ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

দুইদিনে পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১১:২৩ এএম, ২০ মার্চ ২০২০

আবার অস্থির হয়ে উঠেছে পেঁয়াজের বাজার। দুই দিনের ব্যবধানে রাজধানীর বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি দাম বেড়েছে আদা, রসুন ও আলুর। করোনা ভাইরাস আতঙ্ককে পুঁজি করে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

শুক্রবার (২০ মার্চ) রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে পেঁয়াজ, আলু ও রসুন কিনে মজুদ করছেন। ফলে এসব পণ্যের চাহিদা বেড়ে গেছে। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন।

রামপুরা বাজারে দেখা যায়, দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৫-৮০ টাকা। একই দামে পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে খিলগাঁও ও মালিবাগের বিভিন্ন খুচরা বাজারে। যা গত বুধবারও ৪০-৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়।

এসব বাজারে দেশি রসুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০-১৩০ টাকায়, যা দুইদিন আগে ছিল ৭০-৮০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৮০-১৯০ টাকা, যা বুধবার ছিল ১৪০-১৫০ টাকা। ১০০-১২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া আদার দাম বেড়ে হয়েছে ১৭০-১৮০ টাকা। আর ১৮-২০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫-২৮ টাকা।

এসব পণ্যের দাম বাড়ার বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী জুয়েল বলেন, করোনাভাইরাস আতঙ্কে গত বুধবার থেকে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলুর চাহিদা বেড়ে গেছে। চাহিদা বাড়ায় আড়ৎ থেকে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। আড়তে দাম বাড়ার কারণে আমাদের বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। মানুষ যদি কম পরিমাণে এসব পণ্য ক্রয় করে তাহলে আমাদের ধারণা কিছুদিনের মধ্যেই আবার দাম কমে যাবে।

কারওয়ান বাজার থেকে বাজার করা আসিফ বলেন, আমরা হুজুগে বাঙালি। কখন কী করি তার কোনো ঠিক নেই। আতঙ্কে এখন সবাই পেঁয়াজ, রসুন, আদা, আলু মজুদ করতে শুরু করেছে। আর এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীরা এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় যাদের বাজার তদারকির দায়িত্বে থাকার কথা তাদের কেউ দাম নিয়ন্ত্রণের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

মালিবাগ বাজার থেকে বাজার করা আসলাম বলেন, এখন পেঁয়াজের ভরা মৌসুম। সেই হিসেবে দাম কমার কথা। কিন্তু বাস্তব চিত্র ভিন্ন। করোনাভাইরাস আতঙ্কে অনেকেই বেশি করে পেঁয়াজ কিনে রাখায় এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দায়িত্বশীলরা দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে বাজারে সব পণ্যের দাম অস্থির হয়ে উঠবে। ইতিমধ্যে অসাধু ব্যবসায়ীরা অনেক পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

পেঁয়াজ, আদা, রসুন, আলুর দামে অস্থিরতা দেখা দিলো কাঁচা সবজির দাম এখনো অনেকটাই স্বাভাবিক রয়েছে। সবজির দাম বাড়ার তেমন তথ্য পাওয়া যায়নি বরং কিছু কিছু সবজির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কমেছে।

গত সপ্তাহে ১২০-১৩০ কেজি বিক্রি হওয়া করলার দাম কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। মাঝারি আকারের লাউ আগের মত বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা পিস। বরবটির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা।

এছাড়া শসা ২০-৩০ টাকা, পেঁপে ৩০-৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২০-৪০ টাকা, শিম ৪০-৫০ টাকা, ফুলকপি-বাঁধাকপি পিস ৩০-৩৫ টাকা, গাজর ২০-৩০ টাকা, শালগম ২৫-৩০ টাকা, মুলা ১৫-২০ টাকা, বেগুন ৩০৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আর কাঁচা মরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) আগের মতোই ১৫-২৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে।

সবজির দামের বিষয়ে রামপুরার ব্যবসায়ী মিলন বলেন, কাঁচা সবজি কিনে মজুদ করে রাখা যায় না এ কারণে যার যতটুকু প্রয়োজন সে ততটুকু কিনছে। তাই সবজির দাম বাড়েনি। পেঁয়াজ, আদা, রসুনের মত সবজি মজুদ করা গেলে ঠিকই দাম বাড়তো।

বেশিরভাগ সবজির মতো মাছ ও মাংসের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে। বিভিন্ন মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০-৫০০ টাকা। নলা (ছোট রুই) মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৮০ টাকা কেজি। তেলাপিয়া ১৩০-১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৪০-১৮০ টাকা কেজি, শিং ৩০০-৪৫০ টাকা, শোল মাছ ৪০০-৭৫০ টাকা, পাবদা ৪৫০-৬০০ টাকা, বোয়াল ৫০০-৮০০ টাকা, টেংরা ৪৫০-৬০০ টাকা, কেজি বিক্রি হচ্ছে।

বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩০-১৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১২৫-১৩০ টাকা কেজি। তবে পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি আগের মত বিক্রি হচ্ছে ২৩০-২৪০ টাকা। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা কেজি। গরুর মাংস ৫৫০-৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস ৭০০-৮৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এমএএস/এএইচ/এমএস