ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

করোনা: ঝুঁকি নিয়েও মাঠে ভোক্তা অধিদফতরের কর্মীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৮:৫১ পিএম, ০৯ এপ্রিল ২০২০

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের কারণে আতঙ্কে দিন কাটছে দেশের মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েও মাঠে রয়েছেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মীরা।

চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে প্রতিদিনই চলছে অভিযান। এতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন এক ঝাঁক তরুণ কর্মীবাহিনী। অদম্যের মতো ছুটছেন তারা ৮ বিভাগের ৬৪ জেলায়। যাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) বাবলু কুমার সাহা।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে সরকার ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে। টানা ছুটিতে ঘরবন্দী মানুষ। তবে জনসাধারণের সুবিধার্থে সাধারণ ছুটি চলাকালীন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ, সরবারহ নিশ্চিত ও ক্রেতা-বিক্রেতাদের সচেতনতা বাড়াতে আতঙ্ক উদ্বেগেও চলছে বিশেষ অভিযান। ভয়াবহ ঝুঁকির মধ্যেও তারা ছুটে চলছেন পাইকারি-খুচরা বিভিন্ন বাজারে। সচেতনতার মধ্য দিয়ে যথাসম্ভব নিশ্চিতে করা হচ্ছে ভোক্তার অধিকার।

jagonews24

এ বিষয়ে ভোক্তার অধিদফতরের সহকারী পরিচালক আব্দুল জব্বার মন্ডল জাগো নিউজকে বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির এই সময়ে ভোক্তা অধিদফতরের কর্মীদের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়েছে। তাই সরকারের আদেশ ও অধিদফতরের মহাপরিচালকের দিকনির্দেশনায় প্রতিদিন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য যৌক্তিক, স্বাভাবিক, স্থিতিশীল এবং ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে বাজারগুলোতে অভিযান করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ঝুঁকি নিয়েও আমরা (অধিদফতরের কর্মীরা) বন্ধের মধ্যে কাজ করছি। কারণ আমরা যদি মাঠে না থাকি তাহলে করোনা আতঙ্কের সময়ে এক শ্রেণির মুনাফালোভী অসৎ ব্যবসায়ী সুযোগ নেবে। অনৈতিকভাবে পণ্যের দাম বাড়ি দেবে। এ সুযোগ যেন সহজে না পায় এজন্যই স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যেও অভিযান চলছে। রাজধানীতের প্রতিদিন ছয় থেকে সাতটি টিমে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন পাইকারি ও খুচরা বাজারে অভিযান করছি। শুধু ঢাকা নয় দেশজুড়ে ৮ বিভাগের ৬৪ জেলায় অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের সতর্ক করা হচ্ছে। পাশাপাশি আইন অমান্যকারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নেয়া হচ্ছে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।

jagonews24

অধিদফতরের এ কর্মকর্তা জানান, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উৎসাহ দিতে সরাসরি মাঠে কাজ করছেন অধিদফতরের মহাপরিচালক। বিভিন্ন বাজারে নিজে উপস্থিত হয়ে তদারকি করছেন। নিজ বাসা (বাসাবো) এলাকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও তিনি নিয়মিত অফিস করছেন এবং প্রধান কার্যালয়, বিভাগীয় কার্যালয় এবং প্রতিটি জেলা কার্যালয়ে কর্মরত সহকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। অধিদফতরের সর্বোচ্চ পদে আসীন থেকেও মাঝে মধ্যে তিনি নিজে বাজার তদারকিতে যাচ্ছেন এবং ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের কথা শুনছেন এবং তাদেরকে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। সৎ, কর্মনিষ্ঠ, চৌকস ও দক্ষতায় চলছে কার্যক্রম।

তিনি বলেন, অভিযান চলাকালে হ্যান্ডমাইকে চাল, ডাল, রসুন, আদা, পেঁয়াজ, মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তালিকা যথাযথভাবে প্রদর্শন করা এবং প্রদর্শনকৃত মূল্য অপেক্ষা অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয় না করা, করোনাকে কেন্দ্র করে অতি মুনাফা লাভ থেকে বিরত থাকা জন্য ব্যবসায়ীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এদিকে প্রতিদিনের মত বৃহস্পতিবার (৯ এপ্রিল) রাজধানীর বাজারগুলো অভিযানে নামে ভোক্তা অধিদফতর। সংস্থাটির পরিচালক (প্রশাসন) শামীম আল মামুনের নেতৃত্বে অভিযান পরিচালনা করেন অধিদফতরের উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, মো. মাসুম আরেফিন, আফরোজা রহমান, বিকাশ চন্দ্র দাস এবং সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মন্ডল, ফাহমিনা আক্তার, তাহমিনা বেগম, রোজিনা সুলতানা ও জনাব ইন্দ্রানী রায়।

jagonews24

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ইন্দিরা রোড কাঁচা বাজার, ইন্দিরা রোড আগোরা,পশ্চিম রাজাবাজার কাঁচা বাজার, শুক্রাবাদ বাজার, পান্থপথ বউবাজার, কাঠালবাগান বাজার, মহাখালী, বনানী, রামপুরা, গুলশান-২ বাজার, পলাশী বাজার, নিউ মার্কেট বাজারে তদারকিমূলক অভিযান পরিচালিত করেন। এ সময় নিত্যপ্রয়োজনীয় মোড়কবিহীন পণ্যের মূল্য তালিকা সংরক্ষণ না করা ও ধার্যকৃত মূল্যের অধিক মূল্যে পণ্য বিক্রয় করার অপরাধে কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯ অনুযায়ী জরিমানা আরোপ ও আদায় করা হয়।

মহানগরের চারটি স্থানে টিসিবির ন্যায্য মূল্যের পণ্য বিক্রয় (ট্রাকসেল) ও একটি খাদ্য অধিদফতরের পণ্য বিক্রয় (ট্রাকসেল) তদারকি করা হয়। সরকার ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য সকলকে অনুরোধ করা হয়।

এসআই/এমএসএইচ/এমকেএইচ