সীমা লঙ্ঘন করে ঋণ দিয়েছে ১১ ব্যাংক
ঋণ আমানত অনুপাত সীমা (এডিআর) বাড়ানোর পরও আইন লঙ্ঘন করে ঋণ বিতরণ করেছে সরকারি-বেসরকারি ১১ বাণিজ্যিক ব্যাংক। এর মধ্যে অনেক ব্যাংক নতুন আমানতের তুলনায় দ্বিগুণ হারে ঋণ বিতরণ করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত জুন শেষে হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জানা গেছে, ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী ঋণ ঠেকাতে টানা পাঁচবার ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) সমন্বয়ের সময়সীমা বাড়ায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তারপরও অনেক ব্যাংক তা সমন্বয় করতে ব্যর্থ হয়। পরে মহামারি করোনায় অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলা ও ব্যাংকগুলোর ঋণপ্রবাহ বাড়াতে এডিআর ২ শতাংশ বাড়িয়ে দেয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা কেন্দ্রীয় ব্যাংক, যা গত ১৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এ সুবিধা পাওয়ার পরও ১১টি ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারিত সীমার ওপরে রয়েছে।
পরিসংখ্যানের তথ্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের এডিআর ১১২ শতাংশের ওপরে রয়েছে, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের ৯২ দশমিক ৯৭ শতাংশ, বেসরকারি এবি ব্যাংকের ৯৩ দশমিক ৭০ শতাংশ, এক্সিম ব্যাংক ১০১ দশমিক ২৩ শতাংশ, ন্যাশনাল ব্যাংক ৯৮ দশমিক ৭২ শতাংশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ৯৩ শতাংশ এবং ওয়ান ব্যাংকের এডিআর ৮৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ। চতুর্থ প্রজন্মের পদ্মা ব্যাংকের (ফারমার্স ব্যাংক) এডিআর ১০২ দশমিক ০৬ শতাংশ, এনআরবি গ্লোবাল ৯৫ দশমিক ২৩ শতাংশ, ইউনিয়ন ব্যাংকের ৯৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ এবং মিডল্যান্ড ব্যাংকের ৯০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ও বেসরকারি প্রিমিয়ার ব্যাংকের (ইসলামী শরীয়াভিত্তিক ইউনিট) ঋণ বিতরণ নির্ধারিত সীমার ওপরে রয়েছে। এর মধ্যে অগ্রণী (ইসলামী) ১৪৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ এবং প্রিমিয়ার ব্যাংকের ১২২ দশমিক ৫৩ শতাংশ।
একটি ব্যাংক আমানতের বিপরীতে কী পরিমাণ ঋণ দিতে পারবে তা নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ নির্দেশনা অনুযায়ী, আমানত অগ্রিম হার (এডিআর) প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো জন্য ৮৭ শতাংশ এবং ইসলামী শরীয়াভিত্তিক ব্যাংক ও প্রচলিত ধারার ব্যাংকের ইসলামী শরীয়াভিত্তিক কার্যক্রমের জন্য এডিআর ৯০ থেকে বাড়িয়ে ৯২ শতাংশ করা হয়েছে, যা চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল থেকে কার্যকর রয়েছে। অর্থাৎ প্রচলিত ধারার ব্যাংকে ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে ঋণ বিতরণ করতে পারবে সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা এবং ইসলামী ব্যাংকগুলো দিতে পারবে ৯২ টাকা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, এখন ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে পারছে না। তারপরও কিছু ব্যাংক সীমার অতিরিক্ত ঋণ দিয়েছে। তারা আসলে কোন খাতে যাচ্ছে তা দেখার বিষয়। তাদের ঋণ যদি উৎপাদনশীল ও এসএমই খাতে যায়, তাহলে ভালো। কিন্তু অনুৎপাদনশীল খাতে যায় তাহলে যাচাই-বাছাই করতে হবে। কারণ এডিআর সীমার অতিরিক্ত ঋণ যদি ধারাবাহিক বাড়তে থাকে তাহলে ব্যাংক খাতে সংকট সৃষ্টি হবে। তাই মহামারির এ সময় যেন অনুৎপাদনশীল খাতে যেন অতিরিক্ত ঋণ না যায় সেই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নজরদারি বাড়ানো উচিত বলে পরামর্শ দেন তিনি।
এসআই/এমএসএইচ/এমএস
সর্বশেষ - অর্থনীতি
- ১ সরকারের ১০০ দিনের অর্জন প্রত্যাশা মাফিক হয়েছে
- ২ এফডিআই হিটম্যাপ তৈরি করছে বিডা, নেওয়া হচ্ছে বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা
- ৩ এস আলম-বেক্সিমকো যেই হোক, কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হতে দেবো না
- ৪ আলু সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ১০ জেলায় স্মারকলিপি ও মানববন্ধন সিসিএসের
- ৫ ধীরগতির প্রকল্পে বরাদ্দ কমবে, গুরুত্বপূর্ণগুলোতে অগ্রাধিকার