১৭৯৬ কোটি টাকায় রাউজানে হচ্ছে ৪০০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎকেন্দ্র
১ হাজার ৭৯৬ কোটি ৭২ লাখ টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (১৯ মে) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবগুলোর বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য দুটি এবং ক্রয় কমিটির অনুমোদনের জন্য ১০টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। ক্রয় প্রস্তাবনাগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের দুটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দুটি, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দুটি, বিদ্যুৎ বিভাগের একটি, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের একটি, জননিরাপত্তা বিভাগের একটি এবং বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের একটি প্রস্তাবনা ছিল। ক্রয়-কমিটির অনুমোদিত ৯টি প্রস্তাবে মোট অর্থের পরিমাণ ৮ হাজার ৭৮৪ কোটি ২৮ লাখ ৪৩ হাজার ৯৩ টাকা। মোট অর্থায়নের মধ্যে জিওবি থেকে ব্যয় হবে ২ হাজার ৫১৮ কোটি ২৮ লাখ ৭৯ হাজার ৪৯০ টাকা এবং দেশীয় ব্যাংক ও বিশ্বব্যাংক ঋণ ৬ হাজার ২৬৫ কোটি ৯৯ লাখ ৬৩ হাজার ৬০৩ টাকা।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. শাহিদা আক্তার সাংবাদিকদের জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) কর্তৃক চট্টগ্রাম জেলার রাউজানে ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের একটি ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। চীনের সেপকো-৩ ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এ জন্য ব্যয় হবে এক হাজার ৭৯৬ কোটি ৭২ লাখ ৫ হাজার ১৫০ টাকা। গ্যাসভিত্তিক এ বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি মেগাওয়াটের দাম পড়বে ১ দশমিক ৩৮ টাকা।
এ বিষয়ে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ থাকা সত্ত্বেও কেন বিদ্যুতের নতুন পাওয়ার প্ল্যান্ট অনুমোদন দেয়া হচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, যেসব এলাকায় পাওয়ার প্ল্যান্ট আছে, সেগুলো অনেক পুরোনো হওয়ায় রিপ্লেস করতে হবে, যার খরচ অনেক বেশি। সেজন্য এখানে নতুন ক্যাপাসিটি যুক্ত হবে না, পুরোনো যেটি ছিল সেটি বেড়ে নতুনভাবে হবে।
অতিরিক্ত সচিব বলেন, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলা কর্তৃক এওটি ট্রেডিং এজি সুইজারল্যান্ডের কাছ থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৩৪০ কোটি ৬২ লাখ ৪৫ হাজার ৩০১ টাকা। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএমজির দাম পড়বে ১০ দশমিক ১৯৯৭ মার্কিন ডলার।
বৈঠকে অনুমোদিত অন্য প্রস্তাবগুলো হলো- জননিরাপত্তা বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পুলিশ কর্তৃক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সার্ভিল্যান্স সিস্টেম প্রবর্তনের লক্ষ্যে ‘হাইওয়ে পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধি’ প্রকল্পের আওতায় সিসিটিভি মনিটরিং সিস্টেম, অন্যান্য নির্মাণ ও অবকাঠামো এবং অপারেশন ও মেইটেনেন্স কাজ বাস্তবায়নের একটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি যৌথভাবে বাস্তবায়ন করবে স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড এবং ডিজিকন টেকনোলজিস লিমিটেড। এ জন্য ব্যয় হবে ১২৯ কোটি ২২ লাখ ৬০ হাজার ৭৬৬ টাকা।
বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট (সিপিটিইউ) কর্তৃক ‘ডিজিটাইজিং ইম্লিমেন্টাশন মনিটরিং অ্যান্ড পাবলিক প্রকিউরমেন্ট’ প্রকল্পে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে (১) দোহাটেক নিউমিডিয়া বাংলাদেশ (২) ডট জিওভি সলিউশনস এলএলসি, (৩) ইউএসএ অ্যান্ড বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি (বেক্সিমকো) এবং (৪) আইটি ডিভিশন বাংলাদেশকে নিয়োগের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৪৪ কোটি ২৪ লাখ ৭১ হাজার ১৭২ টাকা।
এছাড়া সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদফতর কর্তৃক ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ) এর জন্য ১৩ তলা বিশিষ্ট প্রধান কার্যালয় ভবন নির্মাণ প্রকল্পের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৭২ হাজার ৪২৩ টাকার প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।
আইএইচআর/এসএস/এএসএম