ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

সিএমএসএমই খাতে ঋণ বিতরণ বাড়াতে বিশেষ ছাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:১১ এএম, ২২ জুলাই ২০২০

>> উদ্যোক্তাদের খেলাপি করার সময়সীমা বাড়ল
>> ১৮ মাস ঋণ শোধ না করলেও খেলাপি নয়
>> আড়াই বছর অপরিশোধিত থাকলে হবে ঋণ মন্দ
>> ঋণের বিপরীতে কমল প্রভিশন রাখার হার

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশের ক্ষতিগ্রস্ত কুটির, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (সিএমএসএমই) খাতে ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করতে বিশেষ ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ খাতের উদ্যোক্তাদের ঋণ খেলাপি করার সময়সীমা বাড়িয়ে দেয় হয়েছে। পাশাপাশি কমিয়ে দেয়া হয়েছে খেলাপি ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণের হার।

বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার মঙ্গলবার জারি করে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংশ্লিষ্টরা জানান, মহামারি করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত সিএমএসএমই খাত টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ২০ হাজার কোটি টাকার প্যাকেজের বিশেষ ঋণ সুবিধার ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কিন্তু ঋণ বিতরণে খরচ বেশি, আয় কম, জামানতের অভাবসহ বিভিন্ন অজুহাতে ঋণ দিতে ব্যাংকগুলোর অনীহা দেখা যাচ্ছে। এসব বিবেচনায় ব্যাংকগুলোকে ঋণ বিতরণে উৎসাহিত করতে নীতিমালা শিথিল করা হয়েছে।

এতে করে ব্যাংকগুলোর এ খাতে খেলাপি ঋণ কমে যাবে। খেলাপি ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোর প্রভিশন খাতে যে অর্থ আটকে আছে তা বাজারে চলে আসবে। এ ছাড়া নতুন করে এ খাতে ঋণখেলাপি হতে বেশি সময় লাগবে। একই সঙ্গে খেলাপির বিভিন্ন শ্রেণিতে যেতেও বেশি সময় লাগবে। পাশাপাশি খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখার হারও কমানো হয়েছে। ফলে ব্যাংকগুলোর নিজস্ব তহবিলের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এতে ব্যাংকগুলোর ঋণ বিতরণের সক্ষমতা বাড়বে।

ঋণখেলাপি হলে সময় অনুযায়ী তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো- নিম্নমান (সাব স্ট্যান্ডার্ড ), সন্দেহজনক (ডাউটফুল) ও মন্দ ঋণ (ব্যাড ডেবট)। নতুন নীতিমালাটি শুধু কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের জন্য প্রযোজ্য হবে। এর বাইরে অন্যান্য খাতে প্রচলিত নীতিমালা বহাল থাকবে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, এখন থেকে সিএমএসএমই খাতের যে কোনো ঋণ ৬ থেকে ১৮ মাস মেয়াদোত্তীর্ণ হলে তা নিম্নমান বা সাব স্ট্যান্ডার্ড মানে শ্রেণিকৃত হবে। এতদিন অন্যসব খাতের মতো সিএমএসএমই ঋণও তিন থেকে ৯ মাস মেয়াদোত্তীর্ণ হলে নিম্নমান বিবেচিত হত।

আর এখন থেকে সিএমএসএমই খাতের যে কোনো ঋণ ১৮ থেকে ৩০ মাস অপরিশোধিত হলে তা সন্দেহজনক বা ডাউটফুল হিসেবে বিবেচিত হবে। যা এতদিন অন্যসব খাতের মতো এই খাতের ঋণও ৯ থেকে ১২ মাস পরিশোধ না করলে তা সন্দেহজনক মানে শ্রেণিকৃত করা হত।

এ ছাড়া এখন থেকে সিএমএসএমই খাতের ঋণ ৩০ মাসের বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ ঋণ মন্দ বা কুঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে, যা এতদিন অন্যান্য খাতের মতো ১২ মাসের বেশি অনাদায়ী থাকলে তা ক্ষতিজনক মানে শ্রেণিকরণ হিসেবে বিবেচনা করা হত।

ব্যাংক কোম্পানি আইনে নিয়মিত ঋণের বাইরে ঋণ শ্রেণিকরণের (খেলাপি ঋণ) তিনটি পর্যায় রয়েছে। এসব শ্রেণিমান বিবেচনায় প্রতিটি ব্যাংকের মুনাফা থেকে নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে হয়। নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতি রেখে কোনো ব্যাংক লভ্যাংশ দিতে পারে না।

ব্যাংকগুলোকে সিএমইসএমই খাতে ঋণ দিতে আগ্রহী করতে ঋণ খেলাপি হওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর পাশাপাশি সিএমএসএমই খাতের নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণেও বড় ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নীতিমালা অনুযায়ী সিএমএসএমই খাতের নিয়মিত ঋণের বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে দশমিক ২৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। এটি অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে, যা অন্যসব খাতের নিয়মিত ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ১ শতাংশ।

এখন থেকে সিএমএসএমই খাতের সাব স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণের হার ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। আগে অন্যসব খাতের মতো এক্ষেত্রে ২০ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হত।

এখন থেকে সিএমএসএমই খাতের সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে হবে ২০ শতাংশ। এতদিন যেখানে ৫০ শতাংশ রাখতে হত। তবে মন্দ মানে শ্রেণিকৃত ঋণ বা কুঋণের বিপরীতে আগে প্রভিশনের হার ছিল শতভাগ। নতুন নিয়মেও তা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

এসআই/জেডএ/জেআইএম