ভিডিও EN
  1. Home/
  2. অর্থনীতি

প্রথমদিনেই কপারটেকের দাম বাড়লো সাড়ে ৩শ’ শতাংশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৭:০৩ পিএম, ০৫ আগস্ট ২০১৯

পুঁজিবাজারের বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত কোম্পানি কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দাম লেনদেনের প্রথমদিনেই প্রায় সাড়ে ৩শ’ শতাংশ দাম বেড়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন চিত্র পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

পুঁজিবাজার থেকে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা তোলার পর বহু নাটকের মাধ্যমে ডিএসই কপারটেককে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে। ডিএসইর অনুমোদনের ফলে সোমবার (৫ আগস্ট) থেকে শেয়ারবাজারে কোম্পানিটির লেনদেন শুরু হয়। লেনদেনের প্রথমদিন ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের দাম লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ৪৪ টাকা ৮০ পয়সা। এ হিসাবে দাম বেড়েছে ৩৪ টাকা ৮০ পয়সা বা ৩৪৮ শতাংশ।

প্রথম দিন কপারটেকের লেনদেন শুরু হয় ৩০ টাকায়। সারাদিনে আর এর নিচে নামেনি কোম্পানিটির শেয়ার দাম। ৩০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ টাকা ৫০ পয়সা পর্যন্ত লেনদেন হয়েছে। প্রথম দিন কোম্পানিটির ৭৬ লাখ ২৩ হাজার ৭০৭টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এসব শেয়ার হাতবদল হয়েছে ১৩ হাজার ৭৮৮ বার। এর মাধ্যমে কোম্পানিটির ৩১ কোটি ৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।

শেয়ার দামে বড় ধরনের উত্থান হওয়ার পাশাপাশি কোম্পানিটির মোট অঙ্কের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ফলে ডিএসইতে এ প্রতিষ্ঠানটি লেনদেনের শীর্ষ স্থানটিও দখল করেছে। লেনদেনের প্রথমদিন এমন চমক দেখালেও ডিএসইতে কোম্পানিটি তালিকাভুক্ত নিয়ে বহু ‘নাটক মঞ্চস্থ’ হয়েছে। তবে সব নাটকের অবসান ঘটিয়ে গত ৩০ জুলাই ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ কোম্পানিটিকে তালিকাভুক্তির অনুমোদন দিয়েছে।

পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসির) অনুমোদন নিয়ে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে শেয়ারবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। আইপিওতে শেয়ার ছাড়ার পর কোম্পানিটি নিয়ে বিতর্কের শুরু হয়। কপারটেক ইন্স্যুতে যা ঘটেছে দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে এর আগে কোনো কোম্পানির তালিকাভুক্ত নিয়ে এত বিতর্ক বা ঘটনা ঘটেনি।

আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগে ডিএসই থেকে কোম্পানিটির তালিকাভুক্ত আটকে দেয়া হয়। অনিয়মের দায়ে লাইসেন্স হারায় কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তার।

মূলত ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ থেকে কোম্পানিটির তালিকাভুক্ত আটকে দেয়ার কারণেই ঘটে একের পর এক ঘটনা। অথচ সেই ডিএসইর পর্ষদ হঠাৎ করেই গত মাসে ইউটার্ন নেয়। আইন লঙ্ঘন করে গত ২২ জুলাই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্তি অনুমোদন দেয় ডিএসইর পর্ষদ।

পর্ষদে সিদ্ধান্ত নেয়ার পরের দিন ২৩ জুলাই বিএসইসিকে চিঠি দেয় ডিএসই। চিঠিতে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্ত করার জন্য ডিএসই লিস্টিং রুলস, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতি (ওয়েভার) চাওয়া হয়।

ডিএসই লিস্টিং রুলস, ৫ এর ৩ ধারা অনুযায়ী, কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করলে ওই কোম্পানির আইপিও সাবস্ক্রিপশন (আইপিও আবেদন গ্রহণ) শেষ হওয়ার ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তালিকাভুক্ত হতে হবে।

ডিএসই থেকে চিঠি পাঠানোর মাত্র একদিনের মধ্যেই সাড়া দেয় বিএসইসি। ২৪ জুলাই বিএসইসি থেকে চিঠি দিয়ে লিস্টিং রুলস, ৫ এর ৩ ধারা থেকে অব্যাহতি না দিয়ে ৫ এর ৪ ধারা অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ডিএসইকে নির্দেশ দেয়া হয়। এ ধারাতে বলা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভুক্তি নিয়ে যেকোনো রিকোয়ারমেন্ট বা প্রভিশনিং শিথিল করতে পারবে।

এ নির্দেশ দেয়ার পাশাপাশি ১০ কার্যদিবসের মধ্যে কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজকে তালিকাভুক্ত করার বিষয়ে গৃহীত পদক্ষেপ সম্পর্কে জানানোর জন্য ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেয় বিএসইসি। বিএসইসির বেধে দেয়ার ১০ কার্যদিবস পার হওয়ার আগেই কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ লেনদেনের সময় জানিয়ে দেয় ডিএসই। অথচ আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের কারণে ডিএসই থেকেই কোম্পানিটির তালিকাভুক্তি আটকে দিয়ে ফিন্যান্সিয়াল রিপোটিং কাউন্সিলের (এফআরসি) কাছে অভিযোগ করা হয়।

অভিযোগ পেয়ে তা তদন্তের জন্য এফআরসি থেকে দ্য ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস অব বাংলাদেশকে (আইসিএবি) দায়িত্ব দেয়া হয়। আইসিএবির তদন্তে অসহযোগিতা করায় কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজের নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান আহমেদ অ্যান্ড আক্তারকে লাইসেন্স হারাতে হয়েছে।

এমএএস/আরএস/জেআইএম

আরও পড়ুন