কোরআনের আয়াত দিয়ে করোনাকালীন বাজেট বক্তব্য শেষ করবেন অর্থমন্ত্রী
>> করোনা থেকে মানুষের জীবন রক্ষায় থাকছে অগ্রাধিকার
>> মন্দা কাটিয়ে পূর্বের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ফেরার আশাবাদ
>> বাস্তবায়নের সক্ষমতা না থাকায় সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়নি স্বাস্থ্যখাতে
বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) মধ্যেই বৃহস্পতিবার (১১ জুন) ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। মহামারির প্রেক্ষাপটে বাজেট বক্তব্যেও ভিন্নতা রাখছেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বাজেট বক্তৃতায় মানুষের জীবন রক্ষাকে অগ্রাধিকার দেবেন। পাশাপাশি মহামারি কাটিয়ে ওঠার জন্য পবিত্র কোরআনের সুরা আল বাকারার ১৫৫ নম্বর আয়াতের উদ্ধৃতি দিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের স্মার্ট বাজেটের বক্তব্য শেষ করবেন।
আগামী ১১ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী তার দ্বিতীয় যে বাজেট উপস্থাপন করতে যাচ্ছেন তার খসড়া বক্তব্যে এ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বাজেট বক্তব্যের খসড়া অনুযায়ী অর্থমন্ত্রী সুরা আল-বাকারার ১৫৫ নম্বর আয়াত থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তব্য শেষ করবেন। যে আয়াতের অর্থ হচ্ছে ‘অবশ্যই আমি তোমাদিগকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, মাল ও জানের ক্ষতি এবং ফল-ফসল বিনষ্টের মাধ্যমে। এবং রোগীকে সুসংবাদ দাও।’
বাজেট বক্তব্যের শেষভাগে অর্থমন্ত্রী আরও বলবেন, ‘মহান আল্লাহ তায়ালা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তার সৃষ্টির কোনোরূপ ক্ষতিসাধন করবেন না। তাই তিনি শিগগির আমাদের মহামারি থেকে রক্ষা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে নেবেন।’
বাজেট বক্তৃতায় তিনি আরও বলবেন, ‘করোনাভাইরাসের এই মহামারিতে এবারের সময়টা একেবারেই ভিন্ন। এটা গতানুগতিক বাজেট নয়। এটা একটা আপৎকালীন বাজেট।’
মন্ত্রণালয় সূত্র আরও জানা গেছে, বাজেট বক্তব্যে তিনি শুধু কোরআনের বাণী শোনাবেন এমনটি নয়। এ করোনাকালীন সময়ে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হচ্ছে মানুষের জীবন রক্ষা করা। তাই মহামারির সংক্রমণ থেকে মানুষকে বাঁচানোর বিষয়েই সবচেয়ে গুরুত্ব দেবেন অর্থমন্ত্রী।
এবারের বাজেট বক্তব্যের শেষাংশে উপসংহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে সৃষ্ট দেশের এই লগ্নে আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার মানুষকে এই ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা করা। পাশাপাশি মানুষের অন্ন-বস্ত্রের জোগানের জন্য দেশের অর্থনীতির চাকাও সচল রাখা। এই সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিনিয়ত প্রতিটি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছেন তদের বিশ্বাস ও মনোবলের জায়গাটি অটুট রাখতে। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় রচিত আমরা অর্থনৈতিক মন্দা কাটিয়ে পূর্বের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যতে কাঙিক্ষত অর্থনৈতিক ভিত রচনা করব।’
আগামী বাজেটের আকার পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনা মহামারির প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেটে স্বাস্থ্যসেবা খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেয়ার কথা থাকলেও বাজেট বাস্তবায়নের সক্ষমতা না থাকায় তা দেয়া হয়নি। তবে চলতি বছরের তুলনায় পাঁচ হাজার ৭৭৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বাড়িয়ে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ২৫ হাজার ৭২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। শীর্ষ বরাদ্দের পঞ্চম অবস্থানে রয়েছে স্থাস্থ্যসেবা বিভাগ।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অনুকূলে নিয়মিত এ অর্থ বরাদ্দের পরও করোনাভাইরাসের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হচ্ছে বাজেটে, যা করোনাকালীন যেকোনো জরুরি পরিস্থিতিতে খরচ করা যাবে।
এমইউএইচ/এসআর/পিআর