নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা ৩১ জুলাই
বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়ানো, কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধির অর্জন ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাই নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বংলাদেশ ব্যাংক এ তথ্য জানিয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে আগামী বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য মুদ্রানীতি (মনিটরি পলিসি স্টেটমেন্ট) ঘোষণা করবেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির।
জানা গেছে, বর্তমানে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ তলানিতে রয়েছে। এখন বিনিয়োগ পরিস্থিতি উন্নতি করতে না পারলে চলতি অর্থবছরে সরকার লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জিডিপির প্রবৃদ্ধি অর্জন চ্যালেঞ্জিং হবে। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে ঋণ প্রবাহ তথা বিনিয়োগের গতি ফেরানো যায়, সে বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাবে নতুন মুদ্রানীতিতে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ঋণ প্রবৃদ্ধি ধারাবাহিক কমে বিগত ৬ বছরের সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। গত জুনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমেছে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশে। এটি চলতি মুদ্রানীতির ঘোষিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ৫ শতাংশ কম। এমন বাস্তবতায় চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (জুলাই-ডিসেম্বর) জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বেসরকারি খাতে ঋণের চাহিদা না থাকায় নতুন মুদ্রানীতি আরো সংকোচনমুখী করা হচ্ছে বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন>> আসছে মুদ্রানীতি : বেসরকারি খাতে ঋণ বাড়ানোই মূল চ্যালেঞ্জ
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও কাঙ্ক্ষিত প্রবৃদ্ধি অর্জনের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি বছর দু’বার মুদ্রানীতি প্রণয়ন ও প্রকাশ করে। ছয় মাস অন্তর এই মুদ্রানীতি একটি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই মাসে এবং অন্যটি জানুয়ারি মাসে প্রণয়ন হয়। দেশের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় মুদ্রানীতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মাধ্যমে পরবর্তী ছয় মাসে অভ্যন্তরীণ ঋণ, মুদ্রার সরবরাহ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ, বৈদেশিক সম্পদ কতটুকু বাড়বে বা কমবে, তার একটি পরিকল্পনা তুলে ধরা হয়।
চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ দশমিক ২০ শতাংশ। আর মূল্যস্ফীতির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ।
আসন্ন মুদ্রানীতি প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বেসরকারি খাতের ওপর নির্ভর করে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে বেসরকারি ঋণ কমে যাওয়া অর্থনীতির জন্য শুভকর নয়। কেননা এ রকম প্রবণতা থাকলে কর্মসংস্থান কমবে। অর্থনীতির অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হবে।
তিনি বলেন, এখন চ্যালেঞ্জ নিয়ে বেসরকারি খাতের ঋণ বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে সরকার যেন ঋণ বেশি না নেয়, সেই বিষয়টি সমন্বয় করতে হবে। কারণ সরকার বেশি খরচ করলে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যাবে। তাই এসডিজি অর্জনে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে হবে। এজন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যুগোপযোগী সিন্ধন্ত নিতে হবে বলে জানান এ অর্থনীতি বিশ্লেষক।
এসআই/এমএসএইচ