ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

ইন্টারনেট বিলের ওপর অতিরিক্ত ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে বিবৃতি

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:৪০ এএম, ২৬ জুলাই ২০২০

চলতি (২০২০-২১) অর্থবছরের বাজেটে ইন্টারনেটের ওপর অতিরিক্তি ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ৪৪ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি বিবৃতি দিয়েছেন। শনিবার (২৫ জুলাই) গণমাধ্যমে এই বিবৃতি পাঠানো হয়।

বিশিষ্টজনরা হলেন- অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা স্কুল অব ইকোনোমিক্সের প্রতিষ্ঠাতা ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দীন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, কথা সাহিত্যিক ও বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান সেলিনা হোসেন, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাইখ সিরাজ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, বাংলাদেশ ফেডারেশন অব ওমেনের প্রেসিডেন্ট রোকেয়া আফজাল রহমান, বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা রাশেদা কে. চৌধুরীসহ ৪৪ জন।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ইন্টারনেটের ওপর কর কমানোর পরিবর্তে বাড়ানো হয়েছে। বাজেটে দুই ধাপে (ব্যান্ডউইথ পাইকারি কেনা এবং খুচরা বিক্রির জন্য) ১৫% হারে ভ্যাট আরোপ করার ফলে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী শিক্ষার্থীদের প্রায় ৩২ দশমিক ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হবে। ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী সংগঠনগুলোর দেয়া তথ্য অনুযায়ী যেসব শিক্ষার্থী আগে গড়ে ১ হাজার টাকা মাসিক ইন্টারনেট বিল দিতেন, একই সেবা নেয়ার জন্য এখন তাদেরকে ১৩শ থেকে ১৪ টাকা গুনতে হবে। এটা অবশ্যই ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পরিপন্থী।

এতে আরও বলা হয়, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সকল খাত ঝুঁকির মধ্যে পড়বে এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জন পিছিয়ে যাবে। এমনকি এ পর্যন্ত শিক্ষাক্ষেত্রে বাংলাদেশের সব অর্জন হোঁচট খাওয়ার আশংকা বৃদ্ধি পাবে। তদুপরি ২০৪১ সালের জাতীয় উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের কার্যক্রমগুলোও গতি হারাতে পারে। সুবিধাভোগী এবং সুবিধা বঞ্চিতদের মধ্যে ক্সবষম্য আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আলামত এখনই দেখা যাচ্ছে। এটি আমাদের সংবিধান পরিপন্থী। মুজিব বর্ষে এমনটি হওয়া কখনই কাম্য নয়।

বিবৃতিতে তারা বলেছেন, আমরা আশা করছি সরকার বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিনামূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করবেন। তবে আমরা জানি নিরবচ্ছিন্নভাবে এই সেবা নিশ্চিত করতে বেশ কিছুদিন সময় লাগতে পারে। তাই অন্তরবর্তীকালে ইন্টারনেট বিলের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত ভ্যাট মওকুফ করে এবং মোবাইল ফোনের কল রেটের ওপর মূল্য ছাড় দিয়ে সরকার প্রযুক্তি সেবা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুয়ের কাছে পৌঁছে দেয়ার পথ সুগম করবেন, এটা আমাদের জোর দাবি। আমাদের নীতি নির্ধারকরা এই দাবি পূরণের মাধ্যমে তাদের জনবান্ধব রাজনৈতিক অঙ্গিকারের প্রতিফলন ঘটাবেন।

বিবৃতিতে তারা বলেন, বর্তমান বিশ্ব ক্রমাগত তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হয়ে উঠছে। বিশেষ করে করোনা মহামারির কারণে শিক্ষাও ক্রমশ তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর হচ্ছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ডিজিটাল ডিভাইস ও ইন্টারনেট ছাড়া সব ধরনের শিক্ষার্থীর শিখন প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা কঠিন হবে। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এবং নতুন প্রজন্মের মেধা ও সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হলে ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকল্প নেই। ঠিক এ সময় সরকার কর্তৃক তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষ করে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেটের ওপর আরোপিত অতিরিক্ত কর নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। কোভিড-১৯ পরবর্তী সময়ে শিক্ষা কার্যক্রম এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, ট্যাবলেট ও স্মার্টফোন সরবরাহ নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

এমএইচএম/এমএসএইচ