ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

‘রপ্তানি বহুমুখীকরণে সব শিল্পখাতে সমান সুবিধা দিতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৫:২৫ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২২

রপ্তানি বহুমুখীকরণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে অল্প কয়েকটি খাতকে অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত না করে দেশের সব শিল্প খাতকে সমান সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।

শনিবার (১৬ এপ্রিল) এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘এক্সপোর্ট চ্যালেঞ্জেস অব বাংলাদেশ আফটার গ্রাজুয়েশন ফ্রম এলডিসি স্ট্যাটাস: অপশনস ফর দি প্রাইভেট সেক্টর’ শীর্ষক সেমিনারে এ আহ্বান জানান তিনি।

এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, এলডিসি উত্তরণের ফলে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পরবে রপ্তানি খাত। তাই রপ্তানিকে সমৃদ্ধ করতে সব খাতকে সমান সুবিধা দেওয়া দরকার। এছাড়াও নবায়নের প্রয়োজনীয়তা ছাড়া স্থায়ী নিবন্ধন ও শুধু জমি, পরিবেশ, ইমারত, আগুন ও কর সনদের মাধ্যমে শিল্প স্থাপনের সুযোগ, ওয়ানস্টপ সেবা চালুর আহ্বান জানান মো. জসিম উদ্দিন। রপ্তানি সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাস্তবায়নে ইপিবি, এনবিআর, ও অন্যান্য প্রশাসনিক সিঙ্গেল উইন্ডো ব্যবস্থা কার্যকর করার দাবিও জানান তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউস বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজে বাংলাদেশের ব্যবসা বাণিজ্যকে ব্র্যান্ডিং করেন। প্রত্যেক বিদেশ সফরে তিনি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়ে যান।

এলডিসি গ্র্যাজুয়েশনের আগের চার বছর মোটেও কম সময় নয় উল্লেখ করে মুখ্য সচিব বলেন, বাংলাদেশ যে গতিতে এগোচ্ছে, তাতে এ সময়ের মধ্যে বিভিন্ন সংস্থার করা হিসাব পরিবর্তন করে দেবে। এছাড়া ভ্যাকসিন ক্রয় ও মেগা প্রকল্পগুলোতে কোনো দুর্নীতি হয়নি।

বিশেষ অতিথিদের বক্তব্যে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, বিশ্বব্যাংক ব্যবসা সহজীকরণ সূচক প্রকাশ বন্ধ করলেও, দেশে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ তৈরিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্ঠান। নির্বাহী চেয়ারম্যান জানান, ২০১৯ সালে চালুর পর থেকে ওয়ানস্টপ সার্ভিস থেকে বিডাসংশ্লিষ্ট ৫০ হাজারের বেশি সেবা দেওয়া হয়েছে। দৈনিক গড়ে বিডার ১০০টি সেবা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। তবে বিডার বাইরে থাকা ১৮টি সংস্থার মাত্র ৫৮টি সেবা যুক্ত হয়েছে। এসব সেবা বিডার ওএসএস প্ল্যাটফর্ম থেকে গ্রহণ করতে হবে ব্যবসায়ীদের।

বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, এলডিসি উত্তরণের পরেও যেন অন্তত ৬ বছর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা অব্যাহত থাকে সে ব্যাপারে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সঙ্গে দর কষাকষি চলছে। দীর্ঘমেয়াদী রপ্তানি ও বাণিজ্য সক্ষমতা ধরে রাখতে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির বিকল্প নেই। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রস্তুতি চলছে।

শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা বলেন, এলডিসি উত্তরণ চ্যালেঞ্জে সরকার শিল্পখাতে নারী উদ্যোক্তা তৈরি, আমদানি পণ্যের বিকল্প উৎপাদনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সরকার সচেতন রয়েছে।

‘রপ্তানি বহুমুখীকরণে সব শিল্পখাতে সমান সুবিধা দিতে হবে’

পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য শরিফা খান বলেন, বাংলাদেশের শিল্পখাত যথেষ্ট বৈচিত্র্যপূর্ণ। দেশে প্রায় সব ধরনের পণ্যই উৎপাদিত হয়। কিন্তু এসব পণ্যকে রপ্তানি বাজারের জন্য উপযোগী করে তুলতে হবে।

সেমিনারে উন্মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক সৈয়দ আলমাস কবির, প্যানেল উপদেষ্টা ও সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, এমসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর, পিডব্লিউসি বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা অংশীদার মামুন রশীদ, এফবিসিসিআইয়ের উপদেষ্টা মঞ্জুর আহমেদ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মজিবুর রহমান।

এসময়, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, সরবরাহ শৃঙ্খলা অব্যাহত রাখা, দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ফাইভ-জি, ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দেওয়া, শিল্পের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংযোগ, প্রযুক্তি অভিযোজন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তারা।

এর আগে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এফবিসিসিআইয়ের প্যানেল উপদেষ্টা ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের সাবেক সদস্য ড. মোস্তফা আবিদ খান।

তিনি বলেন, এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জর মধ্যে পড়বে। যেগুলো হলো- শুল্কমুক্ত বাজার প্রবেশাধিকার হারানো, রপ্তানিতে ভর্তুকি বন্ধ করে দেওয়া ও ট্রিপসের আওতায় সুযোগ-সুবিধা বন্ধ হয়ে যাওয়া। ফলে, কানাডায় পোশাক রপ্তানিতে ১৬.৫ শতাংশ, ইইউতে ১১.৫ শতাংশ, জাপানে ৯ শতাংশ, কোরিয়ায় ১২.৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে।

বাড়তি শুল্কের কারণে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী, রপ্তানি কমতে পারে ২৬.৬ শতাংশ যার আর্থিক মূল্য ৬৩ লাখ ৮০ হাজার ৩০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মূল প্রবন্ধে এলডিসি পরবর্তী সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যবসার খরচ হ্রাস, কাস্টমসের সক্ষমতা বৃদ্ধি, উৎপাদনশীলতা বাড়ানো, বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়।

ইএআর/একেআর/জেআইএম