লকডাউন : ব্যাংকে টাকা তোলার হিড়িক
করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে বুধবার (১৪ এপ্রিল) থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। রফতানিমুখী শিল্প কারখানা ছাড়া সবকিছুই এ সময়ের মধ্যে বন্ধ থাকবে। এ বিধিনিষেধের আওতায় রয়েছে আর্থিক প্রতিষ্ঠানও। ফলে লকডাউনে বন্ধের আগের দিন টাকা উত্তোলনের হিড়িক পড়েছে ব্যাংকগুলোতে। ব্যাংকের শাখাগুলোয় টাকা জমা কিংবা ইউটিলিটি বিল পরিশোধের তুলনায় উত্তোলন হচ্ছে কয়েকগুণ বেশি।
মঙ্গলবার (১৩ এপ্রিল) রাজধানীর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখা ঘুরে এমন অবস্থা দেখা গেছে।
একাধিক ব্যাংকের শাখায় গিয়ে দেখা যায়, এদিন ব্যাংক খোলার পরপরই শাখাগুলোতে ভিড় জমান গ্রাহকরা। বেশিরভাগ শাখায় গ্রাহকের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। অন্যদিকে গ্রাহকের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ব্যাংক কর্মীদের। অনেক শাখাতেই অতিরিক্ত ভিড়ে উপেক্ষিত হচ্ছে শারীরিক দূরত্ব। তবে ব্যাংকের শাখায় প্রবেশের সময় থার্মাল থার্মোমিটার দিয়ে গ্রাহকের তাপমাত্রা পরিমাপ করা হচ্ছে।
একই অবস্থা দেখা গেছে এটিএম বুথগুলোতেও। সেখানেও স্বাভাবিক সময়ে তুলনায় বেশি গ্রাহকের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। তবে শাখার চেয়ে তুলনামূলক এটিএম বুথগুলোতেই বেশি স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে। একসঙ্গে একাধিক গ্রাহককে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না বুথ বা ফাস্ট ট্র্যাকে। ঢোকার সময় হাত-পায়ে দেয়া হচ্ছে জীবানুণাশক।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ ব্যাংক লেনদেন শুরুতেই গ্রাহকের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই ব্যাংকের প্রবেশ করতে চাচ্ছেন। তবে মাস্কবিহীন ও হ্যান্ড স্যানিটাইজ ছাড়া কাউকেই ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
আর গ্রাহকরা বলছেন, কাল (বুধবার) থেকে কঠোর লকডাউন হচ্ছে, কবে নাগাদ শেষ হবে কিছুই জানি না। নিজেদের স্বাস্থ্য ও নিত্যপণের কথা মাথায় রেখে নগদ টাকা হাতে রাখা চাই।
মেহেদি হাসান নামে সোনালী ব্যাংকের এক গ্রাহক জানান, ‘লকডাউনে ব্যাংক খোলা না রাখায় এক ধরনের ভোগান্তি তৈরি হচ্ছে। সবাই ব্যাংকমুখী হচ্ছেন, সবারই টাকার প্রয়োজন। কে কখন অসুস্থ হচ্ছেন তাই নগদ টাকা সবাই কাছে রাখতে চান।’
একই কথা জানান ব্যাংক এশিয়ার গ্রাহক আয়েশা। তিনি বলেন, ‘লকডাউনে পেট তো চলবে, তাকে খাবার দিতে হবে। সবকিছু বন্ধ হলেও খাদ্যপণ্যের দোকান খোলা, টাকা না থাকলে কীভাবে কিনব? এজন্য বাড়তি কিছু টাকা সাথে রাখতে চাই। জানি না কতোদিন এ লকডাউন থাকে।’
লকডাউনের মেয়াদ এরপরে আরও বাড়বে কিনা কেউই বলে পারছেন না। আর এরই মাঝে নিজের কাছে নগদ টাকা রাখতে ব্যাংকমুখী হতে শুরু করেছেন গ্রাহকরা। সাধারণ গ্রাহকরা বলছেন, নিতপণ্যের বাজার খোলা থাকলেও ব্যাংক বন্ধ থাকবে। সে সময় প্রয়োজনীয় খরচের জন্য টাকা হাতে রাখতে চাই।
ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বুধবার থেকে কঠোর লকডাউনের কথা ভেবে অনেকেই আগেভাগেই ব্যাংকের কাজ সেরে রাখছেন। অনেকেই বকেয়া ইউটিলিটি বিল পরিশোধ করছেন। তবে টাকা জমার চেয়ে টাকা উত্তোলনই বেশি হচ্ছে আজ।
ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, লকডাউনে ব্যাংক লেনদেন বন্ধ থাকবে তাই গ্রাহকরা আজ ব্যাংকে ভিড় করছেন। কী পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ শুধু টাকা উত্তোলনই হচ্ছে। গত কয়েকমাসে এতো উত্তোলন দেখিনি যেটা সকালের শুরুতেই হচ্ছে। আমরা বিকেল ৩টা পর্যন্ত সেবা দেব। হয়ত পুরো সময়টাই গ্রাহকের ভিড় থাকবে।
ডাচ্ বাংলা ব্যাংক ফকিরাপুল এটিএম বুথের এডিসি অনুপ দত্ত জানান, গ্রাহকের চাহিদামতো এটিএম বুথ থেকে তারা নিজেরাই টাকা উত্তোলন করছেন। তবে আমরা চেষ্টা করছি স্বাস্থ্যবিধি মানতে। হাত ও পা জীবানুণাশক করে বুথের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হচ্ছে। তবে বুথে নগদ টাকা জমা আপাতত নেয়া হচ্ছে না, শুধু উত্তোলন হচ্ছে।
ইএআর/এসএস
সর্বশেষ - অর্থনীতি
- ১ ৫ মাসে এক টাকাও খরচ করতে পারেনি স্বাস্থ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
- ২ মিডল্যান্ড ব্যাংক ও সেবা ফিনটেক লিমিটেডের মধ্যে এমওইউ সই
- ৩ বিদ্যুৎ বিভাগের অবকাঠামো উন্নয়নে ২৭ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে এআইআইবি
- ৪ ৩ বছরে দারিদ্র্যসীমার নিচে দেশের আরও সাড়ে ৭৮ লাখ মানুষ
- ৫ উন্নয়নে গতি নেই, ৫ মাসে এডিপি বাস্তবায়ন ১২ দশমিক ২৯ শতাংশ