৪০ বছরে পদার্পণ করলো ইসলামী ব্যাংক
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম শরী‘আহভিত্তিক ব্যাংক ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি দেশের সর্বোচ্চ আমানত ও বিনেয়োগ নিয়ে ৪০ বছরে পদার্পণ করেছে।
বুধবার (৩০ মার্চ) ইসলামী ব্যাংক টাওয়ারে ৪০তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির ভাইস প্রেসিডেন্ট নজরুল ইসলামের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, দেশের এক তৃতীয়াংশ বৈদেশিক রেমিট্যান্স আহরণকারী এ ব্যাংক গত ৩৯ বছরে দেশের আমদানি-রপ্তানি, বাণিজ্য ও এসএমই বিনিয়োগে সর্বোচ্চ অর্থায়ন করেছে। সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ ব্যাংকিং সেবাসহ ৬ হাজারের বেশি ইউনিট নিয়ে সারাদেশে বিস্তৃত নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করছে এ ব্যাংক।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ব্যাংকের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মো. মুনিরুল মওলা। প্রতিষ্ঠানটির অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. কায়সার আলী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. ওমর ফারুক খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর মো. মোস্তাফিজুর রহমান সিদ্দিকী, মো. আলতাফ হুসাইন ও মো. নাইয়ার আজম। স্বাগত বক্তব্য দেন সিনিয়র এক্সিকিউটভ ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. মাকসুদুর রহমান।
এসময় ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন নির্বাহী, জোনপ্রধান, শাখাপ্রধান, উপশাখা ইনচার্জ, গ্রাহক ও শুভানুধ্যায়ীরা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে যুক্ত হন।
মুনিরুল মওলা বলেন, ইসলামী ব্যাংক জাতীয় অর্থনীতির অন্যতম শক্তি। ১ কোটি ৬০ লাখ গ্রাহকের এ ব্যাংক প্রায় ৮৪ লাখ মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেছে। দেশের তৈরি পোশাক খাতের ৩৬ শতাংশ ও টেক্সটাইল খাতের ৬০ শতাংশ প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়নে গড়ে উঠেছে ।
তিনি বলেন, ৬ হাজারের বেশি শিল্প-কারখানা, ২ হাজারের বেশি কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান, ২৬টি পাটকল, ৪২১টি নৌ-পরিবহন, ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন, অর্ধশতাধিক কোল্ড স্টোরেজ, প্রায় ১ হাজার অটো রাইস মিল ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত হচ্ছে।
প্রধান অতিথি বলেন, বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের মোট আমানতের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি টাকা। যা দেশের ব্যাংকিং সেক্টরে সর্বোচ্চ। জাতীয় অর্থনীতির প্রধান দুই স্তম্ভ প্রবাসী রেমিট্যান্স ও তৈরি পোশাক শিল্প উন্নয়নে ইসলামী ব্যাংক পথিকৃৎ। বর্তমানে ইসলামী ব্যাংকের বিনিয়োগের পরিমাণ ১ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা।
তিনি বলেন, এ ব্যাংক শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ নির্বেশেষে সব মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসের অনন্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে ইসলামী ব্যাংকের মার্কেট শেয়ার যথাক্রমে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ ও ৮ শতাংশ। বিশ্বে ইসলামিক মাইক্রোফাইন্যান্সের পথিকৃৎ ইসলামী ব্যাংকের পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প দেশের ১৩ লাখ প্রান্তিক পরিবারকে স্বাবলম্বী করেছে। এ প্রকল্প দেশের ২৬ হাজার গ্রামে বিস্তৃত। যার মাধ্যমে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ বিতরণ করা হয়েছে।
মুনিরুল মওলা বলেন, ব্যাংকিংখাতে দেশের শীর্ষ করদাতা এ প্রতিষ্ঠান ২০১২ সাল থেকে বিশ্বের শীর্ষ এক হাজার ব্যাংকের তালিকায় বাংলাদেশের একমাত্র ব্যাংক হিসেবে অবস্থান ধরে রেখেছে। দ্য জেনারেল কাউন্সিল ফর ইসলামিক ব্যাংক অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউশন্স (সিবাফি) এ ব্যাংককে ওয়ার্ল্ডস বেস্ট ইসলামিক ব্যাংক পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
তিনি বলেন, ফিনটেক ব্যবহার করে আর্থিক সুবিধার বাইরে থাকা জনগোষ্ঠীকে আর্থিক সেবার আওতায় আনার জন্য কাজ করছে এ ব্যাংক। ইসলামী ব্যাংকের আধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ সেবা, সেলফিন অ্যাপ ও ইন্টারনেট ব্যাংকিংসহ সব আর্থিক সেবা নিতে সবাইকে আহ্বান জানান প্রধান অতিথি।
এমআইএইচ/এমএস