ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

বৈদেশিক অর্থায়ন কাটছাঁটে রেকর্ড

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:০১ পিএম, ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২

কয়েক বছরের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্পে বৈদেশিক অর্থায়ন কাটছাঁটে এবার রেকর্ড হয়েছে। এর পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৭৭৪ কোটি টাকা। চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) বিশাল পরিমাণ অর্থ কাটছাঁট করা হচ্ছে।

প্রতি বছরই আরএডিপিতে বৈদেশিক বরাদ্দ কমানোর একটা প্রবণতা থাকে। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এত বেশি হারে কমানো হয়নি। গত বছর সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়েছিল। অর্থাৎ এ বছর গত অর্থবছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি কমছে।

তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত থাকায় অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

চলতি অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে কাটছাঁট করার অন্যতম কারণ করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের সংক্রমণ, যার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে আরএডিপিতে। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বরাদ্দ থাকলেও বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে খরচ করতে না পারায় এই অর্থ ফেরত দিয়েছে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলো।

চলতি অর্থবছরের জন্য বরাদ্দ ছিল ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা। এখন সংশোধিত এডিপির জন্য এ বরাদ্দ কমিয়ে ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ২৫০ কোটি টাকা। বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের অর্থ চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) একটা খসড়া আরএডিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে। ইআরডি ও পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

এদিকে, চলতি অর্থবছর এডিপি থেকে আরএডিপিতে (সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) বড় ধরনের পরিবর্তনের আভাস রয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরের মার্চের প্রথম সপ্তাহে আরএডিপি চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এনইসি সভায় প্রস্তাবিত আরএডিপির অনুমোদন দেওয়া হবে। এ লক্ষ্যে কাজ করছে পরিকল্পনা কমিশন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জাগো নিউজকে বলেন, করোনার পর ওমিক্রন আতঙ্ক। এসব কারণে মূলত অনেক প্রকল্পে টাকা খরচ হয়নি। অনেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ টাকা খরচ করতে পারেনি। ফলে সংশোধিত এডিপি কমবে। এটা উন্নয়ন সহযোগিদের ব্যর্থতা নয়, আমাদের ব্যর্থতা। সব ব্যর্থতা কাটিয়ে সামনে এডিপি বাস্তবায়নে আরও সক্ষমতা দেখাতে হবে।

২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য দুই লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দেওয়া হয়। এডিপিতে সরকার যোগান দিচ্ছে এক লাখ ৩৭ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে ঋণ হিসেবে আসছে বাকি ৮৮ হাজার ২৪ কোটি টাকা। জিওবি অর্থায়ন ঠিক থাকলেও সংশোধিত এডিপিতে কমছে বৈদেশিক অর্থায়ন।

নতুন এডিপিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে ৬১ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা, যা মোট এডিপির ২৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এরপর বিদ্যুৎখাতে গুরুত্ব দিয়ে ৪৫ হাজার ৮৬৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২৩ হাজার ৪২১ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ খাতে। নতুন এডিপিতে বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে চতুর্থ স্থানে শিক্ষা। এ খাতে ২৩ হাজার ৩২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যা মোট এডিপির ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ।

এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগে ১৪ হাজার ২৭৪, পরিবেশ ও পানি উন্নয়নে ৮ হাজার ৪৭০, কৃষিতে ৭ হাজার ৬৪৬, শিল্পখাতে ৪ হাজার ৬৪৩, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিখাতে ৩ হাজার ২০৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়।

পাবলিক অর্ডার অ্যান্ড সেফটি খাতে ৩ হাজার ২০৪, সাধারণ সেবা খাতে ২ হাজার ৯২৩, সাংস্কৃতিক খাতে ২ হাজার ১৯০, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে এক হাজার ৬৪৮ কোটি এবং ডিফেন্স খাতে ৮৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। সংশোধিত এডিপিতেও এসব খাত গুরুত্ব পাবে বলে দাবি পরিকল্পনা কমিশনের।

এমওএস/এএএইচ/এএসএম