করোনায় রফতানি বাণিজ্যে সম্ভাবনা দেখাচ্ছে ‘মাস্ক’
মহামারি করোনায় ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দার কারণে কমেছে অনেক পণ্যের চাহিদা। বিপরীতে ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। নতুন নতুন ক্রয়াদেশ আসছে, ফলে সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে দেশের তৈরি পোশাক খাতে। স্থানীয় বাজারের বিপুল চাহিদা পূরণ করে ‘মাস্ক’ ব্যাপক হারে রফতানি হচ্ছে বিশ্ববাজারে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, মহামারি করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে বিশ্বব্যাপী বেড়েছে সুরক্ষাসামগ্রীর চাহিদা। বিভিন্ন দেশ থেকে এসব পণ্যের ক্রয়াদেশ আসছে। নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হওয়ায় অনেকে এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছেন। ফলে কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি দিনদিন বাড়ছে এ খাতের রফতানি আয়।
তৈরি পোশাক শিল্পের মালিকদের সংগঠন- বিজিএমইএ সূত্র জানায়, চলতি বছরের (মার্চ-জুলাই) পাঁচ মাসে দুই কোটি ৬৯ লাখ ডলারের মাস্ক রফতানি করেছে বাংলাদেশ। গত বছরের একই সময়ে রফতানি হয়েছিল ২৭ লাখ ডলারের মাস্ক। এ হিসাবে চলতি বছর মার্চ থেকে জুলাই সময়ে মাস্কের রফতানি বেড়েছে ৮৮৩ শতাংশ।
বিজিএমইএ বলছে, চলতি বছরের জুনে এক কোটি নয় লাখ মাস্ক রফতানি হয়েছে। পরের মাস জুলাইয়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক কোটি ২৪ লাখে। গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের জুলাইয়ে মাস্ক রফতানি বেড়েছে ১১১৭ শতাংশ।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ’র তথ্য অনুযায়ী, প্রচলিত বাজারের মধ্যে মাস্ক রফতানি বেশি হারে বেড়েছে কানাডায়। মোট রফতানির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ অর্থাৎ ৫০ লাখ ডলারের মাস্ক নিয়েছে দেশটি। আগের অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ডলার। দেশটিতে সার্বিক পোশাক রফতানি ২৬ শতাংশ কমলেও মাস্কের এ চাহিদায় বড় সম্ভাবনা দেখছেন উদ্যোক্তারা।
জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপের সব দেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রেও মাস্কের চাহিদা বেড়েছে কয়েকগুণ।
ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বাজার গবেষণা ও কনসালটিং কোম্পানি- গ্র্যান্ড ভিউ রিসার্চের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীর বাজার ছিল পাঁচ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের। ২০২৭ সালে সেটি বেড়ে আট হাজার ৪০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। অনেক নতুন নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান এ খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে।
আদমজী রফতানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকায় (ইপিজেড) ব্যক্তিগত সুরক্ষাসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে এক কোটি ৮০ লাখ ডলার বা ১৫২ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে দেশের বেসরকারি খাতের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে রয়েছে মেসার্স বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড।
রফতানিমুখী দেশীয় মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানটি বার্ষিক ৮৫০ মেট্রিক টন পিপিই (যেমন- সার্জিক্যাল ফেস মাস্ক, ফেস মাস্ক কেএন-৯৫ ও এন-৯৫, সার্জিক্যাল হ্যান্ড গ্লাভস, সু কাভার, মপ ক্যাপ, মেডিকেল গাউন, স্যানিটারি ন্যাপকিন, ডায়াপার, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ইত্যাদি) উৎপাদন করবে। সম্প্রতি বেপজার সঙ্গে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান মেসার্স বঙ্গ প্লাস্টিক ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। এখানে প্রায় দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে। উৎপাদিত পণ্য রফতানি করবে প্রতিষ্ঠানটি। যার মূল টার্গেট থাকবে ইউরোপ ও যুক্তরষ্ট্রের বাজার।
এসআই/এএইচ/এমএআর/এমএস