বিশ্ব মন্দা গ্রাস করবে না ভারত-চীনকে, বলছে জাতিসংঘ
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বড় ক্ষতির মুখে পড়তে যাচ্ছে বিশ্ব অর্থনীতি। জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, এই মহামারি কঠিন অর্থনৈতিক মন্দা এনে দিতে পারে, যা অতীতে দেখা যায়নি।
প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের ধাক্কায় বিশ্বজুড়ে আর্থিক মন্দার পূর্বাভাস আগেই দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)৷ আর এই মন্দার আঁচ কমবেশি সব দেশের উপরেই প্রভাব ফেলবে। তবে কিছুটা স্বস্তির খবর রয়েছে ভারত ও চীনের জন্যে।
জাতিসংঘের বাণিজ্য শাখার এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, করোনাভাইরাসের ধাক্কায় বিশ্বের অধিকাংশ উন্নয়নশীল দেশ মন্দার মুখোমুখি হলেও চীন ও ভারতে তার প্রভাব তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম পড়বে।
বিশ্ব জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ মানুষই উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বাস করেন। এই পরিস্থিতিতে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ভয়াবহ মন্দার গ্রাস থেকে বের করে আনতে ২.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণার চেষ্টা করছে জাতিসংঘের বাণিজ্য শাখা৷
জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সম্মেলনের (ইউএনসিটিএডি) প্রতিবেদনে আশঙ্কা করা হয়েছে, পণ্য রফতানি নির্ভর দেশগুলোতে আগামী দুই বছরে দুই থেকে তিন ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিদেশি বিনিয়োগ কমবে। সেই কারণে বিশ্বের দুই তৃতীয়াংশ জনসংখ্যা যে দেশগুলোতে বসবাস করে, তাদের এই মন্দার গ্রাস থেকে রক্ষা করতে যতটা সম্ভব উদ্যোগ নিতে হবে।
জি-২০ সদস্য দেশগুলো যেভাবে আর্থিক মন্দার সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্যাকেজ ঘোষণা করেছে, এই প্রতিবেদনে তারও প্রশংসা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বলা হয়েছে, তা সত্ত্বেও গোটা বিশ্ব অর্থনীতিই এবার মন্দার কবলে পড়তে যাচ্ছে৷ বিশ্ব অর্থনীতিতে আয়ের পরিমাণ কয়েক ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তবে চীন ও ভারত এই মন্দার প্রকোপের বাইরে থাকতে পারে।
যদিও কীসের ভিত্তিতে আর্থিক মন্দার কবল থেকে চীন ও ভারতের বাইরে থাকার সম্ভাবনার কথা বলা হয়েছে, ওই প্রতিবেদনে বিস্তারিত বলা হয়নি। চীনের বাইরে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে গত দুই মাসে কীভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে মুদ্রার অবমূল্যায়ন, পর্যটন রাজস্ব হ্রাস, মূলধন ঘাটতি, রফতানি কমে যাওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাও উঠে এসেছে এই প্রতিবেদনে।
এদিকে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস বলেছেন, করোনা মহামারির কারণে বিশ্বে চাকরি হারাতে পারেন প্রায় ২৫ মিলিয়ন (আড়াই কোটি) মানুষ। একই সঙ্গে, বৈশ্বিক বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ কমে যাবে ৪০ শতাংশ। বর্তমান করোনাভাইরাস মহামারিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
এমএসএইচ/জেআইএম