ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

‘সুনীল অর্থনীতির জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠন করা দরকার’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:১৬ পিএম, ০৫ জুলাই ২০২২

সমুদ্রসম্পদের সম্ভাবনাকে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে সরকারকে ‘মিনিস্ট্রি অব সি রিসোর্সেস’ নামে আলাদা একটি মন্ত্রণালয় গঠনের পরামর্শ দিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ‘এক্সপ্লোরিং দ্য পটেনশিয়াল অব সি উইডস ফর প্রমোটিং দ্য ব্লু ইকোনমি অব বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ পরামর্শ দেন।

‘বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলোশিপ-২০২২’ এর আওতায় এ সেমিনারের আয়োজন করা হয়।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গোপসাগর ঘিরে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠেছে। এর আর্থ-সামাজিক ও কূটনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সমুদ্রসম্পদের সমন্বয়সাধন, পূর্ণ মনোযোগ দেওয়া বা সামুদ্রিক সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি মন্ত্রণালয় স্থাপন করা প্রয়োজন। দেশের প্রথিতযশা সমুদ্রবিজ্ঞানী, গবেষকসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এ মন্ত্রণালয় গঠিত হতে পারে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে সমুদ্রবিজয়ের মাধ্যমে আমরা দেশের আয়তনের প্রায় সমান জলভাগ পেয়েছি। দেশের সমুদ্রসীমায় কী পরিমাণ প্রাণিজ-অপ্রাণিজ সম্পদ রয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করা ও সামুদ্রিক সম্পদ গবেষণা চালানো দরকার। এছাড়া সমুদ্র সংরক্ষণ ও দূষণমুক্ত করতে বাস্তবধর্মী পদক্ষেপ নিতে হবে।

সামুদ্রিক শৈবাল (সি উইড) নিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সি উইড মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, পুষ্টিরও জোগান দেবে। এটির প্রক্রিয়াজাত-বাজারজাতকরণে উদ্যোক্তা তৈরি করতে হবে। পাশাপাশি খাদ্য হিসেবে জনপ্রিয় করে তুলতে এর পুষ্টিগুণ নিয়ে ব্যাপক প্রচারের ব্যবস্থা করা দরকার।

বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং নিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব র্যাংকিংয়ে দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৫০০ এর মধ্যে না থাকাটা অত্যন্ত লজ্জাজনক। দেশ পরিকল্পিতভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, সব সূচকে উন্নতি করছে। কিন্তু আমরা লেখাপড়ায় কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছি। দেশের শিক্ষাব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনা দরকার। শিক্ষা হতে হবে গবেষণামূলক ও গবেষণা হতে হবে বাস্তব ফলাফলনির্ভর।

সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউজিসি চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম বলেন, আমাদের সমুদ্র অর্থনীতির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, একে কাজে লাগাতে হবে।

সি উইডসসহ সামুদ্রিক সম্পদ নিয়ে গবেষণা প্রকল্পের বাস্তবতা ও প্রয়োজনীয়তার নিরিখে যথাযথ অর্থায়ন করা হবে বলে জানান ড. দিল আফরোজা বেগম। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের গবেষণা প্রকল্প জমা দেওয়ার আহ্বান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, সমুদ্রবিজয় বাংলাদেশের জন্য একটি বড় অর্জন; কিন্তু নীল অর্থনীতির সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে না পারলে বিজয়ের অর্জন দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা রাখতে পারবে না।

কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে সামুদ্রিক শৈবাল বা সি উইড পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার হিসেবে অত্যন্ত জনপ্রিয়। সামুদ্রিক শৈবাল চাষ আমাদের দেশের উপকূলীয় জনগণের জন্য বিকল্প আয়ের উৎস হতে পারে।

সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন- ইউজিসির সচিব ড. ফেরদৌস জামান, রিসার্চ সাপোর্ট ও পাবলিকেশন ডিভিশনের পরিচালক মো. কামাল হোসেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলো, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (হাবিপ্রবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আফজাল হোসেন।

সেমিনারের উন্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক, গবেষক, ইউজিসির বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগের পরিচালকসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী ও উদ্যোক্তা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে ‘ইউজিসি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ফেলোশিপ ২০২২’ প্রবর্তন করা হয়। হাবিপ্রবির সাবেক উপাচার্য ও গবেষক অধ্যাপক ড. আফজাল হোসেনকে প্রথম ফেলো হিসেবে মনোনীত করা হয়।

এমএইচএম/এসএএইচ/বিএ/এএসএম