শেয়ারবাজারে বড় দরপতন
সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবার দেশের শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এর মাধ্যমে জাতীয় সংসদে নতুন অর্থবছরের (২০২১-২২) প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপনের পর লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে দরপতন হলো।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট করহার কমানোর প্রস্তাব দেয়া হয়েছে।
কালো টাকার বিষয়ে প্রস্তাবিত বাজেটে কিছুই বলেননি অর্থমন্ত্রী। এ কারণে ধরে নেয়া হচ্ছে চলতি অর্থবছর মাত্র ১০ শতাংশ কর দিয়ে শেয়ারবাজারে কালো টাকা বিনিয়োগের যে সুযোগ দেয়া হয়, তা আগামী অর্থবছর থাকবে না। ফলে আগামী ৩০ জুনের পর শুধু ১০ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করা যাবে না।
অর্থমন্ত্রী নতুন বছরের প্রস্তাবিত বাজেট দেয়ার পর রোববার সাড়ে ১০ বছর বা ২০১০ সালের ৬ ডিসেম্বরের পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সর্বোচ্চ লেনদেন হয়। দরপতন হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের। এতে কমে প্রধান মূল্য সূচক।
এই রেকর্ড লেনদেনের পর সোমবার লেনদেনের শুরুতে প্রায় সবকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ে। এতে প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৯ পয়েন্টে বেড়ে যায়। সূচকের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
বরং শেষ দিকের লেনদেনে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দরপতনের তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। ফলে বড় পতন দেখা দেয় শেয়ারবাজারে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬২ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৯৭৫ পয়েন্টে নেমে গেছে।
অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ২৭ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১৯৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ৯ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৮৯ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
দিনভর বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ৯৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার বিপরীতে দাম কমেছে ২৪২টির। ২৭টির দাম অপরিবর্ততি রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দরপতনের সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণ। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৮৩ কোটি ২৮ টাকা টাকা। আগের দিন লেনদেন হয় ২ হাজার ৬৬৯ কোটি ৩৮ টাকা টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৫৮৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।
টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বেক্সিমকোর শেয়ার। কোম্পানিটির ২৪৭ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ৩৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। ৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ফরচুন সুজ।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স, সাইফ পাওয়ার, লুব-রেফ, ইফাদ অটোস, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স, কাট্টালী টেক্সটাইল এবং রিং সাইন টেক্সটাইল।
আরেক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্য সূচক কমেছে ১৮৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৯০ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। লেনদেন অংশ নেয়া ৩০০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৮৭টির দাম কমেছে এবং ২৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এমএএস/এসএস/এমএস