ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

করোনাকালে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে কার্যকর সামাজিক সংলাপ প্রয়োজন

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ১৭ এপ্রিল ২০২১

কর্মক্ষেত্রে কোভিড-১৯ অতিমারির অভিঘাত, বিশেষ করে ২০২০ সালের প্রথমার্ধে লক্ষ্য করা গেছে। নিয়মিত বা অস্থায়ী শ্রমিকশ্রেণিসহ ছোট মাপের নিয়োগকারী সংস্থা এবং বিভিন্ন বিভাগের শ্রমিকরা এই চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন। বাংলাদেশের জন্যও এই চিত্র ভিন্ন নয়। দেশের ট্রেড ইউনিয়নগুলোকে সংগঠিত এবং অসংগঠিত উভয় ধরনের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে শ্রমবাজারের দিকে মনোনিবেশ করা উচিত। একইসঙ্গে করোনাকালে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে কার্যকর সামাজিক সংলাপের দিকেও দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন।

‘করোনাকালে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধারে ট্রেড ইউনয়িনরে ভুমকিা : কতিপয় প্রস্তাবনা’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংলাপে এসব কথা বলেছেন বক্তারা। শনিবার (১৭ এপ্রিল) এই সংলাপের আয়োজন করে সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি) এবং বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস)।

সিপিডি-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন এবং বিলসের মহাসচিব ও নির্বাহী পরিচালক নজরুল ইসলাম খান সংলাপে সূচনা বক্তৃতা করেন।

তারা মন্তব্য করেন, সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের মাধ্যমে শ্রমবাজার পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা চলছে। এই সকল কর্মকাণ্ডে ট্রেড ইউনিয়নের একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। বাংলদেশের ট্রেড ইউনিয়নগুলো করোনাকালের সঙ্কটের মাঝে মানবিক ও শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করে গেছে। তাদের কর্মকাণ্ডের ব্যাপ্তির পর্যালোচনার মাধ্যমে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক নীতিগুলো এবং নিয়োগকারীদের কর্মকাণ্ড প্রভাবিত করার ক্ষেত্রে তাদের ক্ষমতা এবং ভবিষ্যতে আরও সম্পৃক্ততা বাড়ানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

সিপিডি-এর গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম সংলাপের মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এই সঙ্কটকালীন সময়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা এবং আলোচনার ফলে শ্রমিকদের এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পক্ষে ঝুঁকি মোকাবিলা এবং সঙ্কট থেকে পুনরুদ্ধারের বিষয়ে সীমিত সাফল্য নিশ্চিত হয়েছে। অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা অরক্ষিত অবস্থায় রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদী নীতিমালা বাস্তবায়নের মাধ্যমে শ্রমিকদের আগ্রহ নিশ্চিত করার বিষয়ে ত্রিপক্ষীয় আলোচনা এবং একটি যৌথ বিবৃতি প্রয়োজন।

তিনি আরও বলেন, জাতীয় সামাজিক সুরক্ষানীতির উপর ভিত্তি করে, ট্রেড ইউনিয়নগুলোতে শ্রমজীবী বয়সের লোকেরা, সামাজিকভাবে বঞ্চিত গোষ্ঠীগুলো, একটি খাদ্য স্থানান্তর কর্মসূচি ও সাশ্রয়ী মূল্যের সামাজিক বিধানের আওতায় শ্রমিক এবং তাদের পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন সহায়তা ব্যবস্থাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। সরকার, নিয়োগকারী এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আন্তর্জাতিক শ্রম ও মানবাধিকার সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষর করতে একত্রে কাজ করা উচিত।

সংলাপের বিশেষ অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব কে এম আব্দুস সালাম বলেন, সকল স্টেকহোল্ডার সমস্যাগুলো সমান গুরুত্ব সহকারে শোনা হয় এবং কেন্দ্রীয় তদারকি কমিটির মাধ্যমে নিয়মিত পর্যবেক্ষণ চলছে।

আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুওমো পটিয়াইনন সংলাপে আরেক বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, সংগঠিত এবং অসংগঠিত উভয় ক্ষেত্রে শ্রমিকদের সামাজিক সুরক্ষা সরবরাহের আওতায় আনার দিকে সরকারের মনোনিবেশ করা উচিত।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও বিলসের ভাইস চেয়ারম্যান শিরীণ আখতার সামাজিক সংলাপের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি বলেন, আরও বেশি শ্রমিকদের সংগঠিত তালিকভুক্ত করতে কাজ করা উচিত।

সিপিডির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কোষাধ্যক্ষ এবং এপেক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী সংলাপের সভাপতিত্ব করেন। তিনি সমাপনী বক্তব্যে বলেন, অংশগ্রহণমূলক সামাজিক সংলাপের উদ্যোগ নেয়ার দায়িত্ব সরকারের।

সংলাপে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন (এনজিডব্লিউএফ)-এর সভাপতি ও বিলস উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমিরুল হক আমিন, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ও বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েল প্রমুখ।

এমএএস/এএএইচ/এএসএম