ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

করোনায় ছুটিতেও ভ্যাট রিটার্নে রাজস্ব ৬২৮৩ কোটি টাকা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০১:২৭ পিএম, ১৬ এপ্রিল ২০২০

মাসিক ভ্যাট বা মূল্য সংযোজন কর জমা ‌নি‌তে সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল সীমিত আকারে খোলা ছিল ভ্যাট সার্কেল অফিস। এই সময়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এন‌বিআর) ২৫২টি ভ্যাট সার্কেলে ৩০ হাজার ৭৮১টি রিটার্ন জমা দি‌য়েছেন ব্যবসায়ীরা। এতে রাজস্ব আহরণ হ‌য়ে‌ছে ৬ হাজার ২৮৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

বৃহস্পতিবার (১৬ এ‌প্রিল) এনবিআর সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এর আ‌গে গত ১০ এপ্রিল সরকারঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যেও সীমিত আকারে ভ্যাট সার্কেল অফিসগুলো খোলা রাখার ওই সিদ্ধান্ত হয়। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত রিটার্ন দাখিল করেন ব্যবসায়ীরা। আইনি বাধ্যবাধকতা আর জরিমানা ছাড়াই রিটার্ন দাখিলে সহায়তার জন্য অফিস খোলা রাখা হয়।

এনবিআরের তথ্য বল‌ছে, দে‌শে এনবিআরের আওতাধীন বৃহৎ করদাতা ইউনিটসহ (এলটিইউ) ১২টি ভ্যাট কমিশনারেট এবং ২৫২টি ভ্যাট সার্কেল রয়েছে। যেখা‌নে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এক লাখ ৫৩ হাজার ৫৬৯টি। জরিমানা ছাড়া মাসিক ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সু‌বিধা‌র্থে চার দিন সীমিত আকারে অফিস খোলা রাখা হয়। এই সময়ে মোট ৩০ হাজার ৭৮১টি রিটার্ন জমা পড়ে। এর মধ্যে ম্যানুয়াল দাখিলপত্র ১০ হাজার ৯৯৫টি আর অনলাইনে দাখিলপত্র ১৯ হাজার ৭৮৬টি। চারদিনে মোট রাজস্ব আহরণ হয় ৬ হাজার ২৮৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।

এলটিইউসহ ১২টি কমিশনারেটের মধ্যে রাজস্ব আহরণে এগিয়ে এলটিইউ। এলটিইউতে চারদিনে মোট রিটার্ন দাখিল হয় ১২৬টি। আর রাজস্ব আহরিত হয় ৪ হাজার ১৯৯ কোটি ৭ লাখ টাকা।

এন‌বিআর সূত্র বল‌ছে, চার দি‌নের ম‌ধ্যে শেষ দিন বুধবার (১৫এ‌প্রিল) সারা দেশে রিটার্ন দাখিল হয় ১৭ হাজার ৫৬০টি। আর আহরিত রাজস্ব চার হাজার ৬০০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। এ ছাড়া তৃতীয় দিন মঙ্গলবার (১৪ এপ্রিল) রিটার্ন দাখিল হয় তিন হাজার ৬৮৩টি। আর রাজস্ব আহরিত হয় ২৮৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। দ্বিতীয়দিন সোমবার (১৩ এপ্রিল) ৫ হাজার ১৩টি ভ্যাট রিটার্ন দাখিল ও রাজস্ব আহরিত হয় এক হাজার ১৭০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আর প্রথমদিন রোববার (১২ এপ্রিল) চার হাজার ২৫১টি ভ্যাট রিটার্ন দাখিল হয়। আর রাজস্ব আহরিত হয় ৩৩৬ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

সূত্র জানায়, প্রতিটি সার্কেল অফিসে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার নির্দেশ কঠোরভাবে পালন করা হয়। এই সময়ে প্রতিটি সার্কেলে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধের সব ধরনের নিয়ম পালন করা হয়। বিশেষ করে কর্মকর্তারা পিপিই পরিধান করে রিটার্ন জমা নেন়। আর করদাতাদের প্রবেশে হাত ধোয়া, স্যানিটাইজার ব্যবহারের ব্যবস্থা রাখা হয়। জনসমাগম এড়াতে রিটার্ন দাখিল শেষে দ্রুত অফিস ত্যাগ করতে বলা হয়।

সরকারি নির্দেশনার কারণে ২৬ মার্চ থেকে প্রায় সব প্রতিষ্ঠান শাটডাউনে রয়েছে। কিন্তু নতুন মূসক আইন অনুযায়ী, প্রতিমাসের ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন জমা না দিলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। করদাতাদের জরিমানা এড়াতে ও আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় এনবিআর ৯ এপ্রিল ভ্যাট রিটার্নের বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে।

এতে বলা হয়, ‘ভ্যাট আইন অনুযায়ী প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সে লক্ষ্যে এনবিআর শুধু ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে সরকারি সাধারণ ছুটির সময়েও সীমিত আকারে ভ্যাট সার্কেল অফিসগুলো ১২ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।'

এ‌দি‌কে করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে জরিমানা ব্যতীত মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে ব্যবসায়ীরা। গত ৯ এপ্রিল ব্যবসায়ীদের পক্ষে এফবিসিসিআই সভাপতি এক চিঠিতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যানের কাছে এ দাবি জানান।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি ফজলে ফাহিম স্বাক্ষরিত এ চিঠিতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে অনেক ব্যবসায়ীর পক্ষে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়া সম্ভব হবে না বলে উল্লেখ করা হয়। তাই জরিমানা ব্যতীত ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা বাড়ানোর অনুরোধ জানা‌নো হয়।

উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের কারণে প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেয়া হয়েছিল। এরপর ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ এপ্রিল করা হয়। ছুটি তৃতীয় দফা বাড়িয়ে করা হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে চতুর্থ দফায় ছুটি বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়।

এসআই/জেডএ/জেআইএম