকগুলো তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ায়। এতে পুঁজিবাজারে বিক্রয় চাপ বেড়ে দরপতনের ঘটনা ঘটে।

এ কারণে শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংকের বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজারমূল্যের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে বিবেচনায় নেওয়ার দাবি জানিয়ে আসা হচ্ছিল। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক তাতে সাড়া দেয়নি।

তবে আব্দুর রউফ তালুকদার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আসার পর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়। তিনি গভর্নরের দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ১৮ জুলাই বিনিয়োগ সীমা গণনায় বাজারদরের পরিবর্তে ক্রয়মূল্যকে (কস্ট প্রাইস) বিবেচনায় নেওয়ার বিষয়ে মতামত চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ওই চিঠির প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় তাতে সম্মতি দেয়। তার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নির্দেশনা জারি করার মাধ্যমে এ বিষয়ে সব জটিলতা নিরসন করা হয়।

এদিকে, ৩১ জুলাই ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্টস ফোরাম (সিএমজেএফ) আয়োজিত ‘সিএমজেএফ টক’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম জানান, শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের হিসাব বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে হচ্ছে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ব্যাংকের এক্সপোজারের হিসাব বাজারমূল্যের বদলে ক্রয়মূল্যে করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব ছিলেন, আমি ছিলাম, গভর্নর উপস্থিত ছিলেন এ সংক্রান্ত বৈঠকে। আমরা আলাপ-আলোচনা করেই এটা করেছি। এখন যেটা হচ্ছে, সেটা প্রসিডিউর। আমাদের আলোচনা হয়েছে, হয়ে যাবে। আমরা তিনজনই একমত।

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম আরও বলেন, ‘এ গভর্নর যখন সচিব ছিলেন, তখন ফাইলটা গেছে বাংলাদেশ ব্যাংকে। ওনার সুপারিশ নিয়েই বাংলাদেশ ব্যাংকে ফাইল যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ওপরের লেভেল ঠিক ছিল। কারণ ডেপুটি গভর্নর উপস্থিত ছিলেন মিটিংয়ে।’

‘কিন্তু ওখানে (বাংলাদেশ ব্যাংক) যাওয়ার পর জুনিয়ার অফিসার কেউ হয়তো নেগেটিভ মতামত দিয়ে ফাইলটা এমনভাবে করেছিলেন, যাতে গভর্নর কাজটা করতে পারেননি। যাইহোক নতুন গভর্নর আসার দুদিন পরেই আমরা ওনার সঙ্গে দেখা করি। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ফাইলটি মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দিয়েছেন। এখন জাস্ট এটা প্রসিডিউরে আছে’ বলে উল্লেখ করেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।

এমএএস/এএএইচ