প্রণোদনার সুযোগ রেখে চামড়া নীতিমালা অনুমোদন
চামড়া সরবরাহকারী ও রফতানিকারকদের প্রণোদনার সুযোগ রেখে ‘চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা-২০১৯’ অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মন্ত্রিসভা বৈঠকে নীতিমালাটি অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে অনুমোদনের কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘নীতিমালা অনুযায়ী চামড়া শিল্পের উন্নয়নের জন্য প্রাথমিকভাবে গবেষণা, প্রশিক্ষণ, যন্ত্রপাতি, পরিবেশ রক্ষা, অধিকতর পরিচ্ছন্ন উৎপাদন এবং অবকাঠামো বিষয়ক প্রকল্প গ্রহণ করা সমীচীন। রফতানি বৃদ্ধিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রক্রিয়া উন্নত করতে হবে।’
সুনির্দিষ্ট কোনো প্রস্তাব আছে কিনা- জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘সরবরাহকারী ও রফতানিকারকদের জন্য কিছু প্রণোদনার বিষয় আছে। জেনারেলি প্রণোদনার ১৭টি প্রস্তাব দেয়া আছে। যেমন- সবুজ প্রযুক্তির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ আকর্ষণ করা এবং সেগুলো ফলপ্রসূ হলে ব্যবহার করা এবং খাতভিত্তিক কর্মসূচির মাধ্যমে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।’
নীতিমালা তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়া যাবে। পরিবেশ সুরক্ষার জন্য একটি পুঁজিবাজার তৈরি করা এবং দেশি-বিদেশি মূলধন সংগ্রহের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পরিবেশগত কমপ্লায়েন্সকে উৎসাহের জন্য কমপ্লায়েন্স কার্যক্রম গ্রহণকারী চামড়া শিল্প ট্যানারিগুলোকে অগ্রাধিকার ভিত্তিক প্রণোদণামূলক অর্থ প্রদান করা। উৎপাদনের সঙ্গে জড়িত প্রতিষ্ঠান যারা আরও পরিচ্ছন্ন উৎপাদনে আগ্রহী তাদের বিনিয়োগ প্রকল্পসমূহকে আর্থিক প্রণোদনা দেয়া।’
নীতিমালায় ছোট ব্যবসায়ীর জন্য আলাদা করে কিছু বলা নেই জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ‘উন্নত ও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যখাতকে প্রতিযোগিতায় সক্ষমকরণ; আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ও প্রতিযোগিতা সক্ষম পণ্য উৎপাদনে ব্যবসাবান্ধব ও টেকসই পরিবেশ নিশ্চিতকরণ; দক্ষ ও কার্যকর শিল্পায়নের জন্য উন্নত অবকাঠামো নিশ্চিতকরণ; নতুন নতুন উদ্ভাবন ও ব্যবসায়িক উদ্যোগ ও উদ্যম অনুশীলন করার বিষয়ে উৎসাহ প্রদান ও প্রতিপালনসহ নীতিমালায় ৯টি উদ্দেশ্য বলে দেয়া হয়েছে নীতিমালায়।’
‘চামড়া শিল্পখাতের টেকসই ও পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা পরিপালন, পরিচ্ছন্ন উৎপাদন নিশ্চিতকরণ, ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ তৈরির জন্য দুই ধরনের কমিটির কথা বলা হয়েছে,’ যোগ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
নীতিমালা অনুযায়ী চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা সমন্বয়ক পরিষদে শিল্পমন্ত্রীর নেতৃত্বে ৪১ সদস্যের কমিটি এবং চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য উন্নয়ন নীতিমালা বাস্তবায়ন পরিষদে ২০ সদস্যের কমিটির প্রধান শিল্প সচিব। দুই জায়গাতেই সরকারি ও বেসরকারি খাতের লোক আছেন বলে বলে জানিয়েছেন শফিউল আলম।
তিনি বলেন, ‘নীতিমালার মূল ফোকাস হলো, চামড়া শিল্প দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত। আমাদের টার্গেট ২০২৪ সাল নাগাদ এ খাত থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে, এটা যেন আমরা অর্জন করতে পারি। মোটামুটিভাবে বিনিয়োগবান্ধব একটা প্রস্তাবনা রাখা হয়েছে।’
আরএমএম/এনডিএস/জেআইএম