রোজার আগেই ২ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি হবে
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসন্ন রমজানের আগেই চারটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুই লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আসন্ন রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি, মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে ব্যবসায়ী এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, সিটি গ্রুপ আমদানি করবে ৫০ হাজার টন, মেঘনা গ্রুপ ৫০ হাজার, এস আলম গ্রুপ ৫০ হাজার এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান টিসিবির মাধ্যমে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। এছাড়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও আমদানি করবে। যদি কোনো সমস্যা হয় তাদের সব ধরনের সহযোগিতা করবে সরকার।
সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষকে শান্তি ও স্বস্তিতে রাখতে হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে জোরাজুরি করে, আদৌ কোনো লাভ হবে না। লাভ করুক, তবে সেটা হতে হবে সহনীয় মাত্রায়। বাজারে গুজব রটিয়ে যাতে আতঙ্ক না ছড়ায়, সে বিষয়ে সজাগ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত হয়, চাহিদা যাই হোক, ২ লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করতেই হবে। তাই নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে আসন্ন রমজানের আগেই চারটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুই লাখ টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সভায় উপস্থিত বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সরকারিভাবে টিসিবির মাধ্যমে ৫০ হাজন মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানি করা হবে। বাকিগুলো বেসরকারিভাবে ওইসব প্রতিষ্ঠান আমদানি করবে। কিন্তু তারা সেগুলো অল্প লাভে আড়তদারদের কাছে বিক্রি করবে।
তিনি আরও বলেন, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পণ্যমূল্য নির্ধারণ করে দেয়ারও পরিকল্পনা রয়েছে। ভোক্তাদের স্বার্থ যাতে ক্ষতি গ্রতিগ্রস্ত না হয়, তাই অন্য মাসের মতো রমজান মাসকে বিবেচনায় নেয়া যাবে না। গেল সঙ্কটে আমদানিকারক সিটি গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, এস আলম গ্রুপ সহায়তা করেছে। ভবিষ্যতে ও রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় ও যৌক্তিক রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি রমজান উপলক্ষে আহ্বান জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
সভায় শ্যামবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী হাজী মো. মাজেদ বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে ভবিষ্যতে আবারও সর্তক হওয়ার প্রয়োজন আছে। গত কয়েক সপ্তাহে পেঁয়াজের ঘাটতির জন্য ৩৫ থেকে ৪০ টাকা দাম বেড়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই পেঁয়াজ নিয়ে বেশি সমস্যা তৈরি হয়। ভারতেও পেঁয়াজের দাম তুলনামুলক অনেক বেশি তাই সহসায় তারা পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সেটা তুলবে না।
ব্যবসায়ী গোলাম মাওলা বলেন, চিনি, ভোজ্য তেলে ভ্যাট-ট্যাক্স কমিয়ে আন্তর্জাতিক বাজারের সাথে সামঞ্জস্য পূর্ণ করতে হবে। এছাড়া ভারত ব্যতিত পেঁয়াজ আমদানির সময় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ করতে হবে। আদা, রসুন, ডাল, চিনির কোনো ঘাটতি নেই। তবে ডলারের দাম বেড়ে যাবে, ভোক্তাদেরও কম দামে পণ্য দিতে হবে, আবার ভ্যাট -ট্যাক্সও বেশি দিতে হবে। এই ত্রিমুখী নীতি থেকে সরকারকে বেরিয়ে আসতে হবে। তা না হলে আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা বাঁচব না। আমরা শতভাগ নির্ভরশীল সিটি, মেঘনা, এস আলম গ্রুপের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের ওপর।
এমইউএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ