টানা ১৩ সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার
আরও একটি সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার মধ্য দিয়ে পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। গত সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। ফলে বেড়েছে সবকটি মূল্য সূচক। সেই সঙ্গে বেড়েছে বাজার মূলধন। এর মাধ্যমে টানা ১৩ সপ্তাহ ঊর্ধ্বমুখী থাকল দেশের শেয়ারবাজার।
গত সপ্তাহজুড়ে সূচক ও বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গড়ে প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার উপরে লেনদেন হয়েছে। গত সপ্তাহে বাজারটিতে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ। বিপরীতে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে প্রায় দুই শতাংশ।
গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৬ হাজার ৬৯১ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থই হলো তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছ। সপ্তাহ শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬৩২ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯৪১ কোটি টাকা।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৯৩ দশমিক ৩৬ পয়েন্ট বা এক দশমিক ৮৬ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা ১৩ সপ্তাহ সূচকটি বাড়ল। ১৩ সপ্তাহের টানা এই উত্থানে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক বেড়েছে এক হাজার ১৪১ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি টানা ১৩ সপ্তাহ বেড়েছে ডিএসইর শরিয়াহ সূচক। শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ৪ দশমিক ৫৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৯ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা ১৩ সপ্তাহের উত্থানে সূচকটি বাড়ল ২৪৫ পয়েন্ট।
বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইর আরেকটি সূচক ডিএসই-৩০, এ সূচকটি গত সপ্তাহে বেড়েছে ২১ দশমিক ৩৭ পয়েন্ট বা এক দশমিক ২৩ শতাংশ। এর মাধ্যমে সূচকটি টানা ৯ সপ্তাহ বাড়ল। টানা ৯ সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ৩৯২ পয়েন্ট।
এদিকে, গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২১২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৯টির। আর ২৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১২৭ কোটি ৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় এক হাজার ৫৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৬৮ কোটি ১১ লাখ টাকা বা ৬ দশমিক ৪৩ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৫ হাজার ৬৩৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয় ৫ হাজার ২৯৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। সে হিসাবে মোট লেনদেন বেড়েছে ৩৪০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মোট লেনদেনে ‘এ’ গ্রুপ বা ভালো কোম্পানির অবদান ছিল ৭৯ দশমিক ২৯ শতাংশ। এছাড়া ‘বি’ গ্রুপের অবদান ১৬ দশমিক ১৬ শতাংশ, ‘জেড’ গ্রুপের ২ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং ‘এন’ গ্রুপের এক দশমিক ৭৮ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ডিএসইর মূল বাজারে টাকার অঙ্কে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হওয়া ১০ কোম্পানির মধ্যে রয়েছে- বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস, বেক্সিমকো, ব্র্যাক ব্যাংক, ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন, ওরিয়ন ইনফিউশন, ডেল্টা ব্র্যাক হাউজিং, ওরিয়ন ফার্মা, সিটি ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক এবং মুন্নু সিরামিক।
এমএএস/এফআর/জেআইএম